ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

গ্যাস সংকট

প্রকাশিত: ২০:১৫, ২৬ মার্চ ২০২৩

গ্যাস সংকট

.

দৈনন্দিন নাগরিক জীবনে গ্যাস সংকটের বিষয়টি সুবিদিত- বিশেষ করে ঢাকা নারায়ণগঞ্জে। শীতে এই সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে। তিতাস কর্তৃপক্ষের দাবি, সময় ঘনীভূত হওয়ায় গ্যাসের চাপ স্তর নেমে যায়। তাই সরবরাহে বিঘ্ন ঘটে। দুঃখজনক হলো, শীতকাল অতিবাহিত হলেও গ্যাসের সংকট কাটছে না। রমজানে তা আরও তীব্র হয়েছে। অবশ্য গ্যাস বিদ্যুৎ সংকট শুরু হয়েছে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের পর থেকেই। সময় আন্তর্জাতিক বাজারে তেল-গ্যাসের দাম বেড়ে যায় হু হু করে। স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনাও বাংলাদেশসহ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। বাধ্য হয়ে দেশে বিদ্যুৎ সমস্যা নিরসনে করতে হয় লোডশেডিং। গ্যাস সংকটের কারণে বিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ শিল্পকারখানাগুলোতে গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হয়নি। এর পাশাপাশি বাসাবাড়িতেও চলছে গ্যাস সংকট।

ঢাকা নারায়ণগঞ্জে অনেক স্থানে গ্যাসের চাপ সরবরাহ অনেক সময়ই স্বাভাবিক থাকে না। দিনরাত ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অন্তত - ঘণ্টা বন্ধ থাকে গ্যাস সরবরাহ। অথচ গ্রাহকদের বর্ধিত হারে গ্যাস বিল পরিশোধ করতে হয় প্রতি মাসে। সিলিন্ডার গ্যাসের দামও চড়া- প্রায় লাগামহীন। বাড়তি উপদ্রব হিসেবে রয়েছে যখন-তখন তিতাসের পাইপলাইন রক্ষণাবেক্ষণের নামে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করা। পেট্রোবাংলা সিদ্ধান্ত নিয়েছে রমজানে বিদ্যুৎ সরবরাহ শিল্প কারখানা সচল রাখতে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে গ্যাসকে। সেক্ষেত্রে আবাসিকে শাটডাউন ছাড়া বিকল্প নেই। দৈনিক প্রায় ৪০০ ঘনফুট গ্যাসের বিপরীতে বর্তমানে কমবেশি ২৭০ ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম কমায় কয়েক মাস পর স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার সিদ্ধান্ত  নেওয়া হয়েছে। এই চালান দেশে না আসা পর্যন্ত গ্যাস সংকট খুব সহসাই কাটবে বলে মনে হয় না।

সম্প্রতি বেড়েছে গ্যাসের দামও। ভোক্তা পর্যায়ে গ্যাসের দাম বেড়েছে ২২ দশমিক ৭৮ শতাংশ। বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত গ্যাস সংযোগের দাম বাড়ানোর ফলে এর চাপ গিয়ে পড়ছে দৈনন্দিন আহার্য তালিকায়।  ইতোমধ্যে সব জিনিসের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। যে বা যারা বাসাবাড়িতে প্রিপেইড মিটার ব্যবহার করেন তাদের প্রতি মাসে বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে প্রায় ৪৩ শতাংশ। গ্যাসের দাম বৃদ্ধির এই সিদ্ধান্ত যেন মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা। পাশাপাশি রয়েছে গ্যাস সংকটও। তিতাস গ্যাস কোম্পানি বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে গ্যাসের অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে চলেছে। সিস্টেম লস কমলেও গ্যাস সরবরাহে সাশ্রয়ী হওয়া যেত কিছুটা হলেও। এর পাশাপাশি নতুন নতুন গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার উত্তোলনে বাপেক্সকে আরও তৎপর উদ্যোগী হতে হবে। বঙ্গোপসাগরের সুবিস্তৃত উপকূলে সমুদ্র তলদেশে তেল-গ্যাস-খনিজসম্পদ আহরণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতায় জরুরি ভিত্তিতে তৎপরতা চালানোর বিকল্প নেই।

×