ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ১২ জুলাই ২০২৫, ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

ঘরে বসেই লিখালিখি করে আয়!জেনে নিন ব্লগ থেকে আয় করার সব কৌশল

প্রকাশিত: ১৭:৫৭, ৮ জুলাই ২০২৫

ঘরে বসেই লিখালিখি করে আয়!জেনে নিন ব্লগ থেকে আয় করার সব কৌশল

ছবি: সংগৃহীত

আপনার কি লেখালেখির প্রতি গভীর আগ্রহ আছে? সৃজনশীল চিন্তা কি প্রায়ই মাথায় ঘোরে? যদি উত্তর হয় ‘হ্যাঁ’, তাহলে আপনার সেই আগ্রহ ও দক্ষতাকে রূপ দিতে পারেন একটি স্থায়ী আয়ের উৎসে—ব্লগিং-এর মাধ্যমে।

কিছু বছর আগেও ব্লগিংকে অনেকেই শুধুমাত্র শখ হিসেবে নিতেন। কিন্তু সময় বদলেছে। এখন ব্লগিং অনলাইন আয়ের একটি নির্ভরযোগ্য পেশা হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। দেশে-বিদেশে অনেক লেখক, উদ্যোক্তা ও ফ্রিল্যান্সার ব্লগিংকে পেশা হিসেবে বেছে নিচ্ছেন, কেউ খণ্ডকালীন আবার কেউ পুরোপুরিভাবে।

 

 

ব্লগিং মানেই একটি ক্ষুদ্র ব্যবসা

অনলাইনে শুধু চাকরি খোঁজার চেয়ে স্বাধীনভাবে নিজের মতো করে কাজ করতে চাইলে ব্লগিং হতে পারে উপযুক্ত মাধ্যম। তবে মনে রাখতে হবে, ব্লগ থেকে আয়ের জন্য এটিকে একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যবসা হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। এর জন্য প্রাথমিক বিনিয়োগ ও পরিকল্পনার প্রয়োজন হয়। আপনি চাইলে মাত্র ১০ ডলার (ডোমেইন কেনার খরচ) থেকে শুরু করতে পারেন। তবে হোস্টিং, থিম, প্লাগইন, লোগো ডিজাইন ও মাসিক ইন্টারনেট খরচ সহ আরও কিছু বিষয় বিবেচনায় এনে একটি প্রাথমিক বাজেট তৈরি করাই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।

একজন ব্লগার হিসেবে আপনি কেবল লেখকই নন, একজন উদ্যোক্তাও। তাই আপনার ব্লগিং পরিকল্পনায় অবশ্যই থাকতে হবে লক্ষ্য নির্ধারণ, সময় ও অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা এবং প্রত্যাশিত লাভ বা রিটার্ন অন ইনভেস্টমেন্ট (ROI) হিসাব।

লেখার দক্ষতা গড়ে তুলুন

লেখালেখির প্রতি আগ্রহ থাকলেই ব্লগিং শুরু করা যায় ঠিকই, তবে নিয়মিত অনুশীলন ছাড়া টিকে থাকা কঠিন। নিজের ভাবনা স্পষ্টভাবে প্রকাশ করার জন্য ভাষাজ্ঞান ও লেখার স্টাইল উন্নত করতেই হবে। ভালো লেখা তৈরির জন্য নিয়মিত পড়াশোনা, গবেষণা, এবং অন্যান্য মানসম্পন্ন ব্লগপোস্ট বা বই পড়া অত্যন্ত জরুরি।

প্রয়োজনে আপনি অনলাইন বা অফলাইন কোর্স করতে পারেন। আজকাল অনেক সৃজনশীল লেখালেখি বিষয়ক কোর্স আছে, যেখানে লেখার স্ট্রাকচার, পাঠক মনস্তত্ত্ব এবং কনটেন্ট মার্কেটিংয়ের নানা কৌশল শেখানো হয়। পাশাপাশি পর্যাপ্ত বাজেট থাকলে অভিজ্ঞ কনটেন্ট রাইটার নিয়োগ করেও নিজের ব্লগের গুণগত মান ধরে রাখা যায়।

ব্লগ তৈরি: প্রযুক্তির ভয় ভুলে যান

অনেকেই ভাবেন, ব্লগ তৈরি করতে হলে প্রযুক্তির গভীর জ্ঞান থাকতে হবে। আসলে তা নয়। বর্তমানে এমন অনেক প্ল্যাটফর্ম রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে প্রোগ্রামিং না জেনেও কয়েক মিনিটেই ব্লগ তৈরি করা যায়। যেমন: Blogger.com, Wordpress.com ইত্যাদি।

তবে যারা আরও পেশাদার ও আয়মুখী ব্লগ তৈরি করতে চান, তাদের জন্য Wordpress.org বা Drupal-এর মতো কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) উত্তম। এই প্ল্যাটফর্মগুলোতে বিনামূল্যে অনেক থিম ও প্লাগইন থাকলেও, আয়কেন্দ্রিক ব্লগের জন্য নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত প্রিমিয়াম থিম কেনা ভালো। Themeforest.net-এর মতো নির্ভরযোগ্য সাইট থেকে নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী থিম কিনে নেওয়া যায়। চাইলে নিজের মতো করে থিম তৈরি করাতে ডিজাইনারও নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে।

পাঠকই আপনার আসল সম্পদ

ব্লগ থেকে আয় করার মূল উপায় হলো পাঠক বা ওয়েব ট্রাফিক। যত বেশি মানুষ আপনার ব্লগে আসবে, ততই আপনার আয় বাড়ার সম্ভাবনা। দর্শকরা যদি আপনার ব্লগে থাকা বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন কিংবা পণ্য বা পরিষেবা কেনেন, তবেই আপনি আয় করতে পারবেন।

ব্লগে পাঠক আনার উৎস দু’রকম—
একটি হলো অরগ্যানিক ট্রাফিক, যা গুগল বা অন্য সার্চ ইঞ্জিন থেকে আসে এবং এটি সম্পূর্ণ বিনামূল্যে পাওয়া যায়।
অন্যটি হলো পেইড ট্রাফিক, যা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা গুগল অ্যাডসের মাধ্যমে অর্থ খরচ করে আনা হয়।

পেইড ট্রাফিকের ক্ষেত্রে খরচ নির্ভর করে নির্দিষ্ট কীওয়ার্ডের ওপর, যেগুলোর প্রতিযোগিতা বেশি। তাই ব্লগ শুরু করার আগে ভালোভাবে নির্ধারণ করা উচিত, আপনি কোন উৎসকে প্রাধান্য দেবেন এবং আপনার বাজেট সেই অনুযায়ী ঠিক করবেন।


 

ছামিয়া

×