ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৮ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২

ত্বকের সুন্দরতা ফেরাতে চান? স্ট্রেচ মার্ক কমানোর গোপন কৌশল জানুন এখনই

প্রকাশিত: ১৯:২৩, ১৭ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ১৯:২৮, ১৭ জুলাই ২০২৫

ত্বকের সুন্দরতা ফেরাতে চান? স্ট্রেচ মার্ক কমানোর গোপন কৌশল জানুন এখনই

ছবি: সংগৃহীত

স্ট্রেচ মার্ক হলো ত্বকের ফাটল বা দাগ, যা হঠাৎ করে শরীরের ওজন বাড়া বা কমার কারণে হয়। এই সময় ত্বক দ্রুত টান পড়ে, ফলে ভেতরের ত্বক ছিঁড়ে গিয়ে ফাটল তৈরি হয়। এই দাগগুলো দেখতে সরু দাগের মতো হয় এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে রঙ বদলায়।

কাদের বেশি হয়?

সবার স্ট্রেচ মার্ক হয় না। তবে কিছু পরিস্থিতিতে এ দাগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে, যেমন:

  • কিশোর বয়সে হঠাৎ বেড়ে যাওয়া

  • গর্ভাবস্থা

  • দ্রুত ওজন কমানো বা বাড়ানো

  • শরীরচর্চায় পেশি হঠাৎ বড় হয়ে যাওয়া

  • দীর্ঘ সময় স্টেরয়েড মলম ব্যবহার

  • বিশেষ কিছু রোগ যেমন কুশিংস ডিজিজ বা মারফান সিনড্রোম

কেমন দেখায়?

শুরুর দিকে এই দাগ লালচে, বেগুনি বা বাদামি রঙের হয় এবং হালকা ফুলে থাকতে পারে বা চুলকাতে পারে। পরে এগুলো হালকা হয়ে যায় ও ত্বকের নিচে বসে যায়।

স্ট্রেচ মার্ক কি পুরোপুরি চলে যায়?

না, এটি এক ধরনের দাগ—যা পুরোপুরি দূর হয় না। তবে কিছু চিকিৎসা বা যত্নে দাগগুলো অনেকটাই হালকা করা সম্ভব।

কীভাবে কমানো যায়?

১. লোশন বা ক্রিম

  • নতুন দাগে ব্যবহার করলে ভালো কাজ করে।

  • প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যবহার করতে হয়।

  • মাসাজ করে লাগালে বেশি উপকার মেলে।

তবে সব লোশন বা ক্রিমে কাজ হয় না। সব ধরনের ত্বকে একভাবে ফল দেয় না।

২. ঘরোয়া উপায়

  • আমন্ড অয়েল, অলিভ অয়েল, ভিটামিন ই ইত্যাদি বহুবার ব্যবহৃত হলেও, গবেষণায় দেখা গেছে এসব উপায় খুব একটা কাজ করে না।

৩. সেল্ফ ট্যানার

  • সূর্যর আলোয় পোড়া ত্বকে দাগ আরও বেশি চোখে পড়ে।

  • তবে বাজারে পাওয়া সেল্ফ-ট্যানার ব্যবহার করলে দাগ কিছুটা ঢাকা পড়ে। কিন্তু তা পুরোপুরি কমায় না।

৪. চিকিৎসকের দেওয়া ওষুধ

  • হায়ালুরোনিক অ্যাসিড এবং ট্রেটিনইন (এক ধরনের ওষুধ) নতুন দাগ হালকা করতে সাহায্য করে।

  • এগুলো ব্যবহার করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, বিশেষ করে গর্ভাবস্থায়।

৫. ডাক্তারের করা চিকিৎসা

ত্বক বিশেষজ্ঞরা নিচের কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করেন:

  • লেজার চিকিৎসা

  • কেমিক্যাল খোসা

  • মাইক্রোডার্মাব্রেশন

  • রেডিওফ্রিকোয়েন্সি

  • আল্ট্রাসাউন্ড

এসব চিকিৎসায় দাগ একদম চলে যায় না, তবে অনেকটাই হালকা হয়।

প্রতিরোধ করা যায়?

অনেকেই মনে করেন কিছু লোশন বা তেল আগেভাগে ব্যবহার করলে স্ট্রেচ মার্ক হবে না। কিন্তু গবেষণায় দেখা গেছে, আমন্ড অয়েল, কোকো বাটার, অলিভ অয়েল বা ভিটামিন ই এগুলো তেমন কাজে দেয় না।

তবে কিছু উপাদান যেমন সেন্টেলা বা হায়ালুরোনিক অ্যাসিড ব্যবহার করলে কিছুটা উপকার হতে পারে।

কবে ডাক্তার দেখাবেন?

যদি বাজারের পণ্য ব্যবহার করেও কোনো লাভ না হয়, কিংবা দাগ খুব বেশি মনে হয়, তাহলে ত্বক বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া উচিত। কারণ, তারা আপনার ত্বক দেখে উপযুক্ত ও কার্যকর চিকিৎসা পদ্ধতি পরামর্শ দিতে পারবেন।

পরিশেষে, স্ট্রেচ মার্ক কোনো গুরুতর সমস্যা নয়। তবে যদি দাগ নিয়ে আপনি দুশ্চিন্তায় থাকেন বা অস্বস্তি বোধ করেন, তাহলে নিয়মিত যত্ন এবং প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসার মাধ্যমেই তা অনেকটাই হালকা করা সম্ভব।

আপনার শরীর যেমনই হোক, তা স্বাভাবিক ও সুন্দর — নিজেকে ভালোবাসুন।

আবির

×