
ছবি: জনকণ্ঠ
চাঁদপুর সদর উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক মো. নূরুল ইসলাম (৪৫) নিজের বাড়ির আঙ্গিনায় বস্তায় আদা চাষ করে সফল হয়েছেন।
কৃষি অফিসের পরামর্শ ও প্রদর্শন প্লট দেখে উৎসাহিত হয়ে তিনি প্রথমবারের মতো এই চাষ শুরু করেন।
বস্তা আদা চাষে অতিরিক্ত জমির প্রয়োজন হয় না, তাই বাড়ির আশপাশ, পুকুরপাড়, ছায়াযুক্ত স্থান এবং পতিত জায়গায় আদা ফলাতে পারছেন কৃষকরা।
খরচ কম এবং প্রাপ্তি বেশি হওয়ায় কৃষকেরা এই পদ্ধতিকে সাদরে গ্রহণ করছেন। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এই বছর উপজেলায় ৩ হাজার ২৫০ টি বস্তায় আদা চাষ হলেও এই বছর তা বেড়ে ৯ হাজার ১৮০টি হাজারে পৌঁছেছে।
সরেজমিনে উপজেলার বিষ্ণুপুর ইউনিয়নের বিষ্ণুপুর গ্রামের কৃষক নুরুল ইসলামের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির খালি জায়গায় এবং পুকুরপাড়ের দুই ধারে সারিবদ্ধভাবে রাখা হয়েছে বস্তা। এ সব বস্তায় লাগানো হয়েছে আদা। এসব বস্তার আদা গাছের পাতা সোনালি রং ধারণ করায় বোঝা যাচ্ছে, এগুলো উত্তোলনের সময় হয়ে এসেছে।
কৃষক নুরুল ইসলাম বলেন, "উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার পরামর্শে শুরুতে ৩০ বস্তায় আদা চাষ শুরু করি। বর্তমানে প্রতি বস্তায় এক কেজি আদা উৎপন্ন হয়েছে।"
তিনি আরও বলেন,"এবার যদি ভালো দাম পাওয়া যায়, তাহলে আগামীতে বস্তায় আদা চাষ ব্যাপক পরিসরে করার পরিকল্পনা রয়েছে।"
কৃষক নূরুল ইসলাম আরও জানান, "আমি আগে কখনও আদা চাষ করিনি। কিন্তু চাঁদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিস থেকে বস্তায় আদা চাষের বিষয়ে বস্তা প্রশিক্ষণ ও বীজ পাই। তারপর ৩০টি বস্তায় চাষ করি। প্রতিটি বস্তায় প্রায় ১০০-২০০ গ্রাম করে আদার বীজ দেই। ২ মাসের মাথায় চারা বড় হয়ে উঠছে, আশা করি ভালো ফলন হবে।"
তিনি আরও বলেন, "এই চাষে খরচ খুব কম। শুধু বস্তা, মাটি, গোবর সার, কিছু খড় ও বীজ লাগছে। জমি না থাকলেও বাড়ির আঙ্গিনায় বা ছাদে এই চাষ করা সম্ভব।"
চাঁদপুর সদর উপজেলার উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. মনোয়ার হোসেন বলেন, স্বল্প জমি বা শহরের বাড়িতে যারা কৃষিকাজ করতে চান, তাদের জন্যে বস্তায় আদা চাষ একটি দারুণ পদ্ধতি। আমরা এই চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছি। বস্তায় পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা রাখলে রোগবালাই কম হয় এবং ফলন ভালো হয়।
তিনি আরও বলেন, "প্রদর্শনী প্লট দেখে এলাকার আরও ৮-১০ জন কৃষক আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। আগামী মৌসুমে আরও বড়ো পরিসরে এই চাষ হবে বলে আমরা আশা করছি। এই উদ্ভাবনী পদ্ধতি এখন গ্রামের গণ্ডি ছাড়িয়ে শহরাঞ্চলের ছাদ ও বারান্দায় কৃষি চর্চার দ্বার খুলে দিয়েছে। এই পদ্ধতিতে আদা চাষে খরচ কম তাই লাভ বেশি।"
Mily