ভারতেও ভালো করবে শান্তর দল, বিশ্বাস বিসিবি সভাপতির।
একটা সময় টেস্টের জন্য বাংলাদেশের একাদশ মানেই স্পিনারদের আধিক্যতা। স্কোয়াডে দুই-তিনজন পেসার থাকলেও একাদশে সুযোগ পাবেন কেবল একজন। প্রথাগত নিয়ম হয়ে ওঠা এমন কিছু দেখা গেছে বারংবার। কারণ, সেই সময় পেসারদের কাজই ছিল বল পুরনো করে স্পিনারদের হাতে তুলে দেয়া। মাশরাফি বিন মুর্তজা, খালেদ মাহমুদ সুজন, রবিউল ইসলাম, নাজমুল হোসেন, আবু জায়েদ রাহি, সৈয়দ খালেদ আহমেদরা এমনটা করে এসেছেন বছরের পর বছর।
সবশেষ কয়েক বছরে অবশ্য পেসারদের ভূমিকা বদলে গেছে অনেকটা। সাম্প্রতিক সময়ে জয় পাওয়া বেশিরভাগ ম্যাচেই বড় পরিসরে অবদান রাখছেন তাসকিন আহমেদ, শরিফুল ইসলাম, ইবাদত হোসেনরা। ২০২২ সালের জানুয়ারিতে নিউজিল্যান্ডের মাউন্ট মঙ্গানুইতে টেস্ট জেতা, সাউথ আফ্রিকায় গিয়ে ওয়ানডে সিরিজ জেতাও এসবের প্রমাণ। বাংলাদেশের পেস বিপ্লবের অংশ হিসেবে পাকিস্তানে আলো ছড়িয়েছেন নাহিদ রানা, হাসান মাহমুদরা।
পুরো সিরিজ জুড়ে বাবর আজম, শান মাসুদ, আব্দুল্লাহ শফিকদের মতো ব্যাটারদের ভড়কে দিয়েছেন বাংলাদেশের পেসাররা। রাওয়ালপিন্ডিতে দ্বিতীয় টেস্টের দ্বিতীয় ইনিংসে তো পাকিস্তানের সব উইকেটই তো নিয়েছেন হাসান, নাহিদরা। টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশের পেসারদের জন্য একেবারে অবিশ্বাস্য একদিন। দেশের পেস বোলিংয়ের এমন উত্থান দেখে খুশি ফারুক আহমেদও। বিসিবির সভাপতি জানান, ‘বাংলাদেশের এমন পেস বোলিং তিনি জীবনেও দেখেননি।’
আজ শনিবার গণমাধ্যমের সঙ্গে আলাপকালে ফারুক বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে রোমাঞ্চকর জিনিস হচ্ছে পেস বোলিং। আমি কিন্তু এরকম পেস বোলিং বাংলাদেশে কখনও দেখিনি, আমার লাইফটাইমে, সাম্প্রতিক সময়েও। আমার মনে হয় এই একটা বিভাগ স্পিনে আমরা জানি আমাদের স্ট্রেন্থ ভালো কিন্তু পেস বোলিং অবিশ্বাস্য ছিল। আপনি পেসারদের উচ্চতা দেখুন, প্রত্যেকেই ৬ ফুট ৩ ইঞ্চির মতো। দ্রুতগতির বোলারদের জন্য এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।’
পাকিস্তানকে তাদেরই মাটিতে হোয়াইটওয়াশ করার পর বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন সমর্থকরা। কদিন আগে বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম নিজেই জানিয়েছেন, নতুন এই বাংলাদেশকে সমীহ করবে ভারত। যদিও দীনেশ কার্তিক, সৌরভ গাঙ্গুলিরা ভারতের মাটিতে বাংলাদেশের সুযোগ দেখছেন না একদমই। ফারুকের কাছে এসব ছাপিয়ে বড় পরিসরে উন্নতির আশা। দুই-এক ম্যাচ জয়ের বদলে নিজেদের ক্রিকেটীয় মানকে আরও উপরে নিয়ে গিয়ে নিয়মিত জেতায় তাগিদ দিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।
এ প্রসঙ্গে ফারুক বলেন,‘আমার মনে হয় কী আপনারা, বাংলাদেশের মানুষ, আমরা সবাই খুব ভালো জানি আমাদের শক্তির জায়গায় কী। আমরা যে প্রতিনিয়ত উন্নতি করছি কিন্তু আমি সভাপতি এবং সাবেক ক্রিকেটার হিসেবে একটা কথা বলতে পারি, একটা-দুইটা জয়ের থেকে সবসময় বলে আসছি আমি আপনি যদি আপনার পারফরম্যান্সটা একটা নির্দিষ্ট মানে নিয়ে যেতে পারেন যেখান থেকে আপনি প্রতিনিয়ত জিতবেন।’
ভারত সফর নিয়ে সাবেক অধিনায়ক,‘একটা দল একটা শক্তির জায়গায় দাঁড়াবে যেমন করে আমাদের ওয়ানডেতে মানুষ মনে করে বাংলাদেশ একটা শক্তিশালী দল। যদিও গত বিশ্বকাপে (ওয়ানডে) আমরা আশানুরূপ খেলতে পারিনি। আমি মনে করি ভালো খেলাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। খেলায় তো হার-জিত আসবেই, এটা একটা পার্ট। আমরা সবাই জানি ভারতের শক্তির জায়গায় কী, আমাদের শক্তির জায়গা কী।’
তিনি আরও যোগ করেন,‘আমরা খুব ভালো করে জানি, আমাদের দলের শক্তিমত্তা কী, আমরা যে নিয়মিত উন্নতি করছি। বোর্ড প্রেসিডেন্ট ও সাবেক খেলোয়াড় হিসেবে একটা কথা বলতে পারি, দুই-একটা জয়ের চেয়ে যদি পারফরম্যান্সটা একটা মানে নিয়ে যেতে পারি, যেখান থেকে দলটা নিয়মিতভাবে জিতবে এবং একটা শক্তিতে দাঁড়াবে। যেমন ওয়ানডেতে এখন মানুষ মনে করে, বাংলাদেশ একটা শক্তিশালী দল। যদিও গত ওয়ানডে বিশ্বকাপে আমরা আশানুরূপ খেলতে পারিনি। আমি মনে করি, ভালো খেলাটা গুরুত্বপূর্ণ। খেলায় তো হার-জিত আসবেই। এটা খেলার একটা অংশ।’
মিরাজ/এম হাসান