
নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলের বিরুদ্ধে ব্যাট করছেন বাংলাদেশ ‘এ’ দলের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান
‘আমরা এখানে শিখতে আসিনি’- আগেরদিনই বলেছিলেন অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান। খুবই সত্য। তারকায় ঠাসা একটা দল। জাতীয় জার্সিতে খেলেছেন, এখনো খেলছেন, দরজায় কড়া নাড়ছেন এমন একগাদা ক্রিকেটার নিয়ে সাজানো হয়েছে বাংলাদেশ ‘এ’ দল। তারুণ্য ও উদীয়মানদের নিয়ে গড়া নিউজিল্যান্ড ‘এ’ দলটাও খারাপ নয়। অন্তত কাগজে-কলমে। সেই তাদেরই উড়িয়ে দিয়ে মিশন শুরু করল বাংলাদেশ।
প্রথম ওয়ানডেতে ৭ উইকেটের দাপুটে জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-০ তে এগিয়ে গেল সোহানের দল। সোমবার সিলেটে ৩৪.৩ ওভারে ১৪৭ রানে গুটিয়ে যায় সফরকারী কিউইরা। জবাবে ২৭.২ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ (১৪৯/৩)। ৭ ওভারে ২ মেডেন, ২৭ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা পেসার খালেদ আহমেদ। এদিন মাঠে বসে মোসাদ্দেক-ইমনদের খেলা দেখেন জাতীয় দলের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করতে নেমেই বিপদে পড়ে নিউজিল্যান্ডে মাইরু ও ফক্সক্রফটই শুধু দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেন। নতুন বলে পেশার শরিফুল ইসলাম ও খালেদের সামনে অসহায় মনে হচ্ছিল কিউইদের। ৭ ওভারের মধ্যে ড্রেসিং রুমের পথ ধরেন চার কিউই ব্যাটসম্যান। তৃতীয় ওভারে শরিফুলের ভেতরে ঢোকা ডেলিভারিতে এলবিডব্লিউ হন ডেল ফিলিপস।
আট বল খেললেও সুবিধা করতে পারেননি নিউজিল্যান্ড জাতীয় দলের অলরাউন্ডার গ্লেন ফিলিপসের দুই বছরের ছোট এই ভাই। পরের ওভারে খালেদের জোড়া আঘাত। তিন বলের মধ্যে ড্রেসিং রুমে ফেরেন ম্যাট বয়েল ও মোহাম্মদ আব্বাস। গত মার্চে পাকিস্তানের বিপক্ষে ওয়ানডে অভিষেকে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড গড়া আব্বাস দুই বলের বেশি খেলতে পারেননি।
অফ স্টাম্প ঘেঁষা ডেলিভারিতে ক্যাচ দেন তিনি উইকেটের পেছনে। পরে চমৎকার ডেলিভারিতে নিক কেলির অফ স্টাম্প উপড়ে ফেলেন শরিফুল। সপ্তম ওভারে নিউজিল্যান্ডের রান তখন ৪ উইকেটে ১৩। এরপরও কিউইদের স্কোরটা ভদ্রস্থ হয়েছে মূলত আট নম্বরে নামা ব্যানক্রফটের ৭২ রানের দৃঢ়তাপূর্ণ ইনিংসে। খালেদ ও তানভীর নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট, এবাদত ২।
ছোট লক্ষ্যে প্রথম ওভারেই তিনটি চার মেরে নিজের অভিপ্রায় পরিষ্কার করে দেন পারভেজ হোসেন ইমন। ৬ চারে ১২ বলে করেন তিনি ২৪ রান। আরেক ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখ শুরুতে ছিলেন বেশ নড়বড়ে। পরে তিনটি চার মারলেও আউট হয়ে যান ২০ বলে ১৮ রান করে। পাওয়ার প্লেতে ৭০ রান করে বাংলাদেশ। সাবলীল ব্যাটিংয়ে এগোতে থাকেন এনামুল ও মাহিদুল ইসলাম।
বাঁহাতি জেডেন লেনক্সের বল ছক্কায় উড়িয়ে জুটির পঞ্চাশ পূর্ণ করেন মাহিদুল। তবে ভালো শুরুর পর ইনিংস বড় করতে পারেননি এনামুল। ফক্সক্রফটের বলে সুইপ করার চেষ্টায় ফাইন লেগে ধরা পড়েন অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান (৪৫ বলে ৩৮)। এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের সর্বোচ্চ তিন রান স্কোরার ছিলেন এই তিনজন। এনামুলের রান ছিল ৮৭৪, পারভেজের ৭৯৮, নাঈমের ৬১৮।
‘এ’ দলে এসে প্রথম সুযোগে বড় রান করতে পারলেন না কেউ। এরপর আর উইকেট পড়তে দেননি মাহিদুল ও সোহান। ৪১ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন দুজন। ১ চার ও ৩ ছক্কায় ৬১ বলে ৪২ রান করেন মাহিদুল। সোহানের ব্যাট থেকে আসে ১টি করে চার-ছক্কায় ২০ রান। একই মাঠে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে বুধবার।