ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

ডিসি সম্মেলন ও ২৫ দফা নির্দেশনা

ড. মিহির কুমার রায়

প্রকাশিত: ২৩:১০, ২৯ জানুয়ারি ২০২৩

ডিসি সম্মেলন ও ২৫ দফা নির্দেশনা

.

বিগত ২৪ জানুয়ারি, ২০২৩ মঙ্গলবার সকালে শাপলা হলে তিন দিনব্যাপী বার্ষিক জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৩ উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেবার মনোভাব নিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথে অবিচল থেকে যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষ উপকৃত হয়, তথা উন্নয়নের দিকে যেন এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলা প্রশাসকদের খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেওয়া এবং বিদু্যুৎ ও জ্বালানি সাশ্রয়ের ব্যবস্থা গ্রহণসহ ২৫টি নির্দেশনা বাস্তবায়নের পাশাপাশি শুধু প্রয়োজনীয় প্রকল্পই গ্রহণ করতে বলেছেন, যেগুলো জরুরী। সরকার প্রধান বলেন, মানুষের কল্যাণের কথা বিবেচনা করে দেশের কৃষি উৎপাদন যাতে বাড়ে, সেজন্য যা খরচ লাগে আমরা করব। অন্য দেশ যা করেনি, বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছি, যা একটি উদাহরণ। তিনি বলেন, কৃচ্ছ্রসাধন করতে হবে, অপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি কেনাকাটা পরিহার করতে হবে। আর এভাবে যদি আমরা চলতে পারি, তাহলে একটু ধীরগতিতে হলেও উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে পারব। ডিসিদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর ২৫ দফা নির্দেশনার সারাংশ হলো খাদ্য উৎপাদন, নিজেরা বিদ্যুৎ ও জ্বালানি ব্যবহারে সাশ্রয়ী, সেবা প্রত্যাশীদের সন্তুষ্টি অর্জন, সরকারি তহবিল ব্যবহারে কৃচ্ছ্রসাধন, এসডিজি স্থানীয়করণের আওতায় নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রাসমূহ অর্জনে তৎপরতা জোরদার, গৃহহীনদের জন্য গৃহনির্মাণ, ভূমিহীনদের কৃষি খাসজমি দেওয়া, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসমূহের পাঠদান কার্যক্রমের মানোন্নয়নে উদ্যোগী, কমিউনিটি ক্লিনিক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রসমূহ কার্যকরকরণ, শিশু-কিশোরদের শারীরিক-মানসিক বিকাশের লক্ষ্যে প্রত্যেক এলাকায় সৃজনশীল চর্চা, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও ক্রীড়া সুবিধা নিশ্চিতকরণ, জেলা ও উপজেলায় পার্ক, খেলার মাঠ প্রভৃতির সংরক্ষণ, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সর্বোচ্চ সুবিধা নিতে উচ্চ প্রযুক্তি জ্ঞানসম্পন্ন দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তোলা, সরকারি দপ্তরসমূহের ওয়েবসাইট নিয়মিত হালনাগাদকরণ, তথ্য-প্রযুক্তি ও ইন্টারনেটের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, মিথ্যা গুজব পরিহার, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা, মাদক, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দূরকরণ, বাল্যবিবাহ, ইভটিজিং, খাদ্যে ভেজাল, নকলপণ্য তৈরি পরিহারকরণ, পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে বাজার মনিটরিং কার্যক্রম জোরদারকরণ, সরকারি জমি, নদী, বনভূমি, পাহাড়, প্রাকৃতিক জলাশয় প্রভৃতি রক্ষা, নিয়মিত নদী ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে নাব্য বৃদ্ধিকরণ, বজ্রপাতপ্রবণ এলাকায় তালগাছ রোপণ, পর্যটন শিল্পের বিকাশ এবং রক্ষণাবেক্ষণ এবং জেলার সকল সরকারি দপ্তরের কার্যক্রমসমূহ যথাযথ সমন্বয়ের মাধ্যমে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ তথা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে ব্রতী হওয়া।

