
ছবি:সংগৃহীত
জরুরি অবস্থা যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয়, সেই লক্ষ্যে আইন প্রণয়নের জন্য ঐকমত্য তৈরি করতে কমিশনকে বলেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রবিবার, রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় ধাপের সংলাপের ১২তম দিনের আলোচনা শেষে এ কথা জানান এনসিপির কেন্দ্রীয় সদস্য জাবেদ রাসিম।
তিনি বলেন, “আমরা জরুরি অবস্থাকে তিনটি ভাগে ভাগ করার প্রস্তাব দিয়েছিলাম: যুদ্ধ, প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা মহামারি, এবং অভ্যন্তরীণ গোলযোগের পরিস্থিতি। অভ্যন্তরীণ গোলযোগের পরিবর্তে, যদি স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব বা ভৌগোলিক অখণ্ডতার প্রশ্নে জরুরি অবস্থা জারির প্রয়োজন হয়, তাহলে সরকার সে ক্ষেত্রে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করতে পারবে।”
রাসিম আরও বলেন, “আগে যেভাবে রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রীর অনুস্বাক্ষরে জরুরি অবস্থা জারি করতে পারতেন, তা এখন মন্ত্রীসভায় নিয়ে আসা হয়েছে, যার মাধ্যমে এর পরিধি কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। এনসিপি এই প্রস্তাবের সাথে একমত।”
তিনি যোগ করেন, “যেহেতু জরুরি অবস্থা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এর ক্ষেত্রে সরকারকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে হয়, তাই এটি এক্সিকিউটিভের হাতে থাকাই বাঞ্ছনীয়। আমরা বিরোধী দলের সিদ্ধান্ত নিয়েও কথা বলেছি এবং আমরা বলেছি, বিরোধী দলের প্রধান এই বৈঠকে উপস্থিত থাকতে পারবেন এবং তাঁর মতামত প্রদান করতে পারবেন। জরুরি অবস্থা যেন রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয়, সেই বিষয়ে সকল রাজনৈতিক দল একমত হয়েছে।”
প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা যদি জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন, তাহলে এর প্রভাব কী হতে পারে, এমন প্রশ্নের উত্তরে রাসিম বলেন, “যদি বিরোধী দলীয় নেতা জরুরি অবস্থা ঘোষণার বৈঠক থেকে বের হয়ে এর বিরুদ্ধে বক্তব্য দেন, তাহলে এর প্রভাব পড়বে এবং প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা আরও স্পষ্ট হবে।”
প্রধান বিচারপতি নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে জাবেদ রাসিম বলেন, “প্রধান বিচারপতি নিয়োগের ক্ষেত্রে, কর্মে প্রবীণতম আপিল বিভাগের বিচারপতিকেই রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করবেন। তবে বৈঠকে কর্মে প্রবীণতম দুইজন না একজন তা নিয়ে মতপার্থক্য দেখা দেয়। পরে কমিশন সিদ্ধান্ত নেয় যে, কর্মে প্রবীণতমকেই প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ করা হবে, তবে কোনো রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় গিয়ে দুইজনের মধ্যে একজনকে নির্বাচিত করতে চাইলে, তা সংবিধান সংশোধন করে করা যেতে পারে।”
এনসিপি তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ ক্ষমতা হস্তান্তরের রূপরেখা তুলে ধরেছে জানিয়ে রাসিম বলেন, “তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে বিচারাঙ্গনের সঙ্গে যুক্ত করা এবং রাজনীতিকীকরণ করা আমরা পুরোপুরি বিরোধী। আমরা বিচারাঙ্গনকে রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে চাই না।”
মারিয়া