
ছবি: সংগৃহীত
স্থান: রোমান সাম্রাজ্যের পাহাড়ি গুহা
তারিখ: প্রায় ১৮০০ বছর আগে
সূত্র: কোরআন শরীফ, সূরা আল কাহাফ (সূরা নং ১৮)
ঘটনার পটভূমি
রোমান সম্রাট ডিসিয়াসের শাসনামলে চলছিল তীব্র ধর্মীয় নিপীড়ন। ঠিক এই সময় সাতজন ঈমানদার যুবক পৌত্তলিকতা ও দেবদেবীর উপাসনা ত্যাগ করে এক আল্লাহতে বিশ্বাস স্থাপন করেন। নিপীড়ন থেকে বাঁচতে তারা আশ্রয় নেন এক পাহাড়ি গুহায়, যেখানে অলৌকিকভাবে তারা ঘুমিয়ে থাকেন ৩০০ বছরেরও বেশি সময়।
কোরআনের বর্ণনা
সূরা আল কাহাফে আল্লাহ তাআলা এ ঘটনার বিস্তারিত উল্লেখ করেছেন। কেয়ামত পর্যন্ত এটি মানুষের জন্য শিক্ষা হিসেবে নাযিল করা হয়েছে।
বৈজ্ঞানিক দিক এক — পার্শ্ব পরিবর্তন
সূরা আল কাহাফের ১৮ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে: “তুমি মনে করবে তারা জাগ্রত, অথচ তারা ঘুমন্ত। আমি তাদেরকে ডান ও বাম দিকে পার্শ্ব পরিবর্তন করাচ্ছিলাম…”
আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের ব্যাখ্যা অনুযায়ী, দীর্ঘ সময় এক অবস্থায় শোয়া হলে প্রেসার সোর্স (বেড সোর) হয়, যা রক্ত সঞ্চালন ব্যাহত করে এবং টিস্যু ক্ষতিগ্রস্ত করে। তাই প্যারালাইসিস রোগীদের নিয়মিত এপাশ-ওপাশ করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। কোরআনের এই আয়াত সেই চিকিৎসা-নীতির সাথে পুরোপুরি সঙ্গতিপূর্ণ।
বৈজ্ঞানিক দিক দুই — কান বন্ধ করা
সূরা আল কাহাফের ১১ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে: “তখন আমি বহু বছরের জন্য তাদের কান বন্ধ করে দিলাম…”
বিজ্ঞান বলে, ঘুমের সময়ও মানুষের কান সক্রিয় থাকে। শব্দের কারণে সহজেই ঘুম ভেঙে যায়। তাই শত বছরের গভীর নিদ্রা সম্ভব হতো না যদি যুবকদের কান কার্যকর থাকত। আল্লাহ তাদের কান বন্ধ করে দেন যাতে কোনো শব্দে তারা জেগে না ওঠে।
কোরআনের প্রতিটি শব্দে রয়েছে গভীর তাৎপর্য। ১৪০০ বছর আগে নাযিল হওয়া এই আয়াতগুলো আধুনিক বিজ্ঞানের আবিষ্কারের সাথে চমৎকারভাবে মিলে যায়। এটি প্রমাণ করে, কোরআন শুধু ধর্মীয় গ্রন্থ নয়—এতে রয়েছে এমন বৈজ্ঞানিক ইঙ্গিত যা যুগে যুগে মানবজীবনের জন্য প্রাসঙ্গিক।
ছামিয়া