
ছবি: সংগৃহীত
এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটি বলতে শিক্ষা বা পেশাগত দায়িত্বের বাইরে যে কোনো ধরণের কার্যক্রম, আগ্রহ বা শখকে বোঝায়। যেমন: খেলাধুলা, ক্লাব বা সংগঠনে অংশগ্রহণ, স্বেচ্ছাসেবা, সৃজনশীল প্রকল্প ইত্যাদি। জীবনীতে (CV) এই ধরণের কার্যকলাপ উল্লেখ করলে নেতৃত্বগুণ, দলগত কাজের দক্ষতা ও দায়বদ্ধতা প্রকাশ পায়, যা নিয়োগদাতাদের কাছে অত্যন্ত মূল্যবান।
জীবনীতে কার্যকর ১০টি এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটির উদাহরণ
একটি চাকরির জন্য জীবনী তৈরির সময় যেমন দক্ষতা নির্বাচন করা হয়, তেমনি এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটিও নির্ভর করে পদের ধরন ও প্রাসঙ্গিকতার উপর।
স্মরণে রাখার বিষয়:
-
জীবনীতে শুধুমাত্র সেই কার্যক্রম উল্লেখ করুন যা সংশ্লিষ্ট চাকরির সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কযুক্ত।
-
যা উল্লেখ করবেন তা হতে হবে বাস্তবভিত্তিক—অতিরঞ্জন বা মিথ্যাচার নয়।
-
সম্ভব হলে এই কার্যক্রমের মাধ্যমে আপনি কী অর্জন করেছেন তা পরিমাপযোগ্যভাবে উপস্থাপন করুন।
এখন চলুন দেখে নিই শীর্ষ ১০টি এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাকটিভিটি—
১. স্বেচ্ছাসেবা ও তহবিল সংগ্রহ
বিনামূল্যে কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করা মানেই স্বেচ্ছাসেবা। এটি প্রমাণ করে আপনি কেবল আর্থিক লাভ নয়, বরং মানুষের কল্যাণেও আগ্রহী। বিশেষ করে তহবিল সংগ্রহের কাজ যদি করে থাকেন, তা নিচের ক্ষেত্রগুলোর জন্য প্রাসঙ্গিক:
-
বিক্রয়
-
বিজ্ঞাপন
-
বিপণন
-
জনসংযোগ
-
অর্থ পরিচালনা
-
উৎসাহ প্রদান
-
মানুষকে প্রভাবিত করা
২. খেলাধুলা ও শখ
এই দুটি বিস্তৃত বিভাগ হলেও এগুলো যদি প্রাসঙ্গিক হয়, তবে এগুলো উল্লেখ করাটা জীবনীকে সমৃদ্ধ করে। যেমন:
-
দলগত কাজ ও সহযোগিতা
-
নেতৃত্ব ও শৃঙ্খলা
-
সমস্যা সমাধান ও কৌশল নির্ধারণ
-
শারীরিক সক্ষমতা বা মানসিক চাঞ্চল্য
৩. শিক্ষকতা, প্রশিক্ষণ ও সহপাঠীদের সাহায্য করা
বয়স্কদের ইমেইল ব্যবহার শেখানো থেকে শুরু করে সহপাঠীদের পড়ায় সাহায্য করা—সবই এতে অন্তর্ভুক্ত। এই অভিজ্ঞতা প্রকাশ করে যে আপনি—
-
মানুষকে প্রশিক্ষণ দিতে পারেন
-
ধৈর্যশীল ও সহানুভূতিশীল
-
সমস্যা সমাধানে দক্ষ
-
ফিডব্যাক দিতে জানেন
৪. বিদেশি ভাষায় দক্ষতা
বিদেশি ভাষা জানা মানেই আপনি পরিশ্রমী, উদারচিন্তাশীল এবং বহুসাংস্কৃতিক পরিপ্রেক্ষিতে মানিয়ে নিতে পারেন। এসব গুণ প্রমাণ করে যে আপনি—
-
সাংস্কৃতিকভাবে সচেতন
-
দক্ষ যোগাযোগকারী
-
বৈচিত্র্যময় জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কাজ করতে সক্ষম
৫. মঞ্চে পারফরম্যান্স ও বক্তৃতা
নাটক, বিতর্ক বা জনসম্মুখে কথা বলার অভিজ্ঞতা থাকলে তা আত্মবিশ্বাস ও যোগাযোগ দক্ষতার ইঙ্গিত দেয়। এগুলো নিচের ক্ষেত্রগুলোতে কাজে লাগে:
-
বৈঠক পরিচালনা
-
উপস্থাপনা দেওয়া
-
গ্রাহকদের সঙ্গে যোগাযোগ
-
নির্দেশনা দেওয়া ও ঘোষণা পাঠ করা
৬. ছাত্রজীবনের কার্যক্রম
ক্লাব, ছাত্র সংসদ বা অন্যান্য সংগঠনে অংশগ্রহণ করলে বোঝা যায় আপনি দায়িত্ব নিতে জানেন। এতে বিকাশ ঘটে:
-
প্রকল্প ব্যবস্থাপনা
-
দলীয় সমন্বয়
-
সংগঠনের দক্ষতা
৭. বিদেশে অধ্যয়ন
বিদেশে পড়াশোনা মানেই আপনি নিজেকে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নিতে পারেন এবং স্বাধীনভাবে সমস্যা সমাধানে সক্ষম। এটি বোঝায়—
-
বৈশ্বিক দৃষ্টিভঙ্গি
-
সাংস্কৃতিক উপযোগিতা
-
আত্মনির্ভরতা ও অভিযোজন ক্ষমতা
৮. ওয়ার্ক-স্টাডি প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ
শিক্ষার পাশাপাশি কর্ম-অভিজ্ঞতা থাকলে তা জীবনীতে আলাদা গুরুত্ব পায়। এটি বোঝায়:
-
বাস্তব অভিজ্ঞতা
-
শিল্পক্ষেত্র সম্পর্কে ধারণা
-
নরম ও কঠিন উভয়ধরনের দক্ষতা অর্জন
-
অফিস পরিবেশে অভ্যস্ততা
৯. শিল্প ও সৃজনশীল চর্চা
সঙ্গীত, চিত্রাঙ্কন বা লেখালেখির মতো সৃজনশীল কাজ দক্ষ চিন্তাভাবনা ও নান্দনিক বোধের পরিচায়ক। এগুলো প্রমাণ করে:
-
সৃজনশীল সমস্যা সমাধান
-
নিরীক্ষণ ক্ষমতা ও মনোযোগ
-
অন্যদের চেয়ে আলাদা ভাবনার সক্ষমতা
১০. আবাসিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা
হোস্টেলে বা ডরমিটরিতে আবাসিক উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করে থাকলে তা উল্লেখ করা অত্যন্ত কার্যকর। এতে যে গুণগুলো প্রকাশ পায়:
-
নেতৃত্ব ও পরামর্শদানে দক্ষতা
-
সমস্যা সমাধানে কৌশল
-
ইভেন্ট ব্যবস্থাপনা
-
দলগত চেতনা ও সামাজিকতা তৈরি
আবির