
ছবিঃ সংগৃহীত
ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা ও ইহুদি জনগণের সেখানে অভিবাসনের পেছনে ইতিহাসে বহু ঘটনা ও প্রেক্ষাপট জড়িত। বিশেষ করে, হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি জার্মানির ইহুদি নিধনযজ্ঞ (হলোকাস্ট) এই প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করেছে। তবে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠা শুধুমাত্র হিটলারের কারণে নয়; এর পেছনে রয়েছে শতাব্দী প্রাচীন জিওনিস্ট আন্দোলন, আন্তর্জাতিক রাজনীতি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী বাস্তবতা।
১৯ শতকের শেষভাগে ইউরোপে ইহুদিদের বিরুদ্ধে ব্যাপক বৈষম্য ও নিপীড়নের প্রেক্ষিতে জিওনিস্ট আন্দোলনের সূচনা হয়। এই আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল ইহুদিদের জন্য একটি স্বতন্ত্র রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, যেখানে তারা নিরাপদে ও স্বাধীনভাবে বসবাস করতে পারে। ১৯১৭ সালের বালফোর ঘোষণা এই প্রচেষ্টাকে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি দেয়, যেখানে ব্রিটিশ সরকার ফিলিস্তিনে একটি ইহুদি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার প্রতি সমর্থন জানায়।
১৯৩৩ সালে হিটলার জার্মানির ক্ষমতায় আসার পর ইহুদিদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন শুরু হয়। ১৯৩৩ থেকে ১৯৩৯ সালের মধ্যে প্রায় ৫৩,০০০ ইহুদি জার্মানি থেকে প্যালেস্টাইনে অভিবাসন করে, যা হাভারা চুক্তির মাধ্যমে সম্ভব হয় ।
এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি বাহিনী ইউরোপজুড়ে প্রায় ৬০ লাখ ইহুদিকে হত্যা করে। এই গণহত্যা ইহুদি জনগণের মধ্যে গভীর নিরাপত্তাহীনতা সৃষ্টি করে এবং তাদের একটি নিরাপদ আশ্রয়ের প্রয়োজনীয়তা আরও তীব্র করে তোলে।
যুদ্ধ শেষে ইউরোপে ইহুদিদের জন্য নিরাপদ আশ্রয় পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। অনেকেই তাদের পূর্ববর্তী বাসস্থানে ফিরে যেতে ভয় পায়, কারণ সেখানে এখনও ইহুদিবিদ্বেষ বিদ্যমান ছিল । এই পরিস্থিতিতে, বহু ইহুদি প্যালেস্টাইনে অভিবাসনের চেষ্টা করে।
এরপর ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠা হয়, যা ইহুদি জনগণের জন্য একটি স্বতন্ত্র ও নিরাপদ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে ওঠে। এই রাষ্ট্রে হাজার হাজার হলোকাস্ট থেকে বেঁচে যাওয়া ইহুদি অভিবাসন করে নতুন জীবন শুরু করে ।
তবে ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠা ও ইহুদি জনগণের সেখানে অভিবাসনের পেছনে হিটলারের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ হলেও, এটি একমাত্র কারণ নয়। জিওনিস্ট আন্দোলন, আন্তর্জাতিক রাজনীতি, এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-পরবর্তী বাস্তবতা—সব মিলিয়ে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। তবে, হিটলারের নেতৃত্বে সংঘটিত হলোকাস্ট ইহুদি জনগণের মধ্যে একটি নিরাপদ আশ্রয়ের প্রয়োজনীয়তাকে তীব্র করে তোলে, যা ইসরায়েলের প্রতিষ্ঠাকে ত্বরান্বিত করে।
সূত্রঃ https://youtu.be/yAnWjAkHTCQ?si=OMvlpb3lw-LAftir
আরশি