
ছবিঃ সংগৃহীত
ইসরায়েল গত মার্চ থেকে গাজা উপত্যকার ওপর পূর্ণ অবরোধ আরোপ করেছে। এই অবরোধে খাদ্য, পানি, ওষুধসহ সব ধরনের মানবিক সহায়তা প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। ফলে গাজার ২.৩ মিলিয়ন মানুষ বিপর্যস্ত জীবনযাপন করছেন।
গাজা সরকার জানায়, এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৭ জন ফিলিস্তিনি অনাহারে মারা গেছেন, যাদের অধিকাংশই শিশু, অসুস্থ ও বৃদ্ধ। গত বৃহস্পতিবার (১ মে, ২০২৫) খানে ইউনুসের নাসের হাসপাতালে পাঁচ বছর বয়সী ওসামা আল-রাকাব-কে অপুষ্টি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। তার মা জানান, মাংস, মাছ ও প্রয়োজনীয় ওষুধের অভাবে তার সিস্টিক ফাইব্রোসিস রোগটি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে।
জাতিসংঘ বলছে, এ বছর শুরু থেকেই গাজায় ৯,০০০-এর বেশি শিশু তীব্র অপুষ্টি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। একজন শিশুর অপুষ্টি ও পানিশূন্যতায় মৃত্যু হয়েছে। ক্ষুধার তাড়নায় গাজা শহরে শিশুদের আবর্জনার স্তূপে খাবার খুঁজে বেড়াতে দেখেছেন।
মিশর-গাজা সীমান্তে শত শত ট্রাক জীবন রক্ষাকারী খাদ্য ও চিকিৎসা সামগ্রী নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। আল জাজিরার এক ভিডিওতে দেখা যায়, এই ট্রাকগুলোর সারি আরিশ শহরের দক্ষিণ পর্যন্ত বিস্তৃত, যা রাফাহ সীমান্ত থেকে প্রায় ৪৫ কিলোমিটার দূরে।
রাফাহর কুয়েতি হাসপাতালের পরিচালক সুহাইব আল-হামস জানান, তাদের ৭৫% ওষুধ শেষ হয়ে গেছে। জরুরি সহায়তা না এলে এক সপ্তাহের মধ্যেই চিকিৎসাসেবা বন্ধ হয়ে যাবে। বহু রোগী ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, যাদের দ্রুত স্থানান্তর দরকার।
গত কয়েক ঘণ্টায় ইসরায়েলি হামলায় ৭০ জন নিহত এবং ২৭৫ জন আহত হয়েছেন। দুই শিশু ইয়াহিয়া ও সাইফ সিনওয়ার-কে তাদের বাবা ও দাদা মৃতদেহ বহন করেন। এছাড়া, আল-ফাখারি শহরে এক বিমান হামলায় দুই নারী, গাজা উপকূলে এক জেলে নিহত, এবং ‘নিরাপদ অঞ্চল’ বলে পরিচিত আল-মাওয়াসিতে ড্রোন হামলায় আরও দুই ফিলিস্তিনি নিহত হন।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর গাজায় এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫২, ৪৯৫ জন নিহত এবং ১, ১৮, ৩৬৬ জন আহত হয়েছেন বলে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
গাজার জনগণ আজ এক ভয়াবহ মানবিক সংকটে নিপতিত। শিশুরা অপুষ্টি ও অভাবের বিরুদ্ধে লড়ছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নীরবতা এই সংকটকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে।
সূত্রঃ আল-জাজিরা
আরশি