ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২১ মে ২০২৫, ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ভেঙে গেছে ভারতের আত্রাই নদীর বাঁধ, ভয়াবহ বন্যার ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

প্রকাশিত: ০০:৫২, ২১ মে ২০২৫

ভেঙে গেছে ভারতের আত্রাই নদীর বাঁধ, ভয়াবহ বন্যার ঝুঁকিতে বাংলাদেশ

ছবি: সংগৃহীত।

মাত্র চার মাস আগে নির্মিত পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটের আত্রাই নদীর বাঁধ আবারও ভেঙে পড়েছে। মঙ্গলবার (২০ মে) সকালবেলা বাঁধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ পানির চাপে ধসে পড়ে। অথচ এই বাঁধ নির্মাণে খরচ হয়েছিল প্রায় ৩০ কোটি রুপি। ঘটনার পর আত্রাই নদীপারের মানুষজন চরম আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।

আত্রাই নদী বাংলাদেশ হয়ে পশ্চিমবঙ্গের বালুরঘাটে প্রবেশ করে আবারও বাংলাদেশে ফিরে যায়। ভারতের অংশে নদীটি ‘আত্রেয়ী’ নামে পরিচিত। প্রতিবছরের বন্যা থেকে রক্ষা পেতে গত বছর নদীর পশ্চিমবঙ্গ অংশে বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করে স্থানীয় প্রশাসন। কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে নির্মাণাধীন বাঁধটি প্রথম ধসে পড়ে। প্রশাসনের তরফে চলছিল মেরামতের কাজ, কিন্তু বর্ষার আগেই ফের তা ভেঙে পড়ায় উদ্বেগ নতুন মাত্রা পেয়েছে।

সাম্প্রতিক টানা বৃষ্টিতে আত্রাই নদীর জলস্তর অনেকটাই বেড়েছে। স্থানীয়রা বলছেন, বাঁধের যে অংশে মেরামত কাজ হয়েছিল, সেখান থেকেই ধস শুরু হয়েছে। তারা আশঙ্কা করছেন, যদি দ্রুত ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, তবে পুরো বাঁধটি ধসে পড়ে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো প্লাবিত হতে পারে।

আত্রাই নদী যেহেতু বাংলাদেশে আবার প্রবেশ করে, সেহেতু ভারতীয় অংশে বাঁধ ধসে হঠাৎ পানি প্রবাহ বৃদ্ধি বাংলাদেশের নদীতেও বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

ঘটনার পরেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান দক্ষিণ দিনাজপুরের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। তিনি অভিযোগ করেন, “বাড়ি তৈরির টিএমটি রড দিয়ে বাঁধ তৈরি করা হয়েছে। এটা চরম দুর্নীতি। নেতাদের ঘুষ খাওয়ার ফলেই আজ এই বিপর্যয় ঘটেছে।” তিনি ঘটনার উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত দাবি করেন।

এর জবাবে বালুরঘাট পৌরসভার চেয়ারম্যান অশোক মিত্র বলেন, “এটি একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগ। বিজেপি দুর্নীতির অভিযোগ তোলার আগে নিজেদের দিকে তাকাক। রাম মন্দিরের ছাদ থেকে যখন জল পড়ে, তখন তো চোখ বুজে থাকে!”

এই রাজনৈতিক পাল্টাপাল্টি অভিযোগের মাঝে আত্রাই পাড়ের সাধারণ মানুষ পড়েছেন চরম দুশ্চিন্তায়। তাদের দাবি, দ্রুত বাঁধ সংস্কার এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা হোক।

স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনো পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট আশ্বাস মেলেনি। ফলে ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে। নদী পাড়ের বহু পরিবার ইতিমধ্যেই নিরাপদ স্থানে আশ্রয়ের চেষ্টা করছেন।

নুসরাত

×