ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে করণীয়

ড. রুবেল আনছার

প্রকাশিত: ২০:৫৯, ৭ ডিসেম্বর ২০২৩

স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে করণীয়

রাষ্ট্রের জনগণ সচেতন হলে আকস্মিক বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা অনেকাংশে কম হয়

মানুষ তার ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক– প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার করে জীবনকে অনেকটা সহজ করে তুলেছে। আমাদের কৃষি, শিক্ষা, যোগাযোগ, গবেষণা-সবক্ষেত্রেই প্রযুক্তির জয়জয়কার। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রার পরিচালক মানুষই। মানুষ যদি এসবে অভ্যস্ত না হয়, এসবকে ইতিবাচক অর্থে, কল্যাণের পথে ব্যবহার না-করে তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশের ফল নেতির দিকেই টানবে

রাষ্ট্রের জনগণ সচেতন হলে আকস্মিক বিপর্যয় ও বিশৃঙ্খলা অনেকাংশে কম হয়। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ দেশের অনেক বিষয়েই সচেতন নন। অনেক ক্ষেত্রেই তারা অদৃষ্টবাদী, হুজুগে বিশ্বাসী। এছাড়াও স্মার্ট শিক্ষার আলো বাংলাদেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে এখনো পৌঁছেনি। ফলে নাগরিক জীবনে অভ্যস্ত কিছু মানুষ সমাজ-রাজনীতি বিষয়ে সচেতন হলেও অধিকাংশ মানুষ তা নন। তাই তাদের সহজেই বিপথে পরিচালিত করা যায়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে আমরা দেখেছি শুরু থেকেই স্বার্থান্বেষী শ্রেণি ও মৌলবাদী গোষ্ঠী সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করে নানা ধরনের স্বার্থ হাসিল করছে।

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সাধারণ মানুষকে স্নেহ-ভালোবাসায় সচেতন করে তোলার চেষ্টা করেছেন। তাঁরই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা তার পিতার মতোই বাংলার মানুষকে ভালোবাসেন, বাংলার মানুষের মুক্তি ও উন্নয়ন কামনা করেন। তবে শেখ হাসিনার পক্ষে একা বাংলার মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে তাদের সচেতন করে তোলা কঠিন। তাই আমরা যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও চেতনায় বিশ^াসী, যারা শেখ হাসিনাকে ভালোবাসি, সমর্থন করি তাদেরই পবিত্র দায়িত্ব এখন দেশে জনসচেতনতা সৃষ্টি করা। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল মানুষের উচিত এখন শেখ হাসিনার পক্ষে জনমত গড়ে তোলা।   

ডিজিটাল বাংলাদেশের উন্নয়ন ও সুফল
সাশ্রয়ী, টেকসই ও জ্ঞানভিত্তিক বাংলাদেশের প্রত্যাশা দীর্ঘদিনের। যেখানে অর্থের আধিপত্যের পরিবর্তে জ্ঞান, মেধা ও পরিশ্রমের জয়গান প্রতিষ্ঠিত হবে। তখন শোষণ ও বৈষম্যের জায়গা দখল করবে সাম্য ও স্বাধীনতা। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার বাস্তবায়নে সফল হয়েছে। কয়েক বছরের মধ্যে শিক্ষা খাতে প্রযুক্তির প্রসার ঘটিয়ে বিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। এখন স্কুল থেকে শুরু করে উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানেও প্রযুক্তির অবাধ ব্যবহার হচ্ছে।

শ্রেণিকক্ষে ব্যবহার হচ্ছে ল্যাপটপ, মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর, স্পিকার ও ইন্টারনেট। এভাবেই ক্রমশ বেড়ে চলেছে শিক্ষার প্রসার। শিক্ষা ছাড়াও সর্বক্ষেত্রে লেগেছে প্রযুক্তির ছোঁয়া। প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের এখন যে উন্নতি হয়েছে এক দশক আগেও তা কল্পনা করা যেত না। দেশের সর্বস্তরে মানুষ প্রতিনিয়ত অভ্যস্ত হচ্ছে প্রযুক্তি ব্যবহারে। করোনা মহামারির ধাক্কা ও বৈশ্বিক ক্রান্তিকালের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ পরিণত হয়েছে মধ্যম আয়ের দেশে। ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা উন্নয়ন বা ইতিবাচক পরিবর্তন প্রত্যক্ষ করছি। বিশেষত পদ্মা সেতু, মেট্রোরেল, শতভাগ বিদ্যুতায়ন, আইসিটি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে অনেক উন্নয়ন হয়েছে।

