ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র জার্মানি গাজা নিয়ে নিল অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ!

প্রকাশিত: ১৮:৫২, ৮ আগস্ট ২০২৫

ইসরায়েলের সবচেয়ে বড় মিত্র জার্মানি গাজা নিয়ে নিল অপ্রত্যাশিত পদক্ষেপ!

ছবি: সংগৃহীত

জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস শুক্রবার ঘোষণা দিয়েছেন, গাজায় ব্যবহারের মতো কোনো সামরিক সরঞ্জাম এখন থেকে আর রপ্তানি করা হবে না, যতক্ষণ না নতুন কোনো নির্দেশ দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত এসেছে ইসরায়েলের মন্ত্রিসভা গাজা সিটি দখল করার পরিকল্পনা নেওয়ার পর, যা ইসরায়েলের অন্যতম শক্তিশালী মিত্র জার্মানির পক্ষ থেকে বিরল এবং দ্রুত প্রতিক্রিয়া।

ইসরায়েলের বিরুদ্ধে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কিছু দেশ কঠোর অবস্থান নেওয়ার পরও এতদিন বিরত থাকা জার্মানি এখন গাজা দখল পরিকল্পনার পর ইসরায়েলকে আরও একা করে তুলতে পারে। জাতিসংঘ, ত্রাণ সংস্থা ও মানবাধিকার সংগঠনসহ অনেকেই এই পরিকল্পনার কঠোর সমালোচনা করেছে।

মের্ৎস বলেন, “ইসরায়েলের হামাসের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে” এবং “ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও যুদ্ধবিরতির জন্য আলোচনা আমাদের প্রধান কাজ।” তিনি আরও যোগ করেন, গাজার ভবিষ্যতে হামাসের কোনো অংশ থাকা উচিত নয়।

তিনি বলেন, “গত রাতে মন্ত্রিসভা যে গাজায় কঠোর সামরিক অভিযান অনুমোদন দিয়েছে, তাতে লক্ষ্য পূরণ কঠিন। তাই এখন থেকে গাজায় ব্যবহারের উপযোগী সামরিক সরঞ্জাম রপ্তানি অনুমোদন দেওয়া হবে না।”

কোন সামরিক সরঞ্জাম এতে পড়বে তা এখনো জানা যায়নি।

মের্ৎস গাজার মানুষদের দুর্দশায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে ইসরায়েলকে ত্রাণ পৌঁছাতে পূর্ণ সহায়তা দিতে এবং গাজার মানবিক সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে আহ্বান জানান।

জার্মানি হলোকাস্টের দায়বদ্ধতার কারণে ইসরায়েলের অন্যতম প্রধান সমর্থক। অন্যদিকে, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের মতো দেশরা ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র স্বীকৃতির পরিকল্পনা করলেও, জার্মানি তা এখনও করেনি।

গত ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর শুরু হওয়া ইসরায়েলের অভিযানে গাজায় হাজার হাজার মানুষ নিহত ও বহু মানুষ গৃহহীন হয়েছে।

মের্ৎস পশ্চিম তীর দখল না করার জন্যও ইসরায়েলকে সতর্ক করেছেন।

অন্যান্য ইউরোপীয় দেশও ইসরায়েলের সামরিক সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে। ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, গাজায় সামরিক অভিযান তীব্র করার সিদ্ধান্ত ভুল এবং মানবিক সংকট বাড়াবে। ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও একই মত পোষণ করেছেন।

গত সপ্তাহে স্লোভেনিয়া গাজায় ইসরায়েলের কর্মকাণ্ডের জবাবে ইসরায়েলে অস্ত্র আমদানি-রপ্তানি ও ট্রানজিট নিষিদ্ধের ঘোষণা দিয়েছিল, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রথম।

গাজার মানুষের দুর্দশার ছবি দেখে ইউরোপের বড় বড় শহরে বিক্ষোভ চলছে। ইসরায়েলের নিষেধাজ্ঞার কারণে ত্রাণ নিতে গিয়ে ফিলিস্তিনিরা নিহত হওয়ার ঘটনায় ইসরায়েল ও ইইউর সম্পর্ক কঠিন হচ্ছে।

ইসরায়েলের সামরিক সিদ্ধান্ত এসেছে যখন যুদ্ধ শেষের আন্তর্জাতিক আহ্বান বাড়ছে এবং দেশের ভেতরেও অনেকেই বাকি জিম্মিদের জন্য উদ্বিগ্ন।

বর্তমানে ৫০ জন জিম্মি গাজায় রয়েছে, এদের মধ্যে প্রায় ২০ জন জীবিত বলে মনে করা হয়।

একটি বড় স্থল অভিযান কবে হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়, কারণ এতে হাজার হাজার সেনা মোতায়েন ও বেসামরিক সরিয়ে নেওয়া লাগবে, যা মানবিক সংকট আরও বাড়াবে।

আবির

আরো পড়ুন  

×