
তাপপ্রবাহের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে
তাপপ্রবাহের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। দুপুরের দিকে রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে যায়। সবচেয়ে কষ্ট পাচ্ছে বৃদ্ধ ও শিশুরা। একটুখানি স্বস্তির আশায় মানুষ গাছের নিচে এবং নদী ও জলাশয়ের কাছে বসে জিরিয়ে নিচ্ছে। মাগুরা, কুড়িগ্রাম ও ঠাকুরগাঁও থেকে আমাদের নিজস্ব সংবাদদাতারা তাপপ্রবাহে মানুষের দুর্ভোগের খবর পাঠিয়েছে।
মাগুরা ॥ মাগুরায় প্রচ- তাপপ্রবাহের কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শহর ফাঁকা হয়ে যায়। প্রচ- তাপপ্রবাহের কারণে মানুষ বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে বের হচ্ছেন না। বৃদ্ধ ও শিশুরা অসুস্থ হয়ে পড়ছে। গরম থেকে বাঁচতে পথচারীরা সড়কের পাশের আখের রস ও শরবত খাচ্ছেন। ডাবের চাহিদা ও দাম বেড়েছে। প্রতিটি ডাব ১০০/ ১৫০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। শরবতের ও বরফের দোকানে এবং আইসক্রিম বিক্রি হচ্ছে প্রচুর। প্রতি গ্লাস আখের রস ৩০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। শ্রমজীবী মানুষ তাপপ্রবাহের কারণে কাজ করতে পারছে না।
ঠাকুরগাঁও ॥ গত প্রায় এক মাস ধরে তীব্র তাপপ্রবাহে ঠাকুরগাঁও ও তার আশপাশের জেলা উপজেলার মাঠ-ঘাট, মানুষ-প্রাণিকুল সব যেন ক্লান্ত, শ্রান্ত হয়ে পড়ছিল। ঠিক এমন এক সময় স্বস্তির বার্তা নিয়ে বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ বৃষ্টি নেমে এলো। দুপুর ১২টার পর থেকেই আকাশ কালো হয়ে আসে, এরপরই নামে একটানা মুষলধারে বৃষ্টি। মুহূর্তেই বদলে যায় পরিবেশের চিত্র, জুড়ায় প্রাণ শহর থেকে গ্রামান্তর।
গত এক মাস ধরে তীব্র তাপপ্রবাহ ও খরায় শুকিয়ে যাচ্ছিল গাছপালা, ফসলের মাঠ, দেখা দিয়েছিল পানিশূন্যতা। কৃষকরা হা-হুতাশ করে বারবার তাকাচ্ছিলেন আকাশের দিকে। অবশেষে বহু প্রতীক্ষার সেই বৃষ্টি নামায় যেন স্বস্তির হাসি ফুটেছে সবার মুখে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘এই বৃষ্টি এলাকার আমন চাষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কৃষকরা এখন আমন বীজতলা তৈরির জন্য প্রস্তুতি নিতে পারবেন । জমি চাষ উপযোগী হয়ে উঠবে যা কৃষকদের স্বস্তি দিয়েছে।’
শুধু কৃষিই নয়, স্বস্তি এসেছে স্বাস্থ্য বিভাগে। ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. রকিবুল আলম চয়ন বলেন, ‘অস্বস্তিকর ও অসহনীয় ভ্যাপসা গরমজনিত কারণে হিটস্ট্রোক, ডায়রিয়া, মাথাঘোরা নিয়ে প্রতিদিন হাসপাতালে অসংখ্য রোগী আসছিলেন। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা কিছুটা কমবে, তবে সবাইকে এখনো সচেতন থাকতে হবে।’