
.
আমি চঞ্চল হে,
আমি সুদূরেরও পিয়াসি
বাণী আর সুরের অনবদ্য ঝঙ্কারে এ শুধু সঙ্গীত মূর্ছনাই নয়, বরং রবীন্দ্রনাথের জীবনব্যাপী বিশ্ব ভ্রমণের এক অপার সম্ভাবনাও। সেই বালক বয়স থেকে। জীবন স্মৃতিতে উল্লেখ করেছেন মাত্র বারো বছর বয়সে পিতার সঙ্গে হিমালয় যাত্রা। উপনয়ন সাঙ্গ করে। সেই যে শুরু, ঘুরে বেরিয়েছেন ভারত উপমহাদেশের দর্শনীয় অনেক স্থান। উত্তর, দক্ষিণ, পূর্ব ভারতের বিভিন্ন স্থান দেখার আগ্রহ ছিল বরাবরই। ভ্রমণের অবারিত আকাক্সক্ষায় প্রথমেই নজর দিয়েছিলেন নিজ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল দেখার অভাবনীয় বোধে। সত্যজিৎ রায়কে লিখে দিয়েছিলেন একটি চমৎকার অসামান্য কবিতার কয়েকটি লাইন-
দেখা হয়নি চক্ষু মেলিয়া
ঘর হইতে দুই পা ফেলিয়া
একটি ধানের শিষের পরে
একটি শিশির বিন্দু।
ভ্রমণবিলাসী রবীন্দ্রনাথ সেভাবে অবাক বিস্ময়ে উপলব্ধি করেছেন বিশ্ব পরিসরের অপার সম্ভাবনাকে জানাও তার জন্য খুব জরুরী। তবে চেতনায় বিশ্ব ভ্রমণের প্রভাব পড়ার আগেই মাত্র ১৭ বছর বয়সে কবির ইংল্যান্ড সফর জীবনের এক সমৃদ্ধ অধ্যায়। তাছাড়া অতি অল্প বয়সে দেশ-বিদেশ ভ্রমণ কবির সৃজন প্রতিভাকে কতখানি ভরিয়ে দিয়েছিল তাও এক অসাধারণ জীবনগাথা। পিতার সঙ্গে কবির হিমালয় যাত্রায় বোলপুরে কিছুদিন থাকা সব মিলিয়ে বালক রবির জীবনে এক নবঅধ্যায়ের দ্বার উন্মোচিত হলো। জীবনস্মৃতিতে এর মুগ্ধতা আছে, অনেক স্মৃতিচারণে তাঁকে প্রথম এই দুর্লভ অভিজ্ঞতায় আবিষ্ট হতেও দেখা যায়। পিতা মহর্ষিকে একান্ত কাছে পাওয়ার সৌভাগ্য পরবর্তী জীবনে খুব বেশি ঘটেওনি। নতুন জায়গা দর্শন, সঙ্গে পিতার নিভৃত পরম কাছে আসার স্মৃতি জীবনভর আলোড়িতও করেছে।
১৭ বছরের অস্থির, চঞ্চল এক উদীয়মান কিশোর পিতৃ আজ্ঞা শিরোধার্য করে বিলাত যাত্রার আয়োজন শুরু করলেন। তখন পিতাই কবির জীবনের অনেক কিছুর নিয়ন্ত্রক ও নির্ধারক। মহর্ষির নির্দেশে কবিকে বিলেত পাঠানোর উদ্যোগ ছিল মূলত উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে দেশে এসে কবির নতুন জীবন শুরু করা। যেমনটা করেছেন দেবেন্দ্র নাথের দ্বিতীয় সন্তান সত্যেন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিলেত থেকে ব্যারিস্টারি পাস করে তিনি হয়েছিলেন ভারতের প্রথম আইসিএস অফিসার। কিন্তু কবিকে বিলেতী সভ্যতার কিছু অংশ আয়ত্তে আনতে প্রথমেই পাঠানো হয় মেজ দাদার কর্মস্থল আহমেদাবাদে। তবে