ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩০ ভাদ্র ১৪৩১

মাছ রপ্তানি

-

প্রকাশিত: ২০:৩২, ৬ আগস্ট ২০২৪

মাছ রপ্তানি

সম্পাদকীয়

সমুদ্র, নদ-নদী পরিবেষ্টিতই শুধু নয়Ñ খাল, বিল, পুকুর নালায় ভরা আমাদের আবহমান বাংলা। সঙ্গত কারণেই মাছ দেশীয় খাদ্য পণ্যের অন্যতম সম্ভার। মাছ রপ্তানিতেও আসে বহু  বৈদেশিক মুদ্রা। আর মাছে-ভাতে বাঙালি এমন চিরায়ত প্রবাদ আধুনিক প্রযুক্তির বিশ্বেও তার মর্যাদা বিন্দুমাত্র হারায়নি। স্বয়ংসম্পূর্ণ মৎস্য সম্ভারেও আমরা পরিপূর্ণ এক জাতি।

সেই প্রাচীন বাংলার চিরায়ত ঐতিহ্যের এক অনন্য পালাক্রম, যা নতুন সময়কেও নানা মাত্রিকে ভরিয়ে তুলছে। এমন মৎস্য সম্পদ নিয়ে উদ্্যাপন করা হয়েছে ‘জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ ২০২৪’। প্রতিপাদ্য বিষয়Ñ ‘ভরবো মাছে মোদের দেশ, গড়বো স্মার্ট বাংলাদেশ।’ ২০২৪ সালের মৎস্য সপ্তাহ উদ্বোধন করে যে শুভযাত্রায় দেশ অনন্য কর্মযোগে উদ্ভাসিত, তা অতীত বর্তমান ভবিষ্যতেরও এক অবারিত ধারা। 
শুধু সমুদ্র, নদ-নদী কিংবা পুকুর খাল বিল নয়, বরং নতুন সময়ের অনুষঙ্গ হয়ে উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রযুক্তির যোগসাজশও মৎস্য শিল্পকে আধুনিকায়ন এবং ব্যাপক প্রসারিত করছে। বাংলাদেশও এগিয়ে যাচ্ছে দৃষ্টিনন্দনভাবে। অভ্যন্তরীণ প্রয়োজন মিটিয়ে বহির্বিশ্বে  রপ্তানির পরিকল্পনা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। সেখানে আগামী ছয় বছরের মধ্যে ৫০০ কোটি মার্কিন ডলারের মাছ রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ নতুন যুগের অপার সম্ভাবনাময় আর্থিক খাত।

তাই উৎপাদন বাড়ানোও প্রাসঙ্গিক কর্মযোগের সহায়ক চালিকা শক্তি। সেখানে মাছ চাষে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে উৎপাদনে আরও গতি সঞ্চালন সরকারের যথার্থ কার্যবিধি। যা আগামীর বাংলাদেশের নতুন সময়ের নবঅধ্যায়। টেকসই উন্নয়নের দীর্ঘ লক্ষ্যমাত্রায় ২০৪১ সালের মধ্যেই যা উন্নীত হবে ৮৫ লাখ মেট্রিক টনে। মৎস্য অধিদপ্তরের সভাকক্ষে ২০২৪ সালের মৎস্য সপ্তাহ নিয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন ও মতবিনিময় সভায় এমন সব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উঠে আসে। 
বাংলাদেশ খাদ্যে প্রায় স্বয়ংসম্পূর্ণ। ধনে ধান্যে, পুষ্পে ভরা আমাদের শ্যামল বাংলা যুগ যুগান্তরে এক উর্বর পলি মাটির দেশ। কবিগুরু বলেন, নরম উর্বর মাটিতে বীজ দেখলেই নাকি ফসল ফলে। কোনো পাষাণ কিংবা গুরুভার আবহমান বাংলাকে সহ্য করতেও হয়নি। তাই শুধু গানে কিংবা বচন বা প্রবাদ বাক্যেই নয়, বাংলার চিরায়ত শস্য সম্ভারের যে সমৃদ্ধ আঙিনা তা যেন যন্ত্র সভ্যতার দুরন্ত গতিরও অনুগামী হয়েছে।

সম্প্রতি বাংলাদেশ মিঠা পানির মাছ উৎপাদনে বৃহত্তর এশিয়ার বিপুল মানুষের দেশ চীনকেও পেছনে ফেলে দিয়েছে। সেখানে মৎস্য বিজ্ঞানীরা আরও পরামর্শ দিচ্ছেন বিলুপ্ত অনেক মাছকে পুনরায় নতুনভাবে উৎপাদনের যা খুবই সঙ্গত। তাছাড়া সুনীল অর্থনীতির অপার সম্ভাবনাকে সামনে রেখে মৎস্য সম্পদ আরও বেগবান হয়ে নতুন সময়ের প্রয়োজনে যথার্থ কার্যক্রমও আবশ্যক। আর বাংলার ইলিশের কদর শুধু দেশের ঘরে ঘরেই নয়, বরং সারা বিশ্বে এর চাহিদা এক অপরিহার্য বৈদেশিক মুদ্রার অর্জন।

×