
ছবি: সংগৃহীত
২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ডলার তার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় পতনের রেকর্ড গড়েছে। ১৯৭৩ সালের পর প্রথমবারের মতো ডলার ১০.৮ শতাংশ কমে গেছে ডলার সূচকে। অর্থনীতিবিদরা এই পতনের পেছনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অপরিকল্পিত অর্থনৈতিক নীতিকে দায়ী করছেন।
ট্রাম্প প্রশাসনের আরোপিত “লিবারেশন ডে” ট্যারিফ যুদ্ধ, ফেডারেল রিজার্ভের স্বাধীকার নিয়ে বিতর্ক এবং “ওয়ান বিগ বিউটিফুল বিল”-এর মতো বিপুল ব্যয়ের পরিকল্পনা বিশ্ব বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ভয় তৈরি করেছে। ৫ ট্রিলিয়ন ডলার পর্যন্ত মূলধন বাজার থেকে উধাও হয়েছে মাত্র তিন দিনে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বিল যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় ঋণকে ৩.৩ ট্রিলিয়ন ডলার বাড়িয়ে ৩৬.২ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছে দেবে। বার্ষিক ঘাটতি এখন ৬.৯ শতাংশ GDP ছুঁয়েছে যা ২০২৪ সালে ছিল ৬.৪ শতাংশ।
ব্যাংক জে সাফরা সারাসিন-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ কার্সটেন জুনিয়াস বলেন, “বিনিয়োগকারীরা বুঝতে পারছে তারা আমেরিকান সম্পদের উপর খুব বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে।” বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে মার্কিন শেয়ার বাজারে ১৯ ট্রিলিয়ন, ট্রেজারিতে ৭ ট্রিলিয়ন এবং কর্পোরেট বন্ডে ৫ ট্রিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করে রেখেছেন।
ইতিমধ্যেই গোল্ডের দাম পৌঁছেছে নতুন রেকর্ডে, কারণ বিশ্বব্যাপী কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলো ডলারের পরিবর্তে গোল্ডে রিজার্ভ রাখছে।
বিশ্ব অর্থনীতির প্রতিক্রিয়া ও মুদ্রা যুদ্ধ
ইউরো, ইয়েন, পাউন্ড ডলারের বিপরীতে শক্তিশালী হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য দুর্বল ডলার যেমন স্বস্তির বার্তা আনছে, তেমনি পণ্যদ্রব্য রপ্তানিকারকদের জন্য এটি উপকারি।
বিশেষত পাকিস্তান, ঘানা ও জাম্বিয়ার মতো দেশের ডলারে নেওয়া ঋণ পরিশোধে সুবিধা হবে। আবার ইন্দোনেশিয়া, নাইজেরিয়া ও চিলির মতো দেশগুলো পণ্যদ্রব্য রপ্তানি করে আরও আয় করতে পারবে।
বাজার বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন এ বছর ফেডারেল রিজার্ভ অন্তত দুই থেকে তিনবার সুদের হার কমাবে, যার ফলে ডলারের মান আরও কমে যেতে পারে।
এই মুহূর্তে আমেরিকার জন্য প্রশ্ন একটাই: “বিশ্বের রিজার্ভ মুদ্রার আসনে ডলার কি টিকে থাকতে পারবে?”
মুমু ২