যিনি প্রতিভাদীপ্ত মননের বিশাল ঐশ্বর্য নিয়ে জীবনভর সদর্পে বিচরণ করবেন তাকে দিয়ে যে প্রচলিত কোন নিয়মই চলে না কবি সেটা বারবার প্রমাণও করেছেন। তবে ভ্রমণের এই চমৎকার অনুভব কি মাত্রায় তাকে উদ্দীপ্ত করেছিল তা ধারণার অতীত। মুম্বাইতে আন্না তড়খড় নামে এক মারাঠী তরুণী কবিচিত্তে যে কৈশোরের দোলা দিয়েছিল সেটাও জীবনব্যাপী স্মরণ চেতনায় দীপ্ত থাকে। ৮০ বছর বয়সে ‘ছেলেবেলা’তে এর শৈল্পিক মহিমা বিশদভাবে বর্ণিত আছে। স্মৃতিবিজড়িত এই লেখায় উদীয়মান কিশোরের প্রথম ভাললাগাই নয়, বরং আগত যৌবনের উচ্ছ্বাসে ভরা কবির আত্মকথনে স্পষ্ট হয়ে আছে মনের গভীরে দাগকাটা অনেক ঘটনা। আন্না কবির জীবনে প্রথম নারী যার সঙ্গে তার আগের নিকটতম নারীদের পার্থক্যও দৃশ্যমান। ইংরেজী শিক্ষায় শিক্ষিত পাশ্চাত্য চেতনায় সমর্পিত এই আন্না কবির কাছে একটি নাম চাইলেন। কবি নলিনী নামে তাকে অভিনন্দিতও করলেন। পরবর্তীতে স্ত্রী ভবতারিণীর নামও রাখলেন প্রায় সমার্থক মৃণালিনী। এরপর সুদূর বিলেত যাত্রা। মুম্বাইতে মেজ দাদার বাসায় থেকে কতখানি বিলেতী আদব-কায়দার রপ্ত করেছিলেন বলা মুশকিল। কারণ তেমন কোন বর্ণনা ইউরোপ প্রবাসী পত্র থেকে বের হয়ে আসেও না। মুম্বাইয়ের ২ মাসের স্মৃতি নিয়ে কবি যাত্রা করলেন ইউরোপে ১৮৭৮ সালের সেপ্টেম্বরে।
সুদূরের পিয়াসি কবির সেখানে বিদ্যার্জন যে কতখানি হয়েছিল সেটা উত্তরকালে পিতা মহর্ষির বুঝতে এতটুকু সময় লাগেনি। সেখানে বসে চিঠি লিখছেন দাদা জ্যোতিরিন্দ্রনাথের কাছে। যা পরবর্তীতে ‘ইউরোপ প্রবাসীর পত্র’ হিসেবে মুদ্রিত হয়। তবে জীবনীকার প্রভাত কুমার মুখোপাধ্যায় বলছেন নতুন দাদা নয় চিঠিগুলো লেখা হয়েছিল নতুন বৌঠান কাদম্বরী দেবীকে। পত্রের বর্ণনা থেকে তেমন সম্ভাবনাই উঠে আসে। বিচক্ষণ পিতা প্রতিভাবান পুত্রের বিদেশে অবস্থানের কাজকর্ম অবলোকন করে তাকে কলকাতায় ফিরে আসতে নির্দেশ দিলেন। ১৯ বছর বয়সে কবি কোন বিদ্যার্জন না করেই দেশে ফিরলেন যৌবনের পূর্ণ আবেগ নিয়ে। তবে কবির ইউরোপ ভ্রমণ তার জীবনে বিশ্ব পরিসরের অপার সম্ভাবনার যে দ্বার খুলে দিল তার মূল্যও কম কিছু নয়। পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যও পায় এক মনন সম্ভারÑ ভিন্নমাত্রার শব্দচয়নের নান্দনিক অভিগমন। গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের অভিমত কবির কথ্য ভাষায় লেখা এটাই প্রথম প্রবন্ধ সংকলন। আরও একবার