প্রধান অতিথির বক্তব্যের আগে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ও স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব। তার সঙ্গে রাজশাহীর বিভাগীয় কমিশনার বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষে এবং নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ও বান্দরবানের জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসকদের পক্ষে বক্তব্য দেন। অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসনের সার্বিক উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।
প্রতি বছরের মতো সর্বশেষ ২০১৯ সালের ১৪ থেকে ১৮ জুলাই জেলা প্রশাসক সম্মেলন হয়েছিল। এরপর করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির কারণে গত বছর (২০২০ ও ২০২১) জেলা প্রশাসক সম্মেলন হয়নি । গত বছর এবং এ বছর সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে। যদিও সাধারণত প্রতিবছর জুলাই মাসে ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করার রেওয়াজ রয়েছে। এ সম্মেলনে ২৪৫টি প্রস্তাব উপস্থাপন করা হয়েছে, যা গত বছর ছিল ২৪২টি। এবারের সম্মেলনে সবচেয়ে বেশি প্রস্তাব থাকছে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের ২৩, ভূমি মন্ত্রণালয় ১৫, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় ১৩, সুরক্ষাসেবা বিভাগ ১১, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ১০ এবং স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের ১০টি প্রস্তাব। জেলা প্রশাসক সম্মেলন মূলত দুটো বিষয় সামনে রেখে করা হয়। প্রথমটি হলো, সরকারের বিভিন্ন নীতি-কৌশল নির্দেশনা বাস্তবায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে মাঠপর্যায়ের জেলা প্রশাসকরা মতবিনিময় করেন এবং তাদের তরফ থেকে নির্দেশনা, অনুশাসন এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। দ্বিতীয়টি হলো, সরকারের বিভিন্ন নির্দেশনা, নীতি, অনুশাসন মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়ন করতে ডিসিরা যে সব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হন, তার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন পরিবর্তনের প্রস্তাব তারা করেন। সেই প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তিনদিনের সম্মেলনে অধিবেশন ছিল ২৬টি, ২০টি কার্য-অধিবেশন, উদ্বোধনী অধিবেশন একটি, রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও নির্দেশনা গ্রহণ, স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাত, সেনা প্রধানের সঙ্গে মতবিনিময় অন্তর্ভুক্ত ছিল। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাশাপাশি ৫৬টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থা এতে অংশ নিয়েছিল। কার্য অধিবেশনগুলোতে মন্ত্রণালয় ও বিভাগের প্রতিনিধি হিসেবে মন্ত্রী, উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, সিনিয়র সচিব ও সচিবরা উপস্থিত ছিলেন। সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনাররা লিখিতভাবে মাঠ প্রশাসনের সমস্যাগুলো নিয়ে প্রস্তাব দিয়ে থাকেন। অধিবেশনের সময় এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক কিছু বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন। এটি একটি রুটিন ওয়ার্ক হলেও এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে দেশের সার্বিক প্রশাসনিক চিত্র পাওয়া যায়। একই সঙ্গে সিভিল সার্ভিসের একজন জ্যেষ্ঠ পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ আমলা হিসেবে জেলা প্রশাসকদের মনোভাব সম্পর্কেও সরাসরি ধারণা পাওয়া যায়।
সবটা যাতে ঢাকাকেন্দ্রিক না হয়ে পড়ে, সেজন্য স্থানীয় প্রশাসনকে ক্ষমতায়ন করার বিষয়টি নিয়ে বহু বছর ধরেই আলোচনা হচ্ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়া এবং রাজনৈতিক প্রভাবসহ বিভিন্ন কারণে মাঠ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সিদ্ধান্ত নিতে চান না। প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের জন্য মাঠ প্রশাসন এখনও অনেক ক্ষেত্রে ‘কেন্দ্রের দিকে’ তাকিয়ে থাকে। এতে সাধারণ মানুষ সরকারি সেবা পেতে বিড়ম্বনা ও দীর্ঘসূত্রতার কবলে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে সরকার নির্দেশনা দিয়েছে, স্থানীয় প্রশাসন সেসব সিদ্ধান্ত নিজেরাই নিতে পারে। জেলা প্রশাসক সম্মেলনের শেষদিনে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় প্রশাসন যেসব কাজ নিজেরাই করতে পারে, সেগুলো অনেক সময় ঢাকায় পাঠিয়ে দেয় এবং নিজেদের দায়িত্ব এড়িয়ে যায়। এর ফলে প্রায় সবই হচ্ছে ঢাকাকেন্দ্রিক। এসব বিষয়ে ডিসিদের সজাগ থাকার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।
