ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩ শ্রাবণ ১৪৩২

ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পাটজাতীয় পোকামাকড় ও রোগবালাই সেমিনার

আল জুবায়ের

প্রকাশিত: ১৯:৩৮, ৭ আগস্ট ২০২৫

ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে পাটজাতীয় পোকামাকড় ও রোগবালাই সেমিনার

ছবি: জনকণ্ঠ

তারুণ্যের উৎসব ২০২৫ উপলক্ষে 'পাট ও পাট জাতীয় ফসলের পোকামাকড় এবং রোগবালাইয়ের পরিচিতি এবং দমন ব্যবস্থাপনা' বিষয়ক শীর্ষক সেমিনার অনুষ্টিত হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (৭ আগস্ট) রাজধানীর পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট ( বিজেআরআই) এর সম্মেলন কক্ষে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেমিনারে অংশগ্রহন করেন ঢাকা কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের প্রায়ই ৭০ এর অধিক শিক্ষার্থী। শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন মাওলানা মোয়াজ্জেম হোসেন।  

সেমিনারে পাটজাতীয় ফসলের পোকামাকড় এবং রোগবালাই সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়। এতে পোকামাকড় ও রোগের প্রকারভেদ, তাদের জীবচক্র, ফসলের ওপর তাদের প্রভাব এবং এদের দমন করার কার্যকর পদ্ধতিসমূহ তুলে ধরা হয়। বিশেষজ্ঞরা প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক উপায়ে কীভাবে পোকামাকড় ও রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় সে বিষয়ে জ্ঞানবৃদ্ধিমূলক উপস্থাপনা করেন। এছাড়াও, Integrated Pest Management (IPM) বা সমন্বিত পোকামাকড় নিয়ন্ত্রণ কৌশল এবং পরিবেশ বান্ধব পদ্ধতির গুরুত্ব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের সচেতন করা হয়। সেমিনারে অংশগ্রহণকারীরা কৃষি প্রয়োগে এই জ্ঞান কাজে লাগিয়ে পাট উৎপাদন বাড়াতে এবং ক্ষতির সম্ভাবনা কমাতে সক্ষম হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এই ধরনের শিক্ষামূলক কর্মসূচি দেশের কৃষিক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে পাট চাষ ও রোগ-নিয়ন্ত্রণ বিষয়ে আগ্রহ ও দক্ষতা বৃদ্ধি করতে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপক হিসেবে বিজেআরআই এর পোস্ট ম্যানেজমেন্ট বিভাগের মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম  বলেন, দিন দিন পাটের ঐতিহ্য হারিয়ে যাচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সভায় যে ছয় দফা দাবি ছিল তার মধ্যে কিন্তু এই পাট ছিল অন্যতম। এর মাধ্যমে ব্যাপক বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। এই পাট থেকে পাটকাঠি উৎপাদন হতো যা আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ। পাটের উপকারের শেষ নেই। পাঠ কম্পিউটার কালি, ব্যাগ সহ বিভিন্ন জায়গায় এর ব্যবহার রয়েছে।  তবে এটি যেন হারিয়ে না যায় সেই বিষয়ে আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে।

তরুণ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেন, তোমরাই আগামীর জাতির ভবিষ্যত। তোমরা যেহেতু বোটানির স্টুডেন্ট তোমাদের রক্ষা করাও এটার দায়িত্ব। এসময় তিনি প্লান্ট প্যাথোলজি নিয়ে এবং কিভাবে রোগ ছড়ায় তা নিয়ে আলোচনা করেন।

পলিথিনের ভয়াবহতা তুলে ধরে বিজেআরআই এর পরিচালক (কারিগরি) ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মোসলেম উদ্দিন বলেন, পলিথিন মুক্ত করতে হবে এটির ব্যবহার কমাতে হবে। এটি যেভাবে দূষণ ছড়ায় এক সময় জমিতে শুধু পলিথিনই পাওয়া যাবে। পলিথিন ব্যবহার পরিবেশে আস্তে আস্তে পৃথিবীকে ধ্বংস করে দিবে। আমরা যদি দেশকে ও দেশের পণ্যের ব্যবহার পলিথিন বাদে পাটের বিভিন্ন ব্যাগ ব্যবহার করি তাহলে এটি দেশ এবং জাতির জন্য উপকার। যদি আঁশের পণ্য  নাগরিকরা ব্যবহার না করেন তাহলে জ্ঞান অর্জনের কোন মূল্য নেই। পলিথিন ব্যবহারে পরিবেশ হুমকির মুখে পড়ছে। ফসল উৎপাদন নষ্ট হচ্ছে। এটা রক্ষা করা আমাদের দায়িত্ব, তোমরা শিক্ষার্থীরা এর ভয়াবহতা তুলে ধরবে সবার কাছে যেন সকরে সচেতন হয়। 

অনুষ্ঠানে সভাপতি হিসেবে বিজেআইআর এর মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডঃ মোঃ লুৎফর রহমানের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন জুট টেক্সটাইল পরিচালক ডঃ ফেরদৌস আরা দিলরুবা।   

অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা কলেজের পক্ষ থেকে বিজেআরআই এর মহাপরিচালকের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেন কলেজের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগের প্রধান প্রফেসর বিথিয়া সঞ্চিতা সমাদ্দার, সহযোগী অধ্যাপক নিগার পারভীন, জিল্লুর রহমান ও সুব্রত কুমার দাস এবং সহকারী অধ্যাপক মোতাকাব্বির বিল্লাহ।

শিহাব

×