ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২২ মে ২০২৪, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১

বাফুফের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আমের খান?

প্রকাশিত: ২০:৪৭, ৪ সেপ্টেম্বর ২০২০

বাফুফের নির্বাচনে অংশ নিচ্ছেন আমের খান?

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ ২০০৭ সালে বিমানবালা রুনা আক্তার কুমকুমকে বিয়ে করেন আমের। ২০২০ সালে আমের-কুমকুম দম্পত্তির প্রথম সন্তান হয়। কিন্তু এবারের ঈদুল আযহার দিনে তার মাত্র তিন মাস বয়সী কন্যা সন্তান ইয়ালিনা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে মারা যায়! সেই সন্তানের মৃত্যুশোক ভুলতে ফুটবলকেই আরও বেশি আঁকড়ে ধরতে চান আমের, অংশ নিতে চান এবারের বাফুফের নির্বাচনে। এ প্রসঙ্গে জনকণ্ঠকে আমের বলেন, ‘আমি এবারের বাফুফেরে নির্বাচনে সদস্যপদে নির্বাচন করতে চাই। যদি কোন প্যানেল আমাকে তাদের হয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে প্রস্তাব দেয়, তাহলে নিশ্চয়ই সেটা বিবেচনা করবো। তবে আমি কিন্ত কোন টাকা-পয়সা খরচ করতে পারবো না। শর্ত এটাই।’ দেখতে দারুণ হ্যান্ডসাম লাগে তাকে। সিনেমার নায়কের মতো। নামটাও নায়কোচিত, বলিউর হিরো আমির খানের মতো! তবে তিনি নায়ক নন, সাবেক ফুটবলার। আমের খান ঢাকাই ফুটবলের একসময়কার ‘ত্রিশক্তি’র এক শক্তি ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবে খেলেছেন একযুগ (১৯৮৯-২০০১ পর্যন্ত)। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) আসন্ন নির্বাচন নিয়ে তুমুল আলোচনা হচ্ছে চারদিকে। ক্রীড়ামোদীদের মাঝে সঞ্চার হয়েছে কৌতুহলের। একজন সাবেক ফুটবলার এবং ব্রাদার্স ইউনিয়ন ক্লাবের ম্যানেজার হিসেবে এই নির্বাচনকে কোন্ চোখে দেখছেন আমের? নতুন আসা কমিটির কাছে তা প্রত্যশা কতটুকু? জনকণ্ঠকে আমের বলেন, ‘অনেক বছর ধরেই বাফুফের কাছে আমাদের প্রত্যাশা তো অনেককিছুই। সেগুলোর কিছু পূরণ হয়েছে। কিছু হয়নি। বিশেষ করে তৃণমূল ফুটবল নিয়ে আশানুরূপ কাজ হয়নি। তবে আমি আশাবদী লোক। চাই দেশের ফুটবল এগিয়ে যাক।’ ৪৮ বছর বয়সী সুদর্শন আমের (দেখে মনে হয় ২৮!) আরও বলেন, ‘আমরা যারা অনেক বছর ধরে ফুটবলের সঙ্গে সম্পৃক্ত আছি, তারাও কিছু করতে চাই ফুটবলের উন্নয়নের জন্য। কিন্তু কিছু কিছু অযাচিত ব্যক্তির কর্মকাণ্ডের কারণে আমরা কিছু করতে পারি না। ওই অযাচিত লোকগুলো কর্ম নয়, চেয়ারকে ভালোবাসে! তাদের কারণেই শেখ মোঃ আসলাম ভাইয়ের মতো সাবেক তারকা ফুটবলার বাফুফের কমিটিতে থেকেও কিছু করতে পারেননি।’ আরেকটি প্রশ্নের জবাবে খেলোয়াড়ী জীবনে মিডফিল্ডার পজিশনে খেলার অধিকারী আমের বলেন, ‘গত ১২ বছরে দেশের ফুটবলের উন্নয়ন হয়নি বলে সবাই বাফুফে সভাপতি কাজী মোঃ সালাউদ্দিন ভাইকে একতরফা দোষ দেন, তাকে দায়ী করে তীব্র সমালোচনা করেন। এটা ঠিক নয়। কারণ সালাউদ্দিন ভাই তো একা কাজ করেন না। তার অন্য সহযোগীরা যারা তার আশেপাশে থাকে, তাদেরও কি ব্যর্থতা নেই? তাদেরই তো ব্যর্থতার আসল দায়ভার বহন করা উচিত।’ মাঝে অবশ্য ১৯৯২ সালে ইয়ংম্যান্স ফকিরেরপুলে খেলা আমের আরও যোগ করেন, ‘আমার মতো অনেকেই আছেন, যারা নিজেদের যোগ্য মনে করে বাফুফেতে কাজ করতে চান। কিন্তু প্রতিবারই নির্বাচনের সময় সেই ইচ্ছা কোন কারণে আর বাস্তবে পূর্ণতা পায় না।’ সেই কোন কারণটা কি, সেটাও খোলাসা করেন আমির, ‘দেখুন, আমার অঢেল টাকা নেই। নির্বাচনে টাকা দিয়ে ভোট কেনার সামর্থ্য এবং ইচ্ছা কোনটাই নেই। এজন্যই আমারও নির্বাচনে দাঁড়ানো হয় না। কাউন্সিলরদেরও অনেক কাজ থাকে। কিন্তু বেশিরভাগই সেই কাজটা করেন না। তারা অপেক্ষায় থাকেন নির্বাচনের জন্য। দুই পক্ষ থেকেই টাকা খেয়ে এক পক্ষকে ভোট দেন। তারা কি টাকা চান, নাকি যোগ্য পদে যোগ্য লোক চান?’ দেশের রাজনীতিতে যেমন প্রধান দুটি দল থাকে। তেমনি বাফুফের নির্বাচনে দুটি পক্ষ থাকে। আমের মনে করেন বাফুফেতে ‘এ্যান্টি গভর্মেন্ট’ কাজ হয় বলে অনেকেই বলে থাকেন! তিনি আরও বলেন, ‘কমিটির কাজ করতে গেলে ভুল হবেই। সেই ভুলের কথা যদি অন্যরা কমিটির কাছে এসে সামনাসামনি বলে, তাহলে ভাল হয়। এই অভ্যাসটা তৈরি করতে হবে। কিন্তু এখানে সমালোচনা করা হয় আড়ালে। এটা ঠিক নয়।’ ন্যাশনাল টিমস কমিটিতে অন্য সদস্যের সঙ্গে ক্রীড়া সাংবদিকদের অন্তর্ভুক্ত করা উচিত বলে অভিমত ব্যক্ত করেন ২০১৪ ও ২০১৯ সালে জাতীয় অ-১৯ ফুটবল দলের ম্যানেজার হিসেবে কাজ করা আমের, ‘ক্রীড়া সাংবাদিকদের ন্যাশনাল টিম কমিটিতে রাখা হলে ভাল হবে। কারণ তারা খেলাটা অনেক ভাল বোঝেন।’ সম্প্রতি বিভিন্ন স্তরের লীগ শুরু করা নিয়ে ক্লাবগুলোর সঙ্গে একাধিক বৈঠক করেও বাফুফে বিপিএল ফুটবল শুরুর তারিখ ঘোষণা করতে পারেনি বলে এতে দারুণ বিরক্ত হয়েছেন আমের, ‘ক্লাবের সঙ্গে বসে যা হচ্ছে, এগুলো তো নাটক হচ্ছে! এসবের তো কোন দরকার নেই।’
×