ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২

এনবিআর সরকারের আস্থা হারিয়েছে : উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান

প্রকাশিত: ১৩:১৯, ১৩ জুলাই ২০২৫

এনবিআর সরকারের আস্থা হারিয়েছে : উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান

ছবি: সংগৃহীত

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ, সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তারা সরকারের আস্থা হারিয়েছেন।

শনিবার এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, "এনবিআরের কর্মকর্তারা এখন এমন আচরণ করেছেন, যাতে সরকারের আস্থা চির ধরেছে। এখন তাদেরই সেই আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে, নিজেদের আচরণ এবং রাজস্ব আদায়ের মাধ্যমে।"

 

 

তিনি বলেন, রাজস্ব আদায় বাড়লে বোঝা যাবে এনবিআরের কর্মীরা আস্থা ফেরানোর চেষ্টা করছেন। কিন্তু আস্থা ফিরিয়ে আনা কেবল কথায় নয়, হতে হবে কার্যকর পদক্ষেপের মাধ্যমে।

ড. ফাওজুল কবির খান বলেন, “এখানে অভয় দেওয়ার কিছু নেই। এনবিআর কর্মকর্তারা তো শিশু না যে তাদের বারবার আশ্বস্ত করতে হবে। দুই মাস ধরে চলমান আন্দোলন চললেও কেউ আগে ব্যবস্থা নেয়নি।” তিনি এনবিআর কর্মকর্তাদের সরাসরি প্রশ্ন করেন, “যে কর্মকর্তা নিজের সিদ্ধান্তে কাস্টম হাউজ বন্ধ করে সভা করতে চলে যান, তিনি কি বুঝতে পারেন না, এর ফলে আমদানি-রপ্তানি এবং ব্যবসায়ীদের কত কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে?”

তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “আপনার রাজস্ব তো পরে আসবে, আগে তো জানতে হবে রপ্তানিকারক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন কি না। এমন পরিস্থিতি তো খাতুনগঞ্জের কোনো আরত নয় যে ইচ্ছা হলেই তালা দিয়ে চলে আসবেন।”

 

উপদেষ্টা বলেন, এনবিআরের কর্মকর্তারা নিজেদের আচরণ দিয়ে সরকারের আস্থা অর্জন করবেন, এটাই প্রত্যাশা। তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও কর্মকর্তা, এমনকি এনবিআরের চেয়ারম্যান পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার বৈঠক করেছেন তারা।
তবে এনবিআর কর্মকর্তারা দাবি প্রকাশের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল আচরণ করেননি বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

 “তাদের দাবিগুলো একেবারে অযৌক্তিক নয়। কিন্তু যেভাবে তারা তা প্রকাশ করেছেন, তাতে ক্ষতি হয়েছে অর্থনীতি, আমদানি-রপ্তানি ও ব্যবসা বাণিজ্যের।”

তিনি আরও বলেন, “এটা কোনো ব্যক্তিগত প্রতিষ্ঠান নয় যে ইচ্ছেমতো কাজ করবেন। সরকারের কাজে জবাবদিহি থাকতেই হবে। এনবিআরের কর্মকাণ্ডের কারণে কন্টেইনার জট তৈরি হয়েছে, রপ্তানি থেমে গেছে এবং এখন রেলের লোকোমোটিভ সংকটেও নতুন করে জট তৈরি হচ্ছে।”

 

 

সরকারি এই উপদেষ্টা জানান, দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। “আপনারা নিজেরাই লিখেছেন, বাজারে ডলারের দাম কমছে, বিনিময় হার স্থিতিশীল হচ্ছে। রিজার্ভের যে রিপোর্ট আপনারা দেখেন, সেটা কিন্তু ছয় মাস আগের ডেটা নিয়ে তৈরি হয়।”

তিনি বলেন, “অর্থনীতি এখনও পুরোপুরি কাঙ্ক্ষিত জায়গায় পৌঁছায়নি, তবে আমরা যেসব ভয় করছিলাম, ব্যাংক্রাপসি, মন্দা, অর্থনীতির স্থবিরতা, তা পেছনে ফেলে এসেছি।”
 

ছামিয়া

×