পদ্মা সেতু ছাড়াও অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্যে অনেক অবকাঠামো নির্মাণ উল্লেখ করার মতো। যেমন- কর্ণফুলী টানেল, তৃতীয় পায়রা বন্দর, রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র ইত্যাদি। এছাড়াও মানুষের মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি, জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি, নারীর ক্ষমতায়ন, মানুষের গড় আয়ু বৃদ্ধি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলেই সম্ভব হচ্ছে। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ এসব উন্নয়নকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল ও সুবিধা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরতে হবে এবং ডিজিটাল বাংলাদেশের রূপকার শেখ হাসিনার পক্ষে বাংলার মানুষকে সদর্থকভাবে প্রস্তুত করতে হবে। মানুষকে এটা বোঝাতে হবে যে, শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ নির্মাণ করেছেন। শেখ হাসিনাই স্মার্ট বাংলাদেশও গড়ে তুলবেন। 

ধর্মান্ধতা দূরীকরণ
বাংলাদেশে বিভিন্ন সময় ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরি করা হয়েছে। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর এ দেশে দীর্ঘদিন ধর্মভিত্তিক রাজনীতি ও ধর্মের নামে ভ-ামি চলেছে। এমনকি এ দেশের ধর্মান্ধ শ্রেণি আধুনিক যুগে এসেও চাঁদে একজন মাওলানার ছবি দেখার গুজব ছড়িয়ে রাজনৈতিক সুবিধা নেওয়ার চেষ্টা করেছে। স্বাধীনতাবিরোধী সেই গোষ্ঠীই এখনো ধর্মের নামে ভ-ামি করে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে চলেছে। মানুষের বাড়িঘর, বাস-ট্রেন-অটোরিক্সায় পেট্রোলবোমা মেরে, অগ্নিসংযোগ করে জনগণের জানমাল ধ্বংস করছে। এমনকি সাধারণ মানুষ, পুলিশ, সাংবাদিককে হত্যা করছে।

এমন হত্যাকারী, দেশের সম্পদ ধ্বংসকারী প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠীই আবার ধর্মকে সামনে এনে নিজেদের গণতন্ত্রপ্রেমী বলে ভ-ামি করছে। বাংলাদেশের মানুষের উচিত এদের মুখোশ সবার সামনে উন্মোচন করা। সবার সামনে এদের ঘৃণ্য-জঘন্য কাজের ফিরিস্তি তুলে ধরা। সম্মিলিতভাবে এদের প্রতিহত করা এখন সময়ের দাবি। মনে রাখতে হবে যে, ‘ধর্ম ব্যবসায়ীরা ধর্মেরও নয়, দেশেরও নয়’। স্বপ্নের স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ধর্মান্ধতা যথেষ্ট প্রতিবন্ধকতা তৈরি করতে পারে। তাই দেশের মানুষকে স্মার্ট শিক্ষায় শিক্ষিত করে, সমস্ত ধর্মান্ধতা থেকে মুক্ত করে কল্যাণের পথে আনতে হবে।

দক্ষ জনবল তৈরি
রাষ্ট্র একটি প্রক্রিয়া মাত্র। সেই প্রক্রিয়ার চালিকাশক্তি হলো দক্ষ জনবল। সুষ্ঠুভাবে রাষ্ট্র পরিচালনার জন্য রাষ্ট্রের নানা অঙ্গ-কাঠামো থাকে। প্রত্যেক অঙ্গ-কাঠামো বা সেক্টরে দক্ষ জনবল না থাকলে রাষ্ট্রের কার্যাবলি ব্যাহত হয়। তাই বাংলাদেশের প্রত্যেক সেক্টরে যোগ্য, সৎ ও দক্ষ লোক থাকা দরকার। এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলোÑ জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন ও নির্বাচন। স্বাধীনতার পক্ষের দল হিসেবে আওয়ামী লীগ এবং দলের সভাপতি জননেত্রী শেখ হাসিনা দীর্ঘদিন ধরে দক্ষ লোককেই মনোনয়ন দিয়েছেন। তবে এবারের নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিত ভিন্ন। তাই দলের সভাপতি হিসেবে তাকে সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে, সঠিক লোককে সঠিক জায়গায় নিযুক্ত করতে হবে।

