
ছবিঃ সংগৃহীত
নিজের সন্তানের মতো ভালোবাসা যেসব শিশুকে, তাদের জীবন বাঁচাতে আগুনে ঝাঁপ দিয়েছিলেন মাইলস্টোন কলেজের পরিচ্ছন্নকর্মী সবুজা বেগম (সবুজা খালা)। বর্তমানে তিনি ঢাকার একটি হাসপাতালে আইসিইউতে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন — বেড নম্বর ৫-এ তাঁর চিকিৎসা চলছে।
৪৩ দিন আগেই সবুজা খালার স্বামী দীর্ঘদিন কিডনির অসুখে ভুগে মারা যান। এরপর থেকেই তিনি পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন। গত ১৬ বছর ধরে মাইলস্টোন কলেজে কর্মরত ছিলেন তিনি, ছোটদের প্লে-গ্রুপে কাজ করতেন মায়া-মমতায়। তাঁর সঙ্গী ছিলেন বিধবা মেয়ে রুমানা, যাঁকে তিনি সংসারের অভাব-অনটনের মাঝেও আগলে রেখেছেন।
ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের দিনটিতে সবুজা খালা প্রথমে গুরুতর আঘাত না পেয়েই বাইরে চলে এসেছিলেন। কিন্তু যখন দেখলেন ছোট ছোট শিশুদের আগুনের মধ্যে আটকে আছে, তিনি পিছু হটেননি — বরং দৌঁড়ে ঢুকে যান আগুনের ভেতরে। নিজের শরীর দিয়ে শিশুদের আগলে ধরে বের করে আনেন অনেককেই। এই সাহসী কাজের সময় তাঁর শরীরের বেশিরভাগ অংশই পুড়ে যায়।
আজ তিনি নিঃশব্দে ICU-তে মৃত্যুর সঙ্গে যুদ্ধ করছেন। তাঁর পরিবার এবং সহকর্মীরা জানাচ্ছেন, তিনি একজন নিঃস্বার্থ অভিভাবক ছিলেন—শুধু পরিচ্ছন্নতাকর্মী নন, ছিলেন শিক্ষার্থীদের নির্ভরতার প্রতীক।
আমরা অনেক সময় ভুলে যাই সেই আয়া, খালা, কেয়ারটেকারদের কথা — যারা নীরবে আমাদের সন্তানদের আগলে রাখেন। সবুজা খালা আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, ভালোবাসা শুধু পেশার সীমায় থেমে থাকে না। কেউ কেউ ভালোবাসার জন্য জীবন দিতেও প্রস্তুত থাকেন।
সবুজা খালার পরিবারের পক্ষ থেকে সকলের কাছে অনুরোধ জানানো হয়েছে — দয়া করে তাঁর জন্য দোয়া করুন, এবং পাশে থাকুন এই মানবিক সংকটে।
তথ্যসূত্রঃ https://www.facebook.com/share/p/16qUa3oyxA/
মারিয়া