
ছবিঃ সংগৃহীত
ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের নতুন সদস্য সংগ্রহ ও পুরাতন সদস্য নবায়ন ফরম বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার আবু আশফাক বলেছেন, আমাদের হাইয়ারের প্রয়োজন নেই। বিএনপি পরিবারের সন্তানদের খুঁজে খুঁজে বের করে আনা হবে। এত পরিমাণ সদস্য করা হবে, যাতে বাংলাদেশের মাটিতে ছাত্রলীগ বলে কোনো শব্দ যেন না থাকে।
শুক্রবার (৪ জুলাই) বেলা সাড়ে ১২টায় ঢাকার নবাবগঞ্জের সরকারি দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
খন্দকার আবু আশফাক বলেন, ছাত্রদল রাজপথের লড়াকু সৈনিক। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আদর্শের দল। তোমাদের আন্দোলনের ফসল হিসেবে আজ আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। মাগফিরাত কামনা করছি ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আত্মদানকারী সকল শহীদের প্রতি। আহতদের সুস্থতা কামনা করছি এবং মামলা প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করছি।
তিনি সমালোচনা করে বলেন, অনেকে দাবি করে থাকেন, তাদের একার নেতৃত্বেই দেশ নতুনভাবে রাহুমুক্ত হয়েছে, শেখ হাসিনা মুক্ত হয়েছেন। তারা কিন্তু বোকার স্বর্গে বাস করছেন। জুলাই-আগস্টের আন্দোলনে কিন্তু বিএনপি-ছাত্রদলের ৪২০ জন নেতাকর্মী মারা গেছেন। হাজার হাজার নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। সুতরাং বিএনপি-ছাত্রদলের আন্দোলনকে ছোট করে দেখার সুযোগ নেই। সর্বোপরি শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে পুরো জাতি এক হয়ে গিয়েছিল।
খন্দকার আবু আশফাক বলেন, বিগত ১৬টি বছর ৮ হাজার মাইল দূরে থেকে ছাত্র-জনতাসহ পুরো জাতিকে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, যার নেতৃত্বের ফলে শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন— আমি সেই নেতা, আমাদের আগামী দিনের রাষ্ট্রনায়ক তারেক রহমানকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি। আমি শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি গণতন্ত্রের মা, যিনি জীবনে কোনোদিন আপস করেননি, 'আপস' শব্দ তার জীবনে নেই— সেই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে।
তিনি বলেন, বিগত ওয়ান-ইলেভেনেও শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছিলেন। কিন্তু আমাদের দেশনেত্রী কখনোই দেশ ছাড়েননি। তিনি একটি কথাই বলেছেন, “এই দেশ আমার, এই মাটি আমার। আমাকে যদি মরতে হয়, দেশের মাটিতেই মরব। দেশ ছেড়ে আমি কোথাও যাব না।” দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশ ছাড়েননি বলেই ওয়ান-ইলেভেন সরকার নির্বাচন দিতে বাধ্য হয়েছিল। সেই ফাঁকে শেখ হাসিনা দেশে আসার সুযোগ পেয়েছিলেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্রের কবলে পড়ে শেখ হাসিনা ১৫/১৬ বছর আমাদের উপর নির্যাতন-নিপীড়ন চালিয়েছেন। অত্যাচারে সীমা যখন চরম পর্যায়ে চলে যায়, তখন শুধু আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টি ছাড়া পুরো জাতি এক হয়ে রাস্তায় নেমেছিল। পুরো জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করে তারেক রহমানের নেতৃত্বে যে আন্দোলন বেগবান হয়েছিল, তার ফলেই শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হন।
ফরম বিতরণ অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি খন্দকার আবু আশফাক উপস্থিত ছাত্রদলসহ নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, শেখ হাসিনার প্রেতাত্মারা এখনো আমাদের মাঝে অবস্থান করছে। তারা কারও কাঁধে ভর করে আবার রাজনীতি করার সুযোগ চাচ্ছে। তারা দেশটাকে আবার অশান্ত করার ষড়যন্ত্র করছে। মনে রাখতে হবে, “কারো উন্নতির স্বার্থে তাদের প্রশ্রয় দেওয়া হয়। একদিন সুযোগ বুঝে তারাই তোমাদের বুকে ছোবল মারবে।” সুতরাং আজকে যে ফরম বিতরণ হচ্ছে, এখানে আওয়ামী দোসরদের কাউকে এ সংগঠনে যুক্ত করা যাবে না। আমরা নতুন নেতৃত্ব বের করে নিয়ে আসব।
ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম নিরব এতে সভাপতিত্ব করেন।
আরও বক্তব্য রাখেন, ঢাকা জেলা দক্ষিণ ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি হাসিবুর রহমান হাসিব, সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান ঠান্ডু, নবাবগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি ইশতিয়াক আহমেদ চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সুমন খান, দোহার উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি সেলিম ওসমান, দোহার পৌরসভা ছাত্রদলের সভাপতি শফিক মোল্লা, জয়পাড়া কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি সৌমিক ভূঁইয়া, সরকারি দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজ শাখা ছাত্রদলের সভাপতি কাজী মেহেদী হাসান তপু।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন নবাবগঞ্জ উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. আবদুস সালাম, সাধারণ সম্পাদক খন্দকার আবুল কালাম, সহ-সভাপতি আবু শফিক খন্দকার মাসুদ, আবদুল ওয়াহেদ খান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এরশাদ আল মামুন, মহসিন হাসান লিটু, মহসিন আহমেদ তুষার, দোহার-নবাবগঞ্জ কলেজের সাবেক ভিপি মহসিন রহমান আকবর, দোহার উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক সেন্টু ভূঁইয়া, সাবেক ছাত্রদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম জুয়েল, রবিউল ইসলাম রবি, রেজাউল হক রুবেল, রায়হানুল ইসলাম রাহিন, দুর্জয় মাহমুদ সোহেল প্রমুখ।
ইমরান