
টেলিকম খাতে বিগত সরকারের সময় প্রণীত সব ধরনের নীতিমালা ও গাইডলাইন বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ সংক্রান্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব। শনিবার সকালে রাজধানীতে অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ ঘোষণা দেন।
টেলিকম রিপোর্টারদের সংগঠন টিআরএনবি আয়োজিত ‘টেলিযোগাযোগ নেটওয়ার্ক ও লাইসেন্সিং অবকাঠামো’ বিষয়ক সেমিনারে এই আলোচনা হয়।
বিগত সরকারের নীতির ‘রাজনৈতিক সুবিধা’
সেমিনারে ফয়েজ আহমেদ তৈয়ব বলেন, “বিগত সরকার বিভিন্ন পলিসি ও গাইডলাইনের মাধ্যমে রাজনৈতিক ব্যক্তিদের বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। আমরা সেগুলো বাতিল করে পুরো টেলিকম কাঠামো নতুনভাবে সাজাতে যাচ্ছি।”
তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগের সময় নেয়া টেলিকম লাইসেন্সিং নীতিমালা ও সাধারণ টেলিকম পলিসিগুলো আমরা স্ক্র্যাপ করছি। এগুলো আর কার্যকর থাকবে না।”
আসছে নতুন টেলিকম অ্যাক্ট
সেমিনারে জানানো হয়, নতুন জাতীয় টেলিকম পলিসি প্রণয়নের পাশাপাশি একটি টেলিকম অ্যাক্টও তৈরি করা হবে। এতে অন্তত ১০টি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ যুক্ত করা হবে, যা আগামী দিনে এ খাতে সংস্কারের ভিত্তি গড়ে দেবে।
নতুন বিনিয়োগ শর্ত নিয়ে উদ্বেগ
নতুন প্রস্তাবিত নীতিমালায় বিদেশি বিনিয়োগের হার ৮৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে, যা আইএসপিভি সভাপতি ও মোবাইল অপারেটর প্রতিনিধিদের মধ্যে আস্থাহীনতা ও উদ্বেগ তৈরি করেছে।
এক মোবাইল অপারেটর প্রতিনিধি বলেন, “নীতিমালায় কেবল নতুন লাইসেন্সের বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে, কিন্তু বিদ্যমান অপারেটরদের জন্য কী হবে, তা অস্পষ্ট। KPI পূরণ না করলে কী হবে, সেটাও স্পষ্ট নয়।”
বিনিয়োগে ধারাবাহিকতার প্রশ্ন
আইএসপিভি সভাপতি বলেন, “পরবর্তী রাজনৈতিক সরকার এ নীতিমালা মেনে চলবে কি না, তা নিয়েই আমাদের উদ্বেগ। ব্যবসায়িক কৌশল নির্ধারণে নীতির ধারাবাহিকতা গুরুত্বপূর্ণ।”
দেশীয় বিনিয়োগ সুরক্ষার দাবি
প্রযুক্তিবিদরা বলেন, বিদেশি প্রতিষ্ঠান সবসময় টেলিকম খাতে আধিপত্য করলে তা দেশের কৌশলগত স্বার্থে বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারে। তাই দেশীয় বিনিয়োগ সুরক্ষা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার দাবি জানান তাঁরা।
নীতিমালা এখনো আইনি নয়
বিটিআরসি চেয়ারম্যান বলেন, “জাতীয় টেলিকম পলিসি এখনো আইনি ডকুমেন্ট নয়। এটি সরকারের অভিপ্রায়, পরিকল্পনা ও কৌশলের প্রতিফলন মাত্র। অনুমোদনের পর গাইডলাইন তৈরি হবে, যা আইনি বাধ্যবাধকতায় পরিণত হবে।”
ভয়েস ও ইন্টারনেট সেবার মান উন্নয়নের তাগিদ
সেমিনারে বক্তারা বলেন, “গত ১৭ বছরে টেলিকম খাতে সেবা মান উন্নয়নে যে প্রটেকশন দরকার ছিল, তা দেয়া হয়নি। নতুন নীতিমালায় এই ঘাটতি পূরণ করতে হবে।”
সংক্ষেপে:
- সব পুরনো টেলিকম নীতি বাতিলের ঘোষণা
- ৮৫% বিদেশি বিনিয়োগের শর্ত নিয়ে উদ্বেগ
- নতুন টেলিকম অ্যাক্ট আসছে
- দেশীয় বিনিয়োগ সুরক্ষার আহ্বান
- ভবিষ্যৎ সরকার নীতিমালা মানবে কি না, সেই প্রশ্ন ব্যবসায়ীদের
আঁখি