
ছবিঃ সংগৃহীত
একটি ছবি হাজার শব্দের সমান—এই প্রবাদ আজও সত্য, কিন্তু কত ছবি দরকার একটি গণহত্যা বোঝাতে? আলোকচিত্রী সামার আবু এলউফের গাজায় হাত হারানো ৯ বছরের মাহমুদের ছবি ২০২৫ সালের World Press Photo of the Year পুরস্কার জিতলেও, গাজায় অব্যাহত নৃশংসতা থেমে থাকেনি। অর্ধ-শতাব্দী আগে ভিয়েতনাম যুদ্ধেও, ৯ বছরের কিম ফুকের পুড়ে যাওয়া দেহের ছবি যুদ্ধবিরোধী অনুভূতিকে উসকে দিয়েছিল, কিন্তু যুদ্ধ থামেনি।
১৯৭২ সালে Napalm Girl নামে খ্যাত কিম ফুকের ছবি যেমন ভিয়েতনাম যুদ্ধের বিভীষিকাকে বিশ্বদৃষ্টিতে আনে, তেমনি ২০২৪ সালে গাজার মাহমুদের ছিন্নদেহের ছবি বিশ্ববাসীর সামনে ইসরায়েলি আগ্রাসনের নির্মম বাস্তবতা তুলে ধরে। তবুও প্রশ্ন রয়ে যায়—এইসব মর্মান্তিক চিত্র কি সত্যিই পরিবর্তন আনে?
মাহমুদ আজজুর, ৯ বছর বয়সে দুই হাত হারিয়েছে। অস্ত্রোপচারে ব্যথানাশকও ছিল না। সে কাঁদতে কাঁদতে প্রশ্ন করে- ‘আমি কীভাবে মা-কে জড়িয়ে ধরব?’
অন্যদিকে কিম ফুক, পুড়ে যাওয়া শরীর নিয়ে নগ্ন অবস্থায় দৌড়াচ্ছে, মুখে আতঙ্ক আর যন্ত্রণার ছবি হয়ে রইল ইতিহাসে।
ভিয়েতনামে ছবির পরও যুদ্ধ চলে আরও তিন বছর। গাজায় প্রতিদিন গড়ে ১০০ শিশু আহত বা নিহত হচ্ছে, জাতিসংঘের মতে। তবে এই ছবি ও ভিডিওগুলো সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হলেও, অধিকাংশ দর্শকের মনে প্রভাব ক্ষণস্থায়ী।
এ বিষয়ে আলোকচিত্রী সামার আবু এলউফ বলেন, ‘আমি এমন একটি ছবি তুলতে চাই, যা যুদ্ধ থামাবে... কিন্তু যদি তা না পারে, তাহলে ছবির মূল্য কী?’
তার কথার রেশ ধরে এই প্রশ্ন করাই যায়, ছবি যদি কিছুই না বদলায়, তবে মতামতেরই বা দাম কী? তবে কি ভয়াবহতা দেখে অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া মানে সত্যকে অস্বীকার করা? আসলে আর আলোকচিত্রের মূল্য তখনই থাকে, যদি তা কেবল চোখ নয়, বিবেকেও আঘাত করে।
সূত্রঃ আল-জাজিরা
আরশি