ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২

জন্মের আগেই ঠিক হয়ে যায় কোন কোষ কী অঙ্গ বানাবে! জানুন রোমাঞ্চকর বৈজ্ঞানিক তথ্য

প্রকাশিত: ১২:০৪, ৪ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১২:০৪, ৪ জুলাই ২০২৫

জন্মের আগেই ঠিক হয়ে যায় কোন কোষ কী অঙ্গ বানাবে! জানুন রোমাঞ্চকর বৈজ্ঞানিক তথ্য

ছবি: সংগৃহীত

কীভাবে শরীরের প্রথম কোষগুলো জানে, কোন কোষ কী অঙ্গ তৈরি করবে? শত বছরের গবেষণার পরও এই প্রশ্নের উত্তর মিলছিল না। এবার অস্ট্রেলিয়ার বিজ্ঞানীরা ‘LoxCode’ নামে নতুন এক প্রযুক্তি আবিষ্কার করেছেন, যা মাউসের ভ্রূণে প্রতিটি কোষে আলাদা ডিএনএ বারকোড বসিয়ে সেটির বংশানুক্রম ট্র্যাক করে।

LoxCode কীভাবে কাজ করে:
এই প্রযুক্তিতে Cre recombinase নামের এক এনজাইম ব্যবহার করে ডিএনএ-র ছোট ছোট অংশ ঘুরিয়ে ৩০ বিলিয়নের বেশি ভিন্ন বারকোড তৈরি করা হয়। এরপর কোষ বিভাজনের সঙ্গে সঙ্গে সেই বারকোডও হুবহু কপি হয়, ফলে সহজেই জানা যায়, কোন কোষ থেকে কোন অঙ্গ তৈরি হচ্ছে।

গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্রূণের মাত্র ৫.৫ দিনে ইনজেকশন দেওয়ার পর এক সপ্তাহের মধ্যে ভ্রূণের প্রতিটি কোষের গন্তব্য জানা গেছে। কিছু কোষ পুরো শরীরজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে, আবার কিছু কোষ নির্দিষ্ট অঙ্গ—যেমন ত্বক, রক্ত, অঙ্গপ্রত্যঙ্গেই সীমিত থাকে।

গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার:
গবেষণায় দেখা গেছে, ভ্রূণের কোষগুলো আগেই নিজেদের ‘ভবিষ্যৎ’ ঠিক করে ফেলে, যা এতদিন ভাবা হতো না। এমনকি শরীরের বাম ও ডান পাশে থাকা অঙ্গের কোষের উৎসও অনেক সময় আলাদা হয়, যা কিছু জন্মগত রোগের কারণও ব্যাখ্যা করতে পারে।

ভবিষ্যৎ প্রয়োগ:
▶ মস্তিষ্কের বৃদ্ধির দিক থেকে স্ট্রোক পরবর্তী কোষ পুনরুদ্ধারে
▶ ক্যানসার চিকিৎসায় রেজিস্ট্যান্ট কোষ খুঁজতে
▶ ওষুধ পরীক্ষায় ক্ষতিকর কোষকে সুস্থ কোষে ফেরাতে
▶ অঙ্গ প্রতিস্থাপনের আগে সঠিক কোষ আছে কি না তা নিশ্চিত করতে

চিকিৎসায় সম্ভাবনা:
ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি দিয়ে চিকিৎসকরা ঠিক করতে পারবেন, কোন পর্যায়ে কোষ বিভ্রান্ত হয়ে ভুল পথে যাচ্ছে। এতে নির্ভুল চিকিৎসা বা জিন থেরাপির পথ খুলবে।

তবে এখনো এই গবেষণা শুধুমাত্র মাউসের ওপর সীমিত, তবে ধারণা করা হচ্ছে, মানুষের চিকিৎসা বিজ্ঞানের বড় বিপ্লব আসতে চলেছে।

আবির

×