রাশমিকা ও আমির হামজা
ওয়াজ মাহফিলে সম্প্রতি ভারতীয় নায়িকা রাশমিকার সৌন্দর্যের প্রশংসা করে ব্যাপক সমালোচিত ইসলামি বক্তা মুফতি আমির হামজা দেশবাসীর কাছে ক্ষমা চেয়ে বলেছেন, আমি স্বীকার করছি মানসিকভাবে আমি পুরোপুরি সুস্থ না। শারীরিক ও মানসিক কোনো দিক দিয়েই আমি ফিট না।’
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান তিনি।
ফেসবুক পোস্টে আমির হামজা বলেন, আসসালামু আলাইকুম প্রিয় তৌহিদী জনতা। আপনাদেরকে বারবার আশাহত করার জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি,ক্ষমা প্রার্থনা করছি। আপনাদেরকে কিছু কথা বলা জরুরি মনে করছি। যাতে আপনারা আমার বিষয়ে মন্তব্য করার ক্ষেত্রে ইনসাফ করতে পারেন। ঢালাওভাবে যেসব কথাবার্তা চারদিকে বলা হচ্ছে তার সবটুকুই কি সঠিক? নাকি ভিন্ন বাস্তবতা আছে? সম্প্রতি সিরিয়ার কারাগার থেকে মুক্ত বন্দিদের চিত্র আপনাদের সামনে। তারা অনেকেই নিজের নাম পর্যন্ত ভুলে গেছে। ফ্যাসিস্টের কারাগারে থাকাকালীন এমন কোনো নির্যাতন নাই যা আমার উপরে করা হয়নি। আমার ব্রেনে পর্যন্ত কারেন্ট শক দেওয়া হয়েছে ও স্লো পয়জেনিং করা হয়েছে। বাকী নির্যাতনের কথা আর না বলি।’
তিনি বলেন, ‘আমি স্বীকার করছি মানসিকভাবে আমি পুরোপুরি সুস্থ না। শারিরীক ও মানসিক কোনো দিক দিয়েই আমি ফিট না। নিজের অজান্তেই অসংলগ্ন কথাবার্তা মুখে চলে আসছে। আমার আচরণও আমার নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। এসব চিন্তা আমাকে আরো অসুস্থ করে তুলেছে। আর আমার দেওয়া বক্তব্য নিয়ে চলমান যে বিতর্ক। সেই আলোচনাটাতে শুধুমাত্র উক্ত নায়েকার আলাপটুকুই আমার ভুল হয়েছে আমি স্বীকার করছি। তবে যদি আলোচনাটি পুরোপুরি শোনেন তাহলে দেখবেন আলোচনাটি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। ভবিষ্যতে আমি আরো সতর্ক থাকার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন আপনারা বলতে পারেন আমি যেহেতু মানসিক ও শারীরিকভাবে ফিট না তাহলে এতো মাহফিল কেনো করছি? সেক্ষেত্রে আপনাকে বলবো আপনি কিছুক্ষণ আমার জায়গায় দাড়ান ভাই প্লিজ! তারপর ভাবুন। খোলামেলা আপনাদেরকে বলছি জামায়াতের কেন্দ্রীয় দায়িত্বশীল, বি এন পির কেন্দ্রীয় নেতারা, শিবিরের কেন্দ্রীয় নেতাদের কেউ যখন একটা মাহফিলের জন্য রিকুয়েষ্ট করে তখন আমার কি করার থাকতে পারে বলুন? শুধুমাত্র ভি.আই.পিদের রিকুয়েষ্ট রাখতে গেলেই সাধারণ জনতা তো বহুদূর জেলা দায়িত্বশীল ও আত্মীয়স্বজনদের রিকুয়েষ্ট রাখাও সম্ভব হয় না। অন্যদিকে ফ্যাসিস্ট পরবর্তী সময়ের অবাধ স্বাধীনতা তাফসির মাহফিল আয়োজনকে আরো ত্বরান্বিত করেছে। তার একটি প্রেসার অন্যদিকে শায়েখ মিজানুর রহমান আজহারী ভাই দেশে না থাকায় আরো একটি চাপ সাথে যুক্ত হয়েছে। সব মিলিয়ে যথাযথ শারীরিক, মানসিক ও একাডেমিক প্রস্তুতি গ্রহণ করার সুযোগ পাইনি। যার ফলেই মাঝেমধ্যে এমন ত্রুটি, ভুল আমার দ্বারা হয়ে যাচ্ছে।’
মুফতি আমির হামজা বলেন, ‘আমি আবারো বলছি আমি সুস্থ না। অন্যদিকে বাস্তবতার শিকার। যেখানে সুস্থ মানুষের পক্ষেই এতো প্রোগ্রাম, জার্নি করা অসম্ভব হয়ে যায় সেখানে আমার মত অসুস্থ ব্যক্তির বর্তমান অবস্থা কি একটু ভেবে দেখবেন। আমি আপনাদের কাছে আবারো ক্ষমা চাই এবং এই সিজনে আমার ভুলভ্রান্তি গুলো দিয়ে প্রকৃত আমাকে জাজ কইরেন না দয়া করে। আমি কথা দিচ্ছি, পরবর্তী বছরগুলোতে পরিপূর্ণ প্রস্তুতি ও আমার যথাযথ ট্রিটমেন্ট নিয়ে তাফসির মাহফিলে অংশগ্রহণ করবো, ইনশাআল্লাহ। সাথে গণহারে দাওয়াত নেওয়া বন্ধ করে দিবো।’
এম হাসান