
ছবি: সংগৃহীত
বিশ্বের ভূগোল ও ইতিহাস একযোগে যেখানে সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে, তারই একটি নিদর্শন হলো ডেড সি (Dead Sea)। এটি শুধু একটি লবণাক্ত হ্রদ নয়, বরং ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী এটি আল্লাহর শাস্তির জীবন্ত চিহ্ন* — ধ্বংসপ্রাপ্ত লুত (আ.)-এর কওমের ভূমি।
সম্প্রতি বিভিন্ন গবেষণা ও প্রাকৃতিক পর্যবেক্ষণ তথ্য বিশ্লেষণ করে সায়েন্স এলার্ট জানায়, পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু এবং সবচেয়ে লবণাক্ত জলাশয়গুলোর মধ্যে অন্যতম এই ডেড সি একটি অস্বাভাবিক ও রহস্যজনক প্রাকৃতিক গঠন।
ভূগোল ও বৈশিষ্ট্য (সায়েন্স এলার্ট অনুযায়ী):
* অবস্থান: জর্ডান ও ইসরায়েলের সীমান্তে অবস্থিত।
* উচ্চতা: সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৪৩০ মিটার নিচে, যা পৃথিবীর সর্বনিম্ন স্থলভাগ।
* লবণাক্ততা: প্রায় ৩৪%, যা সাধারণ সমুদ্রের তুলনায় ৮-৯ গুণ বেশি।
* জীবনহীনতা: অতিমাত্রায় লবণাক্ত হওয়ায় কোনো মাছ বা জলজ প্রাণী বাঁচে না — এ কারণেই একে “Dead Sea” বলা হয়।
সায়েন্স এলার্ট আরও জানায়, এত লবণাক্ত পরিবেশে পানিতে ভাসতে কোনো কষ্ট হয় না, তবে তা শরীরের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। দীর্ঘ সময় পানিতে থাকলে চামড়া ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ (ইসলামিক সূত্র অনুযায়ী):
পবিত্র কুরআনের বহু জায়গায় নবী লুত (আ.) -এর জাতির ধ্বংসের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। তারা সমকামিতা ও অশ্লীলতায় লিপ্ত ছিল, আর আল্লাহর আদেশ অমান্য করায় তাদের উপর আসে ভয়াবহ শাস্তি।
“অবশেষে আমি তাদের ওপর বর্ষণ করলাম এক ভয়ানক বৃষ্টি। দেখো, অপরাধীদের পরিণতি কেমন হয়েছিল।”
— (সূরা আ’রাফ: ৮৪)
এই ঘটনাস্থলই আজকের ডেড সি এলাকা, যেখানে ভূমি ধ্বসে পড়ে তৈরি হয় এক গহীন, লবণাক্ত হ্রদ।
বিজ্ঞান ও ধর্ম— দুই দিকেই মিল
বিজ্ঞান ডেড সি-কে দেখছে এক প্রাকৃতিক বিস্ময় হিসেবে — পৃথিবীর সবচেয়ে নিচু ও লবণাক্ত হ্রদ।
আর ইসলাম এটিকে চিহ্নিত করছে আল্লাহর গজব ও অন্যায়কারীদের ধ্বংসের স্থান হিসেবে।
সায়েন্স এলার্টের মতে, “ডেড সি আমাদের মনে করিয়ে দেয় প্রকৃতির সীমাহীন শক্তি ও পৃথিবীর গতিশীলতা, যা কয়েক হাজার বছর আগে ঘটে যাওয়া ঘটনা আজও টিকে রেখেছে বাস্তবতায়।”
ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের কাছে ডেড সি একটি স্মরণীয় স্থান, যেখানে শাস্তির নিদর্শন আজও দৃশ্যমান। মুসলিম পর্যটকরা এই অঞ্চল সফরের সময় অনেকে এখানে গোসল কিংবা সেলফি তোলাকে সমীচীন মনে করেন না।
ডেড সি শুধু একটি ভৌগোলিক অঞ্চল নয়, এটি ইতিহাস, ধর্ম, বিজ্ঞান ও শিক্ষা— চারটির সম্মিলনে তৈরি এক অনন্য নিদর্শন। আজকের এই অশান্ত ও অশ্লীলতার যুগে ডেড সি যেন আমাদের সতর্ক করে বলে দেয়— "আল্লাহর সীমা লঙ্ঘন করলে ফল
ছামিয়া