
দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা ও সংশ্লিষ্ট অঙ্গসংস্থাগুলোর কার্যকারিতা বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশির উদ্দীন।
সোমবার এক সেমিনারে তিনি বলেন, খাদ্য নিরাপত্তা শুধু পণ্যের প্রাপ্যতা নয়, এর পেছনে রয়েছে বৃহৎ পরিসংখ্যান, বিনিয়োগ এবং বাস্তবসম্মত পরিকল্পনার সমন্বয়।
তিনি বলেন, সরকারের বিভিন্ন স্তরে এখনো অনেক দুর্বৃত্তচক্র সক্রিয় রয়েছে, যারা বাজার ব্যবস্থাকে অস্থিতিশীল করছে। এসব কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত কার্যক্রম জরুরি।
তথ্য উপাত্তের সঠিকতার অভাবের কারণে নানা নীতিগত জটিলতা তৈরি হচ্ছে বলেও মন্তব্য করেন শেখ বশির। তিনি বলেন, “আমরা যখন সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে যাই, তখন যেসব পরিসংখ্যানগত নিয়ামককে ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়, সেগুলোর মধ্যে অসংগতি দেখা দেয়। অনেক সময় এ ধরনের ভুল পরিসংখ্যান আমাদের বিভ্রান্ত করে। এসব রিপেয়ার করতে হবে।
তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, গত বছর বলা হয়েছিল, দেশে আলুর উৎপাদন হয়েছে এক কোটিছয় লাখ টন, অথচ ভোগ মাত