কেননা, জনগণ তার ভোটের মাধ্যমে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে। সৎ ও দক্ষ লোক মনোনয়ন না পেয়ে অসৎ ও অদক্ষ লোক মনোনয়ন পেলে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অন্তরায় হবে। আবার এমনও হতে পারে যে, জনগণের রায়ে সেই অসৎ বা অদক্ষ লোক নির্বাচিতই হলেন না, কিংবা কোনো কারণে নির্বাচিত হলেন- তাতেও কিন্তু দেশের কল্যাণ হবে না। দলের সভাপতি হিসেবে জননেত্রী শেখ হাসিনার যেমন এ বিষয়ে ভাবতে হবে, তেমনি বাংলাদেশের মানুষকেও ভাবতে হবে যে, কোনো অবস্থাতেই যেন স্বাধীনতাবিরোধীরা নির্বাচিত না হয়। কাজেই যথাযোগ্য মনোনয়নে যোগ্য লোক নির্বাচিত হলে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন আরেক ধাপ এগিয়ে যাবে।

মানবিক মূল্যবোধ সৃষ্টি
এ কথা সত্যি যে, বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে প্রযুক্তির উন্নয়ন সারাবিশ্বকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। মানুষ তার ব্যক্তিগত, সামাজিক, অর্থনৈতিক– প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রযুক্তির ব্যবহার করে জীবনকে অনেকটা সহজ করে তুলেছে। আমাদের কৃষি, শিক্ষা, যোগাযোগ, গবেষণা-সবক্ষেত্রেই প্রযুক্তির জয়জয়কার। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির এই অগ্রযাত্রার পরিচালক মানুষই। মানুষ যদি এসবে অভ্যস্ত না হয়, এসবকে ইতিবাচক অর্থে, কল্যাণের পথে ব্যবহার না করে তাহলে ডিজিটাল বাংলাদেশের ফল নেতির দিকেই টানবে। কাজেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সঙ্গে দেশের নাগরিকের মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করাও জরুরি। মূল্যবোধ নাগরিককে সুনাগরিক করে, সুনাগরিক মানে বঙ্গবন্ধুর ‘সোনার মানুষ’, আর শেখ হাসিনার স্মার্ট বাংলাদেশের ‘স্মার্ট সিটিজেন’। এ জন্য জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি সাহিত্য-শিল্পের চর্চাকেও গুরুত্ব দিতে হবে।  

বিদেশী হস্তক্ষেপ প্রতিরোধ
দেশ গড়ার কাজে বঙ্গবন্ধু অন্য দেশের সাহায্য নিতে কিংবা অন্য দেশকে বন্ধু ভাবতে কুণ্ঠিত হননি। তবে অন্য কোনো দেশ আমাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলাক সেটা তিনি কোনোভাবেই চাইতেন না। এক্ষেত্রে তিনি বজ্র্রকঠিন অবস্থানে থাকতেন। তাঁর সেই চিন্তার প্রকাশ ঘটেছে ৭ জুন ১৯৭২ সালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রদত্ত ভাষণে–
‘আমার দেশ স্বাধীন দেশ। ভারত হোক, আমেরিকা হোক, রাশিয়া হোক, গ্রেট ব্রিটেন হোক, কারও এমন শক্তি নাই যে, আমি যতক্ষণ বেঁচে থাকি ততক্ষণ আমার দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

কিন্তু রাষ্ট্রকে বন্ধু বলতে লজ্জা করা উচিত নয়। যেদিন আমার সরকার ক্ষমতায় আসে সেদিন এক ছটাক চাল ছিল না। আমি তাই ভারতের কাছে চাল চাই। ভারত তখন আমাদের সাড়ে সাত লক্ষ টন চাল দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এরই মধ্যে তাদের কাছ থেকে আমি এক কোটি বাষট্টি লক্ষ মণ চাল পেয়েছি। এই চাল গরিবদের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
বিশেষ করে বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে বিদেশীদের নাক গলানোর সুযোগ দিলে সেই সুযোগের পথ ধরে দেশীয় দালাল, রাজাকাররা আবার চক্রান্তে মেতে উঠতে পারে। বাংলার মানুষ আর কোনো পলাশী বা পঁচাত্তরের ট্যাজেডি চায় না। বাংলাদেশের মানুষ আজ জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ চায়।

