ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৪ শ্রাবণ ১৪৩২

অনলাইনে বন্ধুত্বের ছলনায় মুম্বাইয়ের ৮০ বছরের বৃদ্ধ, যেভাবে হারালেন ৯ কোটি টাকা

প্রকাশিত: ১৮:৫২, ৮ আগস্ট ২০২৫; আপডেট: ১৮:৫৩, ৮ আগস্ট ২০২৫

অনলাইনে বন্ধুত্বের ছলনায় মুম্বাইয়ের ৮০ বছরের বৃদ্ধ, যেভাবে হারালেন ৯ কোটি টাকা

ছবি: সংগৃহীত (এআই তৈরিকৃত)

মুম্বাইয়ের ৮০ বছর বয়সী এক ব্যক্তি প্রায় দুই বছর ধরে ৭৩৪টি অনলাইন লেনদেনের ফাঁদে পা দিয়ে ৯ কোটি টাকার মতো অর্থ হারিয়েছেন। এই প্রতারণার পেছনে চার জন নারী থাকলেও পুলিশের ধারণা তারা আসলে একক ব্যক্তি হতে পারেন, যারা ভালোবাসা ও সহানুভূতির আড়ালে অর্থ হাতিয়ে নিয়েছে।

২০২৩ সালের এপ্রিল মাসে বৃদ্ধ ওই ব্যক্তি ফেসবুকে ‘শারভি’ নামে এক নারীকে বন্ধু আবেদন (ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট) পাঠান। পরস্পর অপরিচিত হলেও প্রথমে আবেদনটি গ্রহণ হয়নি। কয়েকদিন পর শারভির অ্যাকাউন্ট থেকে বন্ধুত্বের আবেদন আসলে তিনি তা গ্রহণ করেন।

এরপর তারা চ্যাট শুরু করেন এবং ফোন নম্বর বিনিময় হয়। ফেসবুক থেকে আলোচনাটি চলে আসে হোয়াটসঅ্যাপে। শারভি জানান, তিনি স্বামী থেকে আলাদা এবং সন্তানদের সাথে থাকেন। ধীরে ধীরে তিনি তার অসুস্থ সন্তানদের কথা বলে অর্থ চাওয়া শুরু করেন।

পরবর্তীতে ‘কবিতা’ নামের আরেক নারী হোয়াটসঅ্যাপে বৃদ্ধ ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠাতে শুরু করেন। তিনি নিজেকে শারভির পরিচিত বলেছিলেন এবং বন্ধুত্বের প্রস্তাব দেন। কিছুদিনের মধ্যেই কবিতা অবাঞ্ছিত ও অনৈতিক বার্তা পাঠানো শুরু করেন এবং অর্থের দাবি করেন।

২০২৩ সালের ডিসেম্বর মাসে ‘দিনাজ’ নামে আরেক নারী হোয়াটসঅ্যাপে প্রবেশ করেন, যিনি নিজেকে শারভির বোন হিসেবে পরিচয় দেন। তিনি বৃদ্ধ ব্যক্তিকে জানান, শারভি মারা গেছেন এবং হাসপাতালের বিল পরিশোধ করার জন্য অর্থ চান। দিনাজ শারভি ও ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধ ব্যক্তির মধ্যকার চ্যাটের স্ক্রিনশট পাঠিয়ে অর্থ প্রদানে তাকে বাধ্য করেন।

বৃদ্ধ ব্যক্তি টাকা ফেরত চাওয়ার পর দিনাজ আত্মহত্যার হুমকি দেন।

পরবর্তীতে ‘জেসমিন’ নামে একজন নারী বৃদ্ধ ব্যক্তিকে মেসেজ পাঠিয়ে সাহায্য প্রার্থনা করেন এবং তিনি তাকে অর্থ পাঠান।

অর্থের টানাপোড়েন

এপ্রিল ২০২৩ থেকে জানুয়ারি ২০২৫ পর্যন্ত বৃদ্ধ ব্যক্তি মোট ৭৩৪টি লেনদেনে প্রায় ৮ কোটি ৭০ লাখ টাকা পাঠিয়েছেন।

সব সঞ্চয় শেষ হয়ে গেলে তিনি তার পুত্রবধূ থেকে ২ লাখ টাকা ধার নেন, কিন্তু প্রতারক নারীদের দাবি থামেনি। পরে তিনি তার ছেলের কাছে ৫ লাখ টাকা চেয়ে পুরো ঘটনা জানান। তার ছেলেটি সন্দেহজনক হয়ে পড়লে বৃদ্ধ তাকে সব খুলে বলেন।

প্রতারণার শিকার হয়ে ভুক্তভোগী বৃদ্ধ মানসিকভাবে বিধ্বস্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন এবং তার ডিমেনশিয়া ধরা পড়ে।

অবশেষে ২০২৫ সালের ২২ জুলাই এই প্রতারণার অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং সন্দেহ করছে যে, এই চার জন নারীর আড়ালে আসলে একই ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারেন।

 

সূত্র: এনডিটিভি।

রাকিব

আরো পড়ুন  

×