
ছবি: সংগৃহীত
সকালের শুরু যেমন হবে, সারা দিনের গতি-প্রকৃতি অনেকটাই তেমনই হবে, সকালের ঘুম ভাঙার মুহূর্ত থেকেই শুরু হয় আপনার দিনের মানচিত্র। অনেকেই ভাবেন, ঘুম থেকে উঠে ক্লান্ত মন-দেহ নিয়ে আবার রুটিন তৈরি করে কী হবে! অথচ, গবেষণা বলছে-সকালের কয়েকটি সাধারণ অভ্যাস আপনাকে কেবল সারা দিন উদ্যমী রাখে না, দীর্ঘমেয়াদে সফলতার পথও তৈরি করে দেয়।
১. দিন শুরু করেন প্রস্তুতি নিয়ে
ঘুম থেকে উঠেই বিছানা গুছিয়ে নেওয়া যেন তুচ্ছ এক কাজ-তবু এটি আপনার মধ্যে শৃঙ্খলা গড়ে তোলে। আমেরিকান নেভি অ্যাডমিরাল উইলিয়াম ম্যাকরেভেন বলেন, “বিছানা গুছিয়ে দিন শুরু করলেই আপনি দিনটি জয়ের প্রথম পদক্ষেপ নিলেন।” গবেষণায়ও প্রমাণ মিলেছে, দিন শুরুতেই ছোট একটি দায়িত্ব পালন করলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে এবং মন ভালো থাকে।
২. পর্যাপ্ত পানি পান করেন
জাগার সঙ্গে সঙ্গেই ২ গ্লাস পানি পান করা মস্তিষ্ককে সক্রিয় করে এবং শরীরকে চাঙ্গা রাখে। গবেষণায় দেখা গেছে, পানিশূন্যতা মানসিক চাপ ও হতাশা বাড়াতে পারে। তাই দিন শুরুতেই শরীরকে হাইড্রেট রাখা মানেই ইতিবাচক একটি শুরু।
৩. শরীর প্রসারিত করেন
কিছু হালকা স্ট্রেচিং দিনটিকে করে তোলে আরও প্রাণবন্ত। এটি রক্তপ্রবাহ বাড়ায় এবং মস্তিষ্কে সেরোটোনিন ও এন্ডরফিনের মাত্রা বাড়িয়ে আপনাকে রাখে চনমনে ও আনন্দিত। মানসিক সুস্থতার জন্য এই অভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
৪. ধ্যান করেন
মাত্র ১০ মিনিটের মেডিটেশন আপনার মনকে এনে দিতে পারে প্রশান্তি। গবেষণায় দেখা গেছে, নিয়মিত ধ্যান মানসিক চাপ, উদ্বেগ ও বিষণ্নতা কমাতে কার্যকর। তাই সকালে ধ্যান আপনার সারা দিনের মানসিক স্বাস্থ্যকে রক্ষা করতে পারে।
৫. কাজের তালিকা লেখেন
দিন শুরুতেই একটি ‘টু-ডু লিস্ট’ তৈরি করলে আপনার লক্ষ্যগুলো স্পষ্ট থাকে এবং আপনি থাকেন দায়িত্বশীল ও নিয়ন্ত্রিত। এটি মনকে গুছিয়ে নেয় এবং আপনাকে দেয় এক ধরনের আত্মবিশ্বাস-দিনটি আপনার ইচ্ছামতো সাজানোর।
৬. পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করেন
ঘুমের দীর্ঘ উপবাস ভাঙতে একটি পুষ্টিকর খাবার অত্যাবশ্যক। এতে শরীর ও মন সক্রিয় হয়, রক্তে চিনির মাত্রা ঠিক থাকে এবং বিরক্তি বা ক্লান্তির সম্ভাবনা কমে যায়। ডিম, বাদাম, দই ও ফলমূল আপনার মনোবল ও মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতিতে সহায়ক।
৭. মোবাইল এড়িয়ে চলেন
ঘুম ভাঙতেই ফোনে চোখ-এটি অনেকের অভ্যাস হলেও, গবেষণা বলছে এটি মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। সকালে অন্তত ৩০ মিনিট ফোন থেকে দূরে থাকলে আপনি পাবেন মানসিক স্বচ্ছতা ও স্থিরতা, যা সারা দিন ইতিবাচক রাখে মনকে।
৮. নিজেকে উদ্বুদ্ধ করেন
দিনটি যেন হয়ে ওঠে ফলপ্রসূ-তার জন্য নিজেকে অনুপ্রাণিত করা জরুরি। একটুখানি মোটিভেশনাল কথাবার্তা বা নিজের জন্য কিছু ইতিবাচক চিন্তা আপনার মনোভাব পাল্টে দিতে পারে। এতে করে মানসিক চাপ কমে এবং আত্মবিশ্বাস বাড়ে।
সকালের ১৫ মিনিটও যদি আপনি নিজের জন্য ঠিকভাবে ব্যয় করতে পারেন, সেটি পুরো দিনের জন্য হতে পারে একটি শক্ত ভিত। নিজের প্রয়োজন ও দুর্বলতাগুলো চিহ্নিত করে সেগুলোর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে গড়ে তুলুন আপনার সকালের রুটিন-যা আপনার মানসিক ও ব্যক্তিজীবনের ভারসাম্য রক্ষা করবে।
সুত্র: https://shorturl.at/gcWJt
মিরাজ খান