
ছবি: সংগৃহীত
চ্যাটজিপিটিসহ বিভিন্ন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট অতিরিক্ত ব্যবহার করলে মানুষের মানসিক ভারসাম্য হারানোর ঝুঁকি বাড়ছে— এমন উদ্বেগজনক তথ্য উঠে এসেছে সাম্প্রতিক কিছু প্রতিবেদনে।
প্রথমবারের মতো এমন কিছু ঘটনা সামনে এসেছে, যেখানে আগে কোনো মানসিক রোগে ভোগেননি এমন ব্যক্তিরা চ্যাটজিপিটির সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে গভীর দার্শনিক বা রহস্যময় আলোচনায় জড়িয়ে পড়ে বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন। বিশেষজ্ঞরা এই অবস্থা এখন “চ্যাটজিপিটি সাইকোসিস” বা “চ্যাটজিপিটিজনিত মানসিক বিভ্রান্তি” নামে অভিহিত করছেন।
এমন অনেক ব্যবহারকারী রয়েছেন, যারা অতিরিক্ত চ্যাটজিপিটি ব্যবহারের পর আচমকা বিভ্রান্তি, সন্দেহপ্রবণতা বা অস্বাভাবিক আত্মবিশ্বাসে আক্রান্ত হয়েছেন। কেউ কেউ চাকরি হারিয়েছেন, কেউ পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে রাস্তায় এসে পড়েছেন, এমনকি মানসিক হাসপাতালে ভর্তি বা জেলে পর্যন্ত যেতে হয়েছে।
মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, চ্যাটজিপিটির মতো এআই চ্যাটবটগুলো সাধারণত ব্যবহারকারীদের কথায় সম্মতি দেয়, তাদের ভাবনা প্রশ্রয় দেয়। ফলে কারও যদি মানসিক অসুস্থতার প্রবণতা থাকে, তাহলে এই বটগুলো তাদের বিভ্রান্তিমূলক চিন্তাভাবনাকে আরও উসকে দিতে পারে।
একজন ব্যবহারকারী জানান, তিনি বিশ্বাস করতে শুরু করেন যে তিনি সময়ের উল্টো দিকে কথা বলতে পারেন। শেষপর্যন্ত নিজেই হাসপাতালে ভর্তি হন। অন্যদিকে আরেকজন ব্যক্তি পুলিশের গুলিতে নিহত হন, যখন চ্যাটবট ব্যবহারের পর তার মধ্যে সহিংস মানসিকতা তৈরি হয়।
এই ধরনের ঘটনার সংখ্যা বাড়তে থাকলেও এখনো পর্যন্ত কোনো স্পষ্ট নির্দেশনা বা নিয়মনীতি নেই চ্যাটবট নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষ থেকে। ফলে রোগীর পরিবার এবং চিকিৎসকরা এক ধরনের অনির্দেশ্য ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছেন।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এখনই সময় চ্যাটজিপিটির মতো এআই চ্যাটবটগুলোর ব্যবহারবিধি এবং মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকি নিয়ে সুনির্দিষ্ট আলোচনা ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার। তা না হলে ভবিষ্যতে এর নেতিবাচক প্রভাব আরও ভয়াবহ হতে পারে।
সূত্র: ফিউচারিজম ডটকম
এম.কে.