ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০৪ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২

বেরোবির রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সভাপতির বিরুদ্ধে

যৌন হয়রানি অভিযোগকারী শিক্ষার্থী এখন নিরাপত্তাহীনতায়, মধ্যস্থতার প্রস্তাব 

বেরোবি সংবাদদাতা

প্রকাশিত: ২৩:৫৮, ৩ মে ২০২৫; আপডেট: ০৯:০৭, ৪ মে ২০২৫

যৌন হয়রানি অভিযোগকারী শিক্ষার্থী এখন নিরাপত্তাহীনতায়, মধ্যস্থতার প্রস্তাব 

যৌন হয়রানি ও মার্ক টেম্পারিংয়ের জন্য রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় (বেরোবি) রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম (জীবন) এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন একই বিভাগের সাবেক এক নারী শিক্ষার্থী। অভিযোগের পরই ঐ শিক্ষার্থীর নাম ও পরিচয় প্রকাশ পাওয়ায় নিরাপত্তা সংঙ্কায় ভুগছেন ঐ শিক্ষার্থী । এজন্য ঐ শিক্ষার্থী উপাচার্য বরারব একটি অভিযোগও করেছেন।

সেই শিক্ষার্থী অভিযোগ দেওয়ার পর পরেই প্রশাসন অভিযোগকারীর নাম প্রকাশ করলে ভুক্তভোগীকে তার পরিবারে ফোন দেওয়া, অভিযোগ প্রত্যাহার করা ও মধ্যস্থতার চাপ দেয়, যার কারনে সেই শিক্ষার্থী নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন।

 অভিযোগে আরো উল্লেখ করেন,  অভিযোগ দায়েরের সময় আমি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিলাম যেন আমার ব্যক্তিগত তথ্য গোপন রাখা হয়। কিন্তু অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে, অভিযোগ দায়ের করার পরপরই শিক্ষক তানজিউল বিভিন্ন মাধ্যমে আমার এবং আমার পরিবারের সদস্যদের ফোন করেছেন, অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ দিয়েছেন এবং বিষয়টি মীমাংসার কথা বলে আমাকে হয়রানি করেছেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের সাবেক এক শিক্ষার্থীর মাধ্যমে বার বার তিনি আমার সাথে মধ্যস্থতা করার প্রস্তাব দিয়েছেন। আমার বাবা-মাকে একাধিকবার ফোন করে মানসিকভাবে হয়রানি করছেন।এমনতা অবস্থায় আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। 

তিনি আরো উল্লেখক করেন,  আমাকে সামাজিকভাবে হেয় করার জন্য তিনি বিভিন্নজনের মাধ্যমে নানা উপায়ে চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তানজিউল ইসলাম তার বিরুদ্ধে ওঠা রেজাল্ট টেম্পারিং ও যৌন হয়রানির অভিযোগকে উদ্দেশ্যমূলকভাবে হালকাভাবে দেখানোর চেষ্টা করছেন, যা তার বিভিন্ন তৎপরতায় স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।

গত ১৩ এপ্রিল রাতে এই পরীক্ষা নিয়ন্ত্রকের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পর পর তিনটি অডিও ফাঁস হলে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ গত ২৪ এপ্রিল নাম পরিচয় গোপন রাখা শর্তে প্রশাসনের কাছে আরেকটি লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ৪ সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন।  

অভিযোগকারীকে মধ্যস্থতার কথা বলেছিল কিনা তা জানতে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. তানজিউল ইসলাম জীবন কে একাধিক বার ফোন কল দিয়েও পাওয়া যায়নি।

এ বিষয়ে তদন্ত কমিটির একজন সদস্য বলেন, আমরা বা আমাদের সদস্যেদের মধ্যে কেউ নাম প্রকাশ করিনি। আমরা অত্যন্ত গোপনীতার সাথে কাজ করতেছি। আমরা ইমেইল পাঠানোর ক্ষেত্রে একদম পারসোনাল ল্যাপটপ ব্যবহার করতেছি, যাতে তথ্যের সর্বোচ্চ গোপনীয়তা রক্ষা পায়। তদন্ত কমিটি কাজ কতদূর এগিয়ে নিলো এ বিষয়ে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, আমরা আমাদের কাজ গুলো প্রায় গুছিয়ে নিয়েছি, সেই অনুযায়ী কাজ করতেছি। শীঘ্রই তদন্তের ফলাফল প্রকাশ হবে।

উল্লেখ্য যে, গত ২৪ এপ্রিল নাম প্রকাশ না করার শর্তে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের  সাবেক এক শিক্ষার্থী উপাচার্য বরাবর অভিযোগ পত্র জমা দেন। সেই অভিযোগ পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, তিনি শিক্ষক জীবনের বিরুদ্ধে মানসিক নির্যাতন, ভয়ভীতি দেখানো, যৌন হয়রানি ও মার্ক টেম্পারিং করে ফলাফল খারাপ করিয়ে দেয়ার অভিযোগ আনেন। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে উক্ত অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য। এসকল অভিযোগ উঠার পর এই শিক্ষক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

 

রাজু

আরো পড়ুন  

×