
ছবিঃ সংগৃহীত
ইসরায়েলি দখলকৃত পশ্চিম তীরে ফিলিস্তিনি মানবাধিকার কর্মী ইসা আমরো সম্প্রতি চরম হয়রানির শিকার হয়েছেন। তার বিরুদ্ধে এ হামলা হয় বিবিসির তথ্যচিত্র ‘The Settlers’-এ অংশ নেওয়ার পর, যেখানে পশ্চিম তীর ও জেরুজালেমে ইসরায়েলি বসতির বিস্তৃতি এবং ফিলিস্তিনিদের ওপর দমন-পীড়নের চিত্র তুলে ধরা হয়।
ইসা আমরো জানান, ইসরায়েলি সৈন্য ও সশস্ত্র বসতকারীরা তার বাড়িতে ঢুকে পড়ে, হুমকি দেয় এবং তাকে অভিযোগ না করতে বলে। তিনি বলেন, ‘এটা ইসরায়েলি অ্যাপারথেইডেরই আরেকটা প্রমাণ।’
অন্যদিকে, বসতকারীরা তাকে জানায়, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের সমর্থন করেন, যার ফলে তারা এখন আরও সাহসী ও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে।
তথ্যচিত্রের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া
ব্রিটিশ-আমেরিকান সাংবাদিক লুই থেরু পরিচালিত এই তথ্যচিত্রটি পশ্চিম তীরের বাস্তবতা তুলে ধরেছে। থেরু এর আগে ২০১২ সালে The Ultra Zionists তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন, যা ইসরায়েলি বসতি আন্দোলনের চরমপন্থার দিকটি তুলে ধরেছিল। এবার তিনি দেখান, কিভাবে বসতি সম্প্রসারণ ও সামরিক পোস্ট স্থাপনের মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জমি ধীরে ধীরে দখল করা হচ্ছে।
তথ্যচিত্রে ইসরায়েলি ধর্মীয় ও আদর্শিক দৃষ্টিভঙ্গিও তুলে ধরা হয়, যেখানে বসত স্থাপনকে “আলো ছড়ানো” হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে। দানিয়েলা ওয়েইস, দীর্ঘদিনের বসত আন্দোলন নেত্রী, বলেন, ‘আমরা যেমন পশ্চিম তীরে করেছি, তেমনই গাজাতেও করতে চাই।’
সাংবাদিকদের জন্য ভয়াবহ বার্তা
ইসা আমরোর ঘটনা শুধু একটি বিচ্ছিন্ন হামলা নয়। কিছুদিন আগেই অস্কারজয়ী তথ্যচিত্র ‘No Other Land’-এর ফিলিস্তিনি সহ-পরিচালক হামদান বল্লাল-এর উপরও হামলা চালায় ইসরায়েলি বসতকারীরা। তারা তার ঘর ও গাড়ি ভেঙে ফেলে, তাকে আহত করে, এমনকি অ্যাম্বুলেন্সে চিকিৎসা নেওয়ার সময়ও ইসরায়েলি সৈন্যরা তাকে চোখ বেঁধে আটক করে।
এই দুই ঘটনায় স্পষ্ট যে, যারা আন্তর্জাতিক মহলে ফিলিস্তিনিদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র তুলে ধরছেন, তাদের ওপর চলছে পরিকল্পিত দমন-পীড়ন। ইতোমধ্যে গাজায় ২০০-রও বেশি সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, যা সাংবাদিকদের জন্য এক ভয়ানক সতর্কবার্তা।
আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া ও উদ্বেগ
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদ ইতোমধ্যে ইসরায়েলকে দখল বন্ধের আহ্বান জানিয়েছে। আন্তর্জাতিক আদালত (ICJ) বলেছে, ইসরায়েলের ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে উপস্থিতি ‘অবৈধ’। তবে তাতে বসত সম্প্রসারণ থেমে নেই। ৭ লাখেরও বেশি বসতকারী এখন পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেমে বসবাস করে, যা আন্তর্জাতিক আইনে সম্পূর্ণ অবৈধ।
সূত্রঃ https://aje.io/tg5n9m
আরশি