
বিশ্বজুড়ে মানুষকে একত্রিত করার পথ খুলে দিয়েছিল একটি ছোট্ট অ্যাপ। একসময় ছিল ভিডিও কলিং দুনিয়ার একচ্ছত্র রাজা‘স্কাইপ’। সেই স্কাইপই অবশেষে বিদায় জানাচ্ছে। ৫ মে আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে এই বিখ্যাত যোগাযোগ প্ল্যাটফর্মটি।
২০০৩ সালে যাত্রা শুরু করেছিল স্কাইপ। তখন ইন্টারনেটের গতি ধীরে হলেও এই প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে এক দেশ থেকে অন্য দেশে বিনামূল্যে কথা বলার সুযোগ ছিল চমকপ্রদ। খুব অল্প সময়েই এটি দুনিয়াজোড়া জনপ্রিয়তা অর্জন করে। ২০১০-এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৩০ কোটিরও বেশি ছাড়িয়ে যায়।
তাহলে স্কাইপ কেন বন্ধ হয়ে গিয়েছে?
২০১১ সালে মাইক্রোসফট ৮.৫ বিলিয়ন ডলারে স্কাইপ কিনে নেয়। তখন তাদের লক্ষ্য ছিল এটি তাদের মূল যোগাযোগ প্ল্যাটফর্ম হিসেবে গড়ে তোলা। কিন্তু সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রযুক্তির জগতে আসে হোয়াটসঅ্যাপ, জুম, এমনকি মাইক্রোসফটের নিজস্ব অ্যাপ Teams যেগুলোর জনপ্রিয়তায় ধীরে ধীরে হারিয়ে যেতে থাকে স্কাইপ।
চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি মাইক্রোসফট ঘোষণা দেয়, তারা ৫ মে থেকে স্কাইপ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দিচ্ছে। এর মাধ্যমে তারা নিজেদের পরিষেবা সহজতর করতে চাইছে এবং Teams-কে যোগাযোগ ও সহযোগিতার কেন্দ্রে আনতে চাইছে।
বর্তমান ব্যবহারকারীদের কী হবে?
স্কাইপ ব্যবহারকারীদের জন্য মাইক্রোসফট একটি স্পষ্ট নির্দেশনা দিয়েছে skype.com-এ গিয়ে “Start using Teams” অপশন বেছে নিয়ে Teams-এ স্থানান্তর করুন। স্কাইপের সমস্ত চ্যাট ও কনট্যাক্ট Teams-এ স্থানান্তরের পরও আগের মতোই পাওয়া যাবে, কারণ লগইন তথ্য অপরিবর্তিত থাকবে।
ব্যবহারকারীদের জানানো হয়েছে, তারা ২০২৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত সময় পাবেন নিজেদের ডেটা ডাউনলোড বা স্থানান্তরের জন্য। এরপর সেই ডেটা স্থায়ীভাবে মুছে ফেলা হবে।
স্কাইপ শুধু একটি অ্যাপ ছিল না, ছিল বহু মানুষের জন্য দূরদেশের প্রিয়জনের সঙ্গে সংযোগের এক আবেগময় মাধ্যম। করোনা মহামারির আগেই যখন ভিডিও কলিং এখনকার মতো স্বাভাবিক ছিল না, তখন স্কাইপই প্রথম বিশ্বকে দেখিয়েছিল ইন্টারনেটের সাহায্যে কিভাবে দূরত্ব মুছে ফেলা যায়। আজ সেটি বিদায় নিচ্ছে, কিন্তু ইতিহাসে তার জায়গা চিরকাল অমলিন থাকবে।
সূত্র: আল জাজিরা
আফরোজা