
ছবি: সংগৃহীত
উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন সম্প্রতি দেশটির পূর্ব উপকূলে উদ্বোধন করলেন একটি বিশাল সমুদ্রসৈকত রিসোর্ট—"ওনসান-কালমা কোস্টাল ট্যুরিস্ট জোন"। রিসোর্টটি তৈরি হয়েছে ২০ হাজার অতিথির আবাসনের জন্য, রয়েছে ওয়াটার পার্ক, হাই-রাইজ হোটেল ও আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিকটবর্তী ট্রেন স্টেশন। অথচ এই বিলাসবহুল আয়োজন একটি দেশে যেখানে ক্ষুধা ও মানবাধিকার লঙ্ঘন দিন দিন বাড়ছে।
রিসোর্টে আপাতত শুধুমাত্র উত্তর কোরিয়ান নাগরিকদের প্রবেশাধিকার রয়েছে, তবে ভবিষ্যতে রুশ পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
ওনসান শহরকে পর্যটন ও অর্থনৈতিক কেন্দ্র রূপে গড়ে তোলার স্বপ্ন নিয়ে ২০১৩ সালে কিম এই প্রকল্প ঘোষণা করেন। তবে কোভিড মহামারি ও আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে তা বহুবার পিছিয়ে যায়। অবশেষে ২০২৫ সালের ২৪ জুন অবশেষে রিসোর্টটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন হয়।
রিসোর্টের পাশে নতুন কালমা ট্রেন স্টেশন তৈরি করা হয়েছে পর্যটকদের সুবিধার্থে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরও রয়েছে কাছেই। এই অবকাঠামো দেখে ধারণা করা হচ্ছে, বিদেশি মুদ্রা অর্জনের লক্ষ্যে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক পর্যটকদের জন্যও রিসোর্ট খোলা হতে পারে।
শকিম জং উন এই প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন সাতবার। উদ্বোধনের দিন তার স্ত্রী রি সল জু ও কন্যা কিম জু এ-কে নিয়ে উপস্থিত ছিলেন—যা উত্তর কোরিয়ার রাজনৈতিক উত্তরাধিকারের ইঙ্গিত দেয়।
পর্যটকদের ওপর নজরদারি
উত্তর কোরিয়ায় সব পর্যটন কার্যক্রম সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে চলে। আগত পর্যটকদের ছবি তোলার বিধিনিষেধ, প্রাথমিক নাচের প্রদর্শনী দেখানো, ও প্রতি মুহূর্তে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়।
কার জন্য এই রিসোর্ট?
দক্ষিণ কোরিয়ার বিশেষজ্ঞ লিম ইওল-চুলের মতে, রিসোর্টটি মূলত পিয়ংইয়ংয়ের প্রভাবশালী অভিজাত শ্রেণির জন্য। এটি কিমের তথাকথিত “সোশালিস্ট সভ্যতা”র প্রতীক।
জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ২০২৪ সালে বলেছিলেন, “উত্তর কোরিয়া একটি দমবন্ধ, আশাহীন পরিবেশ যেখানে প্রতিদিনের জীবন টিকে থাকার সংগ্রাম।” এই রিসোর্ট সেই বাস্তবতার উল্টো চিত্র তুলে ধরে।
মুমু ২