
ছবি: জনকণ্ঠ
খাগড়াছড়ি জেলার মহালছড়ি উপজেলার সবুজ পাহাড়-জঙ্গলের বুকে প্রবাহিত এক নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের নাম "ধুমনি ঘাট"। স্থানীয়দের কাছে এটি এক অপার বিস্ময় ও তীর্থস্থান। তবে দিন দিন পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে এই মনোরম দর্শনীয় স্থানটি।
ধুমনি ঘাটের সৌন্দর্য এক কথায় বর্ণনাতীত। পাহাড়ি ঝর্ণার স্বচ্ছ জলে গড়িয়ে চলা স্রোতের শব্দে মুগ্ধ হয়ে যায় মন প্রাণ। বিশাল পাথরের উপর দিয়ে গড়িয়ে যাওয়া পানির ধারা এখানে এক ভিন্নরকম আরাম ও প্রশান্তি দেয়। স্থানটিতে দর্শনার্থী ও পূর্ণার্থীরা দল বেঁধে ছবি তুলতে, খেলাধুলা করতে কিংবা নিছক প্রাকৃতিক শীতল জলে সময় কাটাতে প্রায়ই ভিড় জমায়। নিশ্চুপ,নির্জন এই স্থানটির আশপাশ জুড়ে রয়েছে নানা জাতের নাম না জানা বুনো ফুল যে ফুলের মায়ায় পড়ে যাবেন নিমিশেই।
এছাড়াও ঘন সবুজ বনাঞ্চল,হাজার বছরের ছোট বড় পাথর,যা জায়গাটিকে আরও প্রাণবন্ত করে তোলেছে। বর্ষা মৌসুমে ঝর্ণাটির রূপ হয় সবচেয়ে মনোমুগ্ধকর এবং ভয়ংকর। জলধারার গর্জন, চারপাশে পাখির কিচিরমিচির, আর ঠান্ডা বাতাস মিলিয়ে যেন এক স্বর্গীয় পরিবেশ তৈরি হয়।
ধুমনি ঘাট শুধু একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের স্থান নয়, এটি হতে পারে মহালছড়ির পর্যটন উন্নয়নের একটি বড় মাধ্যম। এখানে যদি পর্যাপ্ত অবকাঠামো, নিরাপত্তা ও প্রচার-প্রচারণার ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে এটি স্থানীয় অর্থনীতিতেও বড় ধরনের ভূমিকা রাখতে পারে। স্থানীয়দের উদ্যোগ, সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা এবং পরিবেশবান্ধব পর্যটন পরিকল্পনার মাধ্যমে ধুমনি ঘাট হতে পারে খাগড়াছড়ি জেলার অন্যতম আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।
ঘুরতে আসা মোঃ সাব্বির বলেন বলেন, এই স্থানের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এর নীরবতা ও প্রশান্তিময় পরিবেশ। সারা বছরজুড়েই এখানে এক প্রাকৃতিক ছিমছাম নীরবতা বিরাজ করে। প্রকৃতির সঙ্গে মিশে যাওয়া এমন পরিবেশে কয়েক ঘণ্টা কাটিয়ে দিলে যেকোনো মানুষ নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পেতে পারেন।
এছাড়াও সৌম্য মজুমদার বলেন, ধুমনি ঘাট শুধু একটি প্রাকৃতিক দর্শনীয় স্থান নয়, এটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। এখানেই রয়েছে একটি শিব মন্দির, যেখানে হিন্দু সম্প্রদায়ের ভক্তরা পূজা-অর্চনা করেন। প্রতিবছর বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠানেও ভক্তদের ভিড় লক্ষ করা যায়। শান্ত পরিবেশ আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্য মিলে এই স্থানটিকে ধর্মীয় চর্চার জন্য আদর্শ করে তুলেছে।
কিভাবে আসবেনঃ ঢাকা বা চট্টগ্রাম হয়ে আসলে নামতে হবে গুইমারা উপজেলার জালিয়াপাড়া মোড়ে সেখান থেকে সিএনজি,মাহিন্দ্রা বা বাইকে ১০০ টাকা ভাড়া পৌচ্ছাতে পারেন সিন্দুকছড়ি আর্মি ক্যাম্পের একটু সামনে সেখানেই সাইনবোর্ড দেখে নামতে হবে পাহাড় থেকে নিচে। এছাড়াও রাঙ্গামাটি হয়ে বা খাগড়াছড়ি সদর থেকে মহালছড়ি ২৪ মাইল এলাকায় এসে সেখান থেকে যাওয়া যাবে দর্শনীয় এই স্থানে। তবে সেখানে থাকার কোন হোটেল বা কটেজ নেই। তাই সূর্য ডুবার আগেই ফিরতে হবে জেলা সদরে।
ধুমনী ঘাট যেমন সৌন্দযের লীলাভূমি তেমন রয়েছে তার ভ'য়'ক'রতা। একটু অ-সতকর্তা আপনাকে যে কোন বড় দূর্ঘটনার সম্মুখীন করে দিবে। পর্যটকদের তাই প্রয়োজন বাড়তি সতকর্তা ও সচেতনতা। পাথরের পিচ্ছিলতা, বিষধর কীটপতঙ্গের বিষয়ে থাকতে হবে সর্বদা সজাগ।
শহীদ