ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৬ জুলাই ২০২৫, ২২ আষাঢ় ১৪৩২

জোড়া ফিফটির ম্যাচে এমন ব্যাটিং!

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:০৭, ৬ জুলাই ২০২৫

জোড়া ফিফটির ম্যাচে এমন ব্যাটিং!

হাফ সেঞ্চুরির পর রান আউটের হতাশায় পুড়লেন হাওহীদ হৃদয়

প্রশ্ন উঠতে পারে হতাশার আবার ধরন কী! আগের ম্যাচে এক পর্যায়ে ৫ রানের ব্যবধানে ৭ উইকেট খুইয়ে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়া বাংলাদেশ কি একটু শিক্ষা নিল? কলম্বোয় ২৪৫ রানে অলআউট মেহেদি হাসান মিরাজের দল দ্বিতীয় ওয়ানডেতে গুটিয়ে গেল ২৪৮ রানে। অথচ ২ উইকেটে তুলেছিল ১১০ রান। ইনিংসের ২৮তম ওভারে ৪ উইকেটে ১৫৮। দুই অবস্থাতেই মনে হয়েছিল আড়াইশ’ পেরুনো স্কোর গড়বে বাংলাদেশ। বেশ উত্থান-পতনের ইনিংস শেষে আড়াইশ’ও হলো না।

শনিবার শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজে টিকে থাকার দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৪৫.৫ ওভারে মিরাজরা অলআউট হয়ে গেছে ২৪৮ রানে। বাংলাদেশের স্কোরে বড় অবদান ওপেনার পারভেজ হোসেন ইমনের ৬৭ এবং মিডল অর্ডারে তাওহিদ হৃদয়ের ৫১ রানের ইনিংসের। ফিফটি না করলেও হার না-মানা ৩৩ রানের ইনিংস খেলে বাংলাদেশের ইনিংসকে আড়াইশ’র কাছাকাছি নিয়ে গেছেন তানজিম হাসান সাকিব। 
কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা অবশ্য ভালো ছিল না। দলীয় ১০ রানে ব্যক্তিগত ৭ রান করে বিদায় নেন আগের ম্যাচের হাফ সেঞ্চুরিয়ান তানজিদ হাসান তামিম। এরপর অবশ্য পারভেজ হোসেন ইমন ও নাজমুল হোসেন শান্তর ৫৫ বলে ৬৩ রানের জুটি আশা জাগায়। তাঁরা যখন উইকেট ব্যাট করছিলেন, তখন মনে হয়েছিল বড় একটা ইনিংসের ভিতই পেতে যাচ্ছে বাংলাদেশ।

কিন্তু হতাশ করলেন শান্ত, অহেতুক বাজে শট খেলতে গিয়ে উইকেটে দিয়ে ফেরেন সাবেক অধিনায়ক। বোলার চারিত আসালাঙ্কার শর্ট বলে ব্যাকফুটে বড় শট খেলতে গিয়েছিলেন। ঠিকঠাকমতো হয়নি। মাহিশ তিকশানাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ১৯ বলে ব্যক্তিগত ১৪ রানে। এরপর হৃদয়ের সঙ্গে ইমনের ৩৭ রানের জুটি। এ জুটি ভাঙে ইমনের বিদায়ে। শ্রীলঙ্কার ভীতি জাগানিয়া স্পিনার ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গার গুগলি ঠিকমতো বুঝতে পারেননি ইমন। বোল্ড হয়ে যান তিনি।

আউট হওয়ার আগে অবশ্য ৬৯ বলে ৬৭ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত যা দলের পক্ষে সর্বোচ্চ হয়ে থাকে। তাঁর ইনিংসটি ৬টি চার ও ৩টি ছয়ে সাজানো। একের পর এক উইকেট পতনের মিছিলে বাংলাদেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ জুটিটি আসে ষষ্ঠ উইকেটে। জাকের আলী ও তাওহিদ হৃদয় যোগ করেন ৪৫ রান। বড় ইনিংসের সম্ভাবনা জানিয়ে জাকের ২৪ রানে আউট হয়ে গেলেও তাওহিদ হৃদয় করেন ৫১ রান। এই ইনিংসের সুবাদেই হৃদয় ওয়ানডেতে এক হাজার রানের মাইলফলকে পা রেখেছেন।

বাংলাদেশের ২৫তম ব্যাটার হিসেবে ১০০০ রান করলেন তিনি। হাজার রান করতে ৩৩ ইনিংস খেলতে হয়েছে তাঁকে। তাঁর চেয়ে কম ইনিংসে হাজার রান করার কৃতিত্ব শুধু দুজনের শাহরিয়ার নাফিস (২৯) ও এনামুল হকের (২৯)। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের রান যে আড়াইশ’ ছুঁই ছুঁই তাতে অবদান আছে দুই টেলএন্ডার তানজিম সাকিব ও মোস্তাফিজুর রহমানের। মোস্তাফিজ ৭ বল খেলে একটি রানও করেননি।

কিন্তু তাঁকে নিয়েই শেষ উইকেট জুটিতে ২৪ বলে ৩০ রান যোগ করেন তানজিম সাকিব। মোস্তাফিজ রানের খাতা খুলতে না পারলেও ২১ বলে ২ চার ও সমান ২ ছক্কায়  ৩৩ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন তানজিম সাকিব। বল হাতে সবচেয়ে সফল আসিতা ফার্নান্দো; ৩৫ বলে নিয়েছেন ৪ উইকেট। ৩ উইকেট ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা। 
এই ম্যাচের আগে পর্যন্ত পরিসংখ্যানে ওয়ানডেতে নিজেদের সর্বশেষ সাত ম্যাচের সবই হেরেছে বাংলাদেশ।  গত বছর আফগানিস্তানের কাছে ২-১ ব্যবধানে হারা সিরিজে সর্বশেষ জয় পেয়েছিল টাইগাররা।

×