অবদানের স্বীকৃতি
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সারাজীবন সংগ্রাম করে, অজ¯্র ত্যাগ-তিতিক্ষার মাধ্যমে বাঙালি জাতিকে একটি স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। নিজের জীবনের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে তিনি প্রাধান্য না দিয়ে বাংলার মাটি ও মানুষের কথা ভেবেছেন, মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন। তাঁর প্রতিদানে অকৃতজ্ঞ বাঙালি তাঁকে পঁচাত্তরের বীভৎসতা উপহার দিয়েছে। পঁচাত্তর পরবর্তীকালে আরও দীর্ঘকাল তাঁকে নানাভাবে হেয় করার হীন ষড়যন্ত্রে মেতেছিল। বঙ্গবন্ধুর ঋণ শোধ করা তো দূরের কথা, তাঁর আদর্শ ও চেতনাকে চিরতরে মুছে ফেলার চেষ্টা চলেছিল।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশকে যেভাবে ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র বানানোর নীলনক্সা বাস্তবায়ন করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে চিরতরে মুছে ফেলার জঘন্য মিথ্যাচারিতা ও ষড়যন্ত্রের জাল বিস্তার করা হয়েছিল, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা তাঁর দেশপ্রেম ও প্রজ্ঞা দিয়ে সমস্ত ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করতে সক্ষম হয়েছেন। বাংলাদেশকে অদৃষ্টবাদী ও দারিদ্র্যের দুষ্টচক্রের মধ্যে আবদ্ধ রাখার ষড়যন্ত্র, ধর্মকে রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের প্রবর্তন প্রভৃতি সংকট থেকে মুক্ত করে শেখ হাসিনা আমাদের উপহার দিয়েছেন আজকের ডিজিটাল বাংলাদেশ। জাতির পিতার সুযোগ্যকন্যা হিসেবে হাজারো বাধা অতিক্রম করে, ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে তার দূরদৃষ্টি ও বিচক্ষণতা এবং রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা দিয়ে বাংলাদেশকে বিশ্বদরবারে মর্যাদার আসনে অধিষ্ঠিত করেছেন।

চতুর্থবারের মতো তিনি প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন। ইতোমধ্যে সফল রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা নারীর ক্ষমতায়ন, আইসিটি ব্যবহার, ডিজিটাল ব্যবস্থায় বাংলাদেশের অগ্রগতি ও শিক্ষার প্রসারে যুগান্তকারী ভূমিকা পালন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন, দুর্নীতি দমন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা এবং বিশ্ব মহিলা ও শিশু স্বাস্থ্যের উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য গ্লোবাল উইমেন্স লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড, আইসিটি সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাওয়ার্ড, গ্লোবাল ডাইভারসিটি অ্যাওয়ার্ড, এজেন্ট অব চেঞ্জ পুরস্কার ও প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন, জাতিসংঘের সাউথ কো-অপারেশন ভিশনারি অ্যাওয়ার্ড, চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ পুরস্কার, সম্প্রতি মর্যাদাপূর্ণ এশিয়ান টাউনস্কেপ জুরিস অ্যাওয়ার্ডসহ ৩৯টির বেশি আন্তর্জাতিক পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন।

মনে রাখতে হবে যে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার পথ ধরে আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়ন হয়েছে। বাংলাদেশের মানুষ ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশের নানামুখী সুফল ভোগও করছে। দেশে এবং বিদেশে এজন্য শেখ হাসিনাকে নানাভাবে সম্মানিত করা হয়েছে। কিন্তু তার এমন অবদানের কাছে সেই সম্মাননা যৎসামান্যই বটে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন দ্বারপ্রান্তে সমাগত। এই নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে সমর্থন দিয়ে পুনরায় প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসানোই হবে তার অবদানের প্রতি বাঙালির শেষ্ঠ সম্মাননা। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুফল যেমন বাংলাদেশের সর্বস্তরের মানুষ ভোগ করছে, তেমনি ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’-এর সুফল ভোগ করতে হলে সর্বস্তরের মানুষকেই শেখ হাসিনার পক্ষে কাজ করতে হবে। 


লেখক : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান
ডিন– কলা ও মানবিক অনুষদ
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় 

×