ওপরের আলোচনা থেকে এটাই প্রতিয়মান হয় যে, জেলা প্রশাসক ও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে ক্ষমতাকেন্দ্রিক যে ভারসাম্য তা অনেক ক্ষেত্রেই বিঘিœত হয়। উভয় পক্ষই তারা আরও বেশি প্রতিনিধিত্ব চান, যা ডিসিদের বক্তব্য থেকে বোঝা যায়। যেমনÑ আগের নিয়ম ছিল জেলার বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি থাকবেন জেলা প্রশাসক। কিন্তু পরবর্তীতে তা পরিবর্তন করে স্থানীয় সংসদ সদস্যকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ফলে, সংসদ সদস্যরা তাদের নির্ধারিত লোকদের যাতে নিয়োগ দেওয়া হয়, সেই প্রচেষ্টার সবটাই তিনি করে থাকেন, যার সঙ্গে স্থানীয় রাজনীতি জড়িত। ফলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, অভিভাবক, এলাকার নিরীহ লোকজন মনে করেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কমিটিতে যাতে কোনো জনপ্রতিনিধি না থাকে এবং আগের অবস্থা বজায় থাকুক। কারণ, ওই ধরনের জনপ্রতিনিধিদের থেকে মাঠপর্যায়ের এসব আমলাকে সাধারণ মানুষ পছন্দ করেন, তাদের ওপর নির্ভর করা তারা অনেকটাই মনে করেন নিরাপদ। তারই অংশ হিসেবে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করতে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ‘নিয়োগ পুল’ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে। বেসরকারি কলেজে অধ্যক্ষ ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতি রোধ করার জন্যই এই প্রস্তাব।
এবার সম্মেলনে একজন জেলা প্রশাসক সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল সিন্ডিকেট এবং পরিচালনা কমিটিতে ডিসিকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব করেছেন। জেলা পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার সার্বিক সমন্বয়ের জন্য এটা প্রয়োজন। এতে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সহায়ক হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন সময়, আন্দোলনের সময় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে ডিসি সহায়তা দিতে পারবেন। দুইÑ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, ইউনিয়ন পরিষদে নির্বাচিত প্রতিনিধি অর্থাৎ, সংসদ সদস্য থেকে শুরু করে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখতে হবে, উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণে যথাযথ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে কি-না বা বাস্তবায়নও যথাযথভাবে হচ্ছে কিনা, সেগুলো সমন্বয় করতে হবে। উন্নয়ন প্রকল্প যত্রতত্র যেন না হয়, সেদিকেও বিশেষ দৃষ্টি দিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে ডিসিদের দ্বারা এত কাজ করা সম্ভব হবে কিনা বা কতটুকু সম্ভব হবে তা বলা দুষ্কর। তিন- স্বাস্থ্য বিধি সবাই যাতে মেনে চলে, তা নিশ্চিত করার তাগিদও পেয়েছেন জেলা প্রশাসকরা। এখন প্রশ্ন দাঁড়ায়, ডিসিরা নিজ নিজ জেলায় সমন্বয়কের দায়িত্ব পালন করবেন এবং জাতিগঠনমূলক সকল দপ্তর তাদের স্ব স্ব দায়িত্ব পালন করবে। সবটাই যদি ডিসিদের দেখতে হয় তাহলে তারা নির্বাহী কাজ কখন করবেন? মাঠ প্রশাসনে তারা উপজেলাগুলোতে তদারকির সময় পাবেন তো? জেলার প্রশাসক হিসাবে গ্রামের মানুষের সঙ্গে ডিসির সংযোগ কিভাবে হবে? চার- অনেকেই বলে, ডিসিদের সরকারি এজেন্ডা বাস্তবায়নই প্রধান কাজ। যদিও তাদের বিধিবদ্ধ অনেক কাজ রয়েছে, যা তাদের চাকরি বিধিতে উল্লেখ রয়েছে। সরকার আসে সরকার যায়, প্রশাসনিক কাঠামোতে তাদের অবস্থান রাজনৈতিক বিবেচনায় প্রভাবান্বিত হওয়ার কথা নয়। কিন্তু সব নির্বাচিত সরকারই জনপ্রশাসনকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে, যা কাম্য নয়। এর ফলে সরকার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই ডিসিরা বিভিন্নভাবে দন্ডিত হন চাকরি ও পদোন্নতিতে, পাঁচ- সমালোচকরা বলেন, ডিসিরা পদায়ন পান রাজনৈতিক বিবেচনায়, মেধার মানদন্ডে নয়, যা বাংলাদেশের সব সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে একটি সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। যার ফলে এটি একটি অর্থনেতিকভাবে লাভজনক পদ হিসাবে বিবেচিত হয়ে আসছে। সেখানে নৈতিকতার বিষয়টি একটি বিবেচ্য বিষয়। নিশ্চয়ই বিসিএস (প্রশাসক) ক্যাডারের কর্মকর্তারা সিএসপি/ইপিসিএস ক্যাডারের মতো মানসম্মত হবেন না। যার একটি প্রতিফলন ঘটবে তাদের সার্বিক কার্যক্রমের ওপর। সেটাই স্বাভাবিক, যা ৫১ বছরের বাংলাদেশের একটি বাস্তব প্রতিবিম্ব। তারা না পারছেন অফিস কিংবা মাঠ প্রশাসন সামলাতে- যার সঙ্গে যুক্ত হয় জনপ্রতিনিধিদের (এমপি, উপজেলা/মিউনিসিপ্যালিটি /ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান) প্রভাব। যার ফলে প্রধানমন্ত্রীর ২৫ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কতটুকু সফল হবে, তা সময়ই বলে দেবে। তবে জাতি আশা করে, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে একটি জনবান্ধব দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন মাঠপর্যায়ে গড়ে উঠুক, যা এই সম্মেলনের মুখ্য উদ্দেশ্য। তিনদিনের এ সম্মেলন শেষে জেলার প্রশাসকগণ ফিরে গেছেন তাদের নিজ নিজ কর্মস্থলে। প্রত্যাশার বিষয় হলো, মাঠপর্যায়ের বাস্তব অবস্থা সম্পর্কে সরকারের উপলব্ধির পরিসর বাড়াতে জেলা প্রশাসকগণ অবদান রাখবেন, যা সুশাসন প্রতিষ্ঠায় জেলা প্রশাসকদের করণীয় কর্তব্য সম্পর্কে সচেতন হতে আরও সাহায্য করবে।
লেখক : গবেষক ও অর্থনীতিবিদ
সিটি ইউনিভার্সিটি, ঢাকা

 

×