ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ২২ আশ্বিন ১৪৩১

সেবার মান বাড়বে

-

প্রকাশিত: ২০:৪৮, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৩

সেবার মান বাড়বে

সম্পাদকীয়

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৮তম অধিবেশনে যোগদানের এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ    হাসিনা দেশের কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কথা বলেন বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার মহাপরিচালকের সঙ্গে। ‘শেখ হাসিনা ইনিশিয়েটিভ অব কমিউনিটি ক্লিনিক : ইনোভেটিভ অ্যাপ্রোচ অ্যাচিভিং ইউনিভার্সেল হেলথ কভারেজ ইনক্লুসিভ অব মেন্টাল হেলথ অ্যান্ড ডিসঅ্যাবিলিটি’ শীর্ষক উচ্চস্তরের সাইড ইভেন্টের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী এই আহ্বান জানান। স্বাস্থ্যসেবাকে তৃণমূলে পৌঁছে দিতে কমিউনিটি সেবার কোনো বিকল্প নেই। সে কথা ভেবে কমিউনিটি ক্লিনিকের জন্য তিনি পাঁচটি অগ্রাধিকারের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কমিউনিটি ক্লিনিক একটি ধারণা যা বাংলাদেশে সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে। জাতিসংঘ এটিকে ‘শেখ হাসিনা উদ্যোগ’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী বিশ^ স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। আর যুক্তরাষ্ট্রের ব্রাউন ইউনিভার্সিটি দিয়েছে সম্মাননা।
বাংলাদেশে বসবাসরত জনসংখ্যার একটি বৃহৎ অংশই প্রত্যন্ত অঞ্চল, গ্রামে বসবাস করে। তাদের কাছে সহজেই স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দেওয়ার একটি অন্যতম কার্যকরী উপায় হলো কমিউনিটি ক্লিনিক। এতে করে প্রতিটি দুর্গম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলে বসবাসকারী সকলে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা লাভ করছে। সেই লক্ষ্যে আমাদের সরকার কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন এবং তা উন্নতকরণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ^বিদ্যালয় এবং কমিউনিটি বেজড হেলথ কেয়ার অপারেশনাল প্ল্যান পরিচালিত যৌথ গবেষণায় দেখা যায়, যেসব স্থানে কমিউনিটি ক্লিনিক আছে সেসব স্থানের মানুষ কমিউনিটি ক্লিনিকের সেবায় সন্তুষ্ট। প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ কমিউনিটি স্বাস্থ্যসেবায় খুশি। কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো আমাদের দেশের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা এবং স্বাস্থ্যরক্ষায় কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। যার ফলে নবজাতক ও শিশু মৃত্যু, মাতৃমৃত্যু, প্রজনন হার নিয়ন্ত্রণসহ ১০টি সূচকে সন্তোষজনক অগ্রগতি সাধন করেছে। 
২০১৪ সাল থেকে দেশে ১৪ হাজারের বেশি কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করা হয়েছে। যার ফলে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীর সেবা নেওয়ার হার বেড়েছে ৪২ শতাংশের বেশি। মানুষের মধ্যে বিভিন্ন প্রতিষেধক টিকা নেওয়ার প্রবণতাও বেড়েছে। এটি এখন ৮৬ শতাংশে এসে দাঁড়িয়েছে। ইপিআই কর্মসূচির মৌলিক টিকা গ্রহণের হার বর্তমানে ৮৮ শতাংশ। তবে দেশে আরও কিছু গ্রামাঞ্চল, পার্বত্য এলাকা রয়েছে যেসব জায়গায় কমিউনিটি ক্লিনিক সেবা পৌঁছানো দরকার। যেসব কমিউনিটি ক্লিনিক রয়েছে সেগুলোর আরও সংস্কারও প্রয়োজন। নতুন চিকিৎসাসামগ্রী এবং দক্ষ স্বাস্থ্যকর্মীও প্রয়োজন আছে। জাতিসংঘসহ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার কাছে প্রধানমন্ত্রীর আহ্বানে যদি ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায় এবং সেবার মান বৃদ্ধিতে পৃষ্ঠপোষকতা করে, তাহলে সামগ্রিক চিকিৎসা সেবার মান বৃদ্ধি পাবে। দেশ স্বাস্থ্য খাতে আরও উন্নতির দিকে এগিয়ে যাবে। কমে আসবে বিভিন্ন রোগের স্বাস্থ্য ঝুঁকি এবং বাড়বে দেশের মানুষের গড় আয়ু।

×