বিলেত যাত্রার তোড়জোড় চলছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা বাতিল হতেও সময় লাগেনি। কিন্তু ১৯১২ সালে ভ্রমণবিলাসী কবির আবারও বিলেত গমনের প্রস্তুতি চলছে। কবির মনে প্রশ্ন জাগছে সতেরো বছর বয়সে ইংল্যান্ড গিয়েছিলেন বিদ্যা লাভের আশায়। এখন বয়স ৫০ পেরিয়ে গেছে। সুতরাং তাৎপর্য কবি নিজেই অনুমান করলেন। শান্তিনিকেতনের বিদ্যাশ্রমকে বিশ্বমানের মর্যাদায় নিতে গেলে বিদেশী জ্ঞান-বিজ্ঞানের সম্মিলন অত্যন্ত জরুরী।
আর তেমন মহৎ উদ্দেশ্যে পৃথিবী প্রদক্ষিণ করা একান্ত প্রয়োজন। সংস্কারমুক্ত চেতনায় বিশ্বকে প্রত্যক্ষ করবেন এমন আকাক্সক্ষা নিয়ে তীর্থযাত্রীর মতো ইউরোপ গমনে আগ্রহী হলেন। তাছাড়া কবির শারীরিক এক যন্ত্রণা অর্শ রোগে দীর্ঘদিন কষ্ট পাচ্ছেন। চিকিৎসা করাটাও গুরুত্বপূর্ণ কাজের অংশ ছিল। ১৯১২ সালের ২৪ মে পুত্র রথীন্দ্রনাথ, পুত্রবধূ প্রতিমাকে নিয়ে কবির মুম্বাইয়ের পথে বিলেত যাত্রা। এই ভ্রমণ তার জীবনের এক আলোকিত অধ্যায়ের উন্মোচন। ইতোমধ্যে কবি তার কিছু কবিতা ইংরেজীতে নিজেই অনুবাদ শুরু করলেন। রবীন্দ্রনাথের এবারের বিশ্ব ভ্রমণ তার জগতজোড়া খ্যাতি আনতে নির্ণায়কের ভূমিকা পালন করে। সেখানে দেখা হলো রোদেনস্টাইনের সঙ্গে। যার সঙ্গে আগেই জোড়াসাঁকো ঠাকুর পরিবারে কবির সাক্ষাত হয়েছিল। তিনি রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে উপহার পেয়েছিলেন কবির নিজের হাতে করা কয়েকটি কবিতার ইংরেজী অলঙ্করণ। রোদেনস্টাইনকে তা এতই মুগ্ধ করে যে, তিনি সেটা দিয়ে দিলেন বিশ্বমানের আর এক কবি ইয়েটসকে। আর কবি ইয়েটস? বিস্মিত আর বিমোচিত চিত্তে ইংরেজী সাহিত্যে কবির পারদর্শিতাই শুধু নয়, কবিতার মর্মে মর্মে ঐশ্বরিক যে ঐশ্বর্য তাও ইয়েটসকে এক আলোকিত বিশ্বের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দিল। পরবর্তী ঘটনাপ্রবাহ ১৯১৩ সালে কবির নোবেল প্রাপ্তি। তবে বিশ্ব ভ্রমণের যাত্রাপথের তখন মাত্র সূচনালগ্ন। টানা ১৬ মাস কবি ইউরোপ থেকে আমেরিকার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়ালেন। বিমুগ্ধ নয়নে কবিকে সাক্ষাত অবলোকন করে তারাও মুগ্ধতার স্রোতে ভেসে গেলেন। অনুভব করলেন যোগ্যতম ভারতীয় কবির হাতেই হয়ত নোবেলের মতো অনন্য সম্ভার পৌঁছেও যাবে। ইউরোপে পরিচয় হতে লাগল সেসব দেশের বিখ্যাত কবি-মহাকবিদের সঙ্গে। ভ্রমণের পরম আনন্দে যুক্ত হলো নান্দনিক চেতনার শ্রেষ্ঠ নায়কদের সাক্ষাত। শুধু লন্ডন শহর দেখেই কবির পরিতৃপ্তি এলো না, সেখানকার গ্রাম সমাজ দেখতেও তার উৎসাহ বেড়ে গেল। ১৯১২ সাল, তখন কবি আমাদের গ্রামবাংলার দুঃসহ চিত্র অবলোকন করেছেন বাংলাদেশের কতিপয় অঞ্চলে জমিদারির দায়িত্ব পেয়ে। ইংল্যান্ডের গ্রামের কৃষকদের সঙ্গে আমাদের জমিতে খেটে খাওয়া মানুষের তুলনা করে বেদনাঘন অনুভবে কষ্টও পেয়েছেন।
চার মাস ইংল্যান্ড থাকার পর সপরিবারে গেলেন আমেরিকায় ২৮ নবেম্বর ১৯১২। নিউইয়র্ক শহর থেকে সোজা ইলিনয় স্টেটের আর্বানা শহরে। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ে পুত্র রথীন্দ্রনাথ কৃষিবিদ্যার ওপর পড়াশোনা সম্পন্ন করেছেন। আর্বানা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি ছোট শহর। জনসংখ্যা দশ হাজারেরও কম। নীরব, নিশ্চুপ, কোন হট্টগোল নেই। সর্বত্র যেন শান্তির স্নিগ্ধ পরশ অনুভব করলেন কবি। সৃজনশীল মানুষ দেশ-বিদেশ যেখানেই যান শৈল্পিক মাহাত্ম্যে সব কিছুকে অবলোকন করাই তার স্বভাব এবং সহজাত ক্ষমতা। অনেক দিন থাকার সুপ্ত বাসনাও হৃদয়ে নিভৃতে নাড়া দিল। আমেরিকার অধিবাসীরা কবিকে পেয়ে উৎফুল্ল, অভিভূত। তার কাছ থেকে আশা করা হলো কিছু উপযোগী বক্তৃতামালার। কবি সেটা দিতে কার্পণ্যও করলেন না। কিছু তর্জমা করা ছিল, অবলীলায় তা প্রকাশও করে দিলেন। আর্বানা থেকে শিকাগো এলেন জানুয়ারি মাসের শেষ সময়ে। এভাবে আমেরিকার কয়েকটি জায়গা ঘুরাই শুধু নয়, বিভিন্ন স্থানে বক্তৃতা দিয়েও সবাইকে খুশি করতে হয়। ছয় মাস আমেরিকা থাকার পর পুনরায় বিলেতে ফিরলেন। ইতোমধ্যে ‘ইন্ডিয়া সোসাইটি’ থেকে গীতাঞ্জলির ইংরেজী অনুবাদ বের হয়ে গেছে। কবি স্বচক্ষে অনুধাবন করলেন বিলেতজুড়ে ‘সং অফ রিংসের’ জৌলুস। গণমাধ্যমে তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা। ভ্রমণের খুশির জোয়ারের সঙ্গে একাত্ম হয়ে গেল কবির সৃজনসম্ভারের অনন্য নন্দনতত্ত্ব। পুরনো অর্শ রোগের বেদনায় কাতর হলেন কবি। তাকে হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়ে অস্ত্রোপচার করাতে হলো। ষোল মাসের ভ্রমণ শেষে কবি কলকাতায় ফিরে এলেন।
কিছুকাল বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে কবির মন পুনরায় উৎসুক হলো বহির্বিশ্বের ডাকে। ভ্রমণের সুপ্ত নেশা আবারও তাকে পেয়ে বসল। শুধু তাই নয়, সুযোগও এসে গেল। জাপান দেখার ইচ্ছে কবির বহুদিনের। শিল্পোন্নত আধুনিক জাপান। জাপান সরকারের আমন্ত্রণে ১৯১৬ সালের ৩ মে কলকাতা থেকে জাপানী জাহাজে কবি তার ভ্রমণ যাত্রা শুরু করলেন। ৭ মে-২৫ বৈশাখ কবির জন্মদিনে জাহাজ রেঙ্গুনে পৌঁছাল। শুধু তাই নয়, যথাযথ সম্মান ও আনন্দের মধ্যে কবিকে বরণ করে নিল রেঙ্গুন। কলকাতা ছাড়ার ২৬ দিন পর জাহাজ ২৯ মে জাপানের কোবে বন্দরে ভিড়ল। টোকিও মহানগরীতে আতিথ্য নিলেন এক বিখ্যাত শিল্পীর বাড়িতে।
সেখানেও বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন, বিশ্ববিদ্যালয়ে বক্তৃতা দেয়া সবই পরিকল্পনা অনুযায়ী চলে। জাপানে ৩ মাস অবস্থানের পর আবারও আমেরিকা যাত্রা। শুধু কি ভ্রমণ? বক্তৃতার পর বক্তৃতামালায় সংশ্লিষ্ট মানুষকে বিমোহিত করে দেয়া ভ্রমণপ্রিয় রবীন্দ্রনাথকে নতুন আলোয় উদ্ভাসিত করল। স্বল্প পরিসরে রবীন্দ্রনাথের বিশাল ভ্রমণবৃত্তান্ত উল্লেখ করা অসম্ভব।
প্রশান্ত মহাসাগর থেকে আটলান্টিক মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভ্রমণ যাত্রা রবীন্দ্রনাথের জীবনের সমৃদ্ধ ভুবন। আরও কত দেশ দেখেছেনÑ জার্মান, প্যারিস, রাশিয়া, সুইজারল্যান্ড, আর্জেন্টিনাসহ বহু দেশ ভ্রমণ করা কবির সব সময় মনে হতো নিজ দেশের হতভাগ্য জনগোষ্ঠীর কথা। আমরা জানি প্যারিসে কবির চিত্র প্রদর্শন সে সময়ের এক আলোড়িত ও বহুল আলোচিত বিষয়। আর আর্জেন্টিনায় বিখ্যাত ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোর সঙ্গে কবির ২ মাসের ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য শুধু তার জীবনেই নয়, ওকাম্পোর হৃদয়েও এনে দিয়েছিল এক অমৃতের সন্ধান। বিশেষ করে আঁদ্রে জিতের ‘গীতাঞ্জলি’র ফরাসি অনুবাদ ওকাম্পোর ভাঙ্গা-গড়ার জীবনে কতখানি স্বস্তি এনে দিয়েছিল- তা রবীন্দ্রভক্ত এই নারীর লেখায় বিধৃত হয়ে আছে। আর রবীন্দ্রনাথ? ‘পুরবী’ কাব্য শুধু বিজয়ার করকমলেই নয়, বরং কাব্যলক্ষ্মীর বন্দনায় প্রতিটি ছত্র যে মাত্রায় উজ্জীবিত আর উদ্দীপ্ত হয়েছে তা সকলেরই জানা। আর ওকাম্পো তো কবিকে জানিয়েই দিলেন রবীন্দ্রনাথের আঁকিয়ে হওয়ার অপার সম্ভাবনার কথা। প্যারিসে যে চিত্র প্রদর্শনী হয়েছিল কবির তা ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোরই আয়োজনে। ওকাম্পোই যে কবির বিজয়া সেটা প্রকাশ হতেও বেশিদিন লাগেনি। ভ্রমণ যাত্রায় আইনস্টাইন, রোমাঁ রোলাঁর সঙ্গে কবির ঘনিষ্ঠতা, সান্নিধ্য বিশ্ব ইতিহাসের এক প্রগাঢ়তম বন্ধন।
লেখক : সাংবাদিক