ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১০ আগস্ট ২০২৫, ২৫ শ্রাবণ ১৪৩২

বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে নেই ইন্টারনেট পরিষেবা!

প্রকাশিত: ২০:২৮, ৯ আগস্ট ২০২৫

বিশ্বের একমাত্র দেশ যেখানে নেই ইন্টারনেট পরিষেবা!

ছবি : সংগৃহীত

বর্তমান যুগে ইন্টারনেট ছাড়া জীবন কল্পনা করাই কঠিন। কিন্তু বিশ্বের একমাত্র দেশ ইরিত্রিয়ায় সাধারণ মানুষের জন্য নেই কোনও ইন্টারনেট পরিষেবা। এখানে মোবাইল ডেটা সেবা কার্যত নেই বললেই চলে, আর বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগও অসম্ভব। শুধুমাত্র কিছু ইন্টারনেট ক্যাফেতে সীমিত গতির সংযোগ (টু-জি-এর চেয়েও ধীর) পাওয়া যায়, যেখানে এক ঘণ্টার জন্য খরচ পড়ে প্রায় ১০০ ইরিত্রিয়ান নাকফা।

ইরিত্রিয়ার পরিচিতি

পূর্ব আফ্রিকার লোহিত সাগরের তীরে অবস্থিত ইরিত্রিয়ার সীমানা জিবুতি, সুদান ও ইথিওপিয়ার সঙ্গে মিলে গেছে। রাজধানী আসমারা, যা ‘লিটল রোম’ নামে পরিচিত পুরনো ইতালীয় স্থাপত্যের জন্য। ১১৭,০০০ বর্গকিমি এলাকা জুড়ে দেশটির জনসংখ্যা প্রায় ৩৫ লাখ। সরকারি ভাষা নেই, তবে তিগরিনিয়া, আরবি ও ইংরেজি প্রচলিত।

শাসনব্যবস্থা ও কঠোর নিয়ন্ত্রণ

১৯৯৩ সালে স্বাধীনতার পর থেকে একবারও নির্বাচন হয়নি। রাষ্ট্রপতি ইসাইয়াস আফওয়ারকি তখন থেকেই ক্ষমতায় আছেন। ইরিত্রিয়াকে প্রায়শই ‘আফ্রিকার উত্তর কোরিয়া’ বলা হয়, কারণ এখানে কঠোর কর্তৃত্ববাদী শাসন চালু এবং নাগরিকদের বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা রয়েছে। হাসপাতাল, বিমান সংস্থা, পরিবহন ও টেলিভিশন—সবই সরকারের নিয়ন্ত্রণে। বিদেশি সংবাদ মাধ্যম ও চ্যানেলের অনুমতি নেই, স্বাধীন সাংবাদিকতা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। বিশ্ব প্রেস স্বাধীনতা সূচকে দেশটি সর্বনিম্ন স্থানে।

ইন্টারনেট ও প্রযুক্তি পরিস্থিতি

জনসংখ্যার মাত্র ১% জীবনে কোনও একসময় ইন্টারনেট ব্যবহার করেছে। দেশের ফোনগুলো স্মার্ট নয়, হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজ পাঠাতেও লাগে ৫–১০ মিনিট। ছবি বা ভিডিও আপলোড-ডাউনলোড কার্যত অসম্ভব।

অন্যান্য সীমাবদ্ধতা

এটিএম নেই: শুধুমাত্র নগদ অর্থে লেনদেন সম্ভব।

বিদেশযাত্রা নিষিদ্ধ: সরকারি অনুমতি ছাড়া দেশ ছাড়া যায় না; পালানোর চেষ্টা করলে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে।

পর্যটন সীমিত: ভিসা পাওয়া কঠিন এবং বিদেশিদের চলাফেরা নিয়ন্ত্রিত।


কঠোর শাসন, অর্থনৈতিক সংকট এবং প্রযুক্তিগত পশ্চাদপদতার কারণে ইরিত্রিয়া আজও আধুনিক বিশ্বের বাইরে বিচ্ছিন্ন এক দেশ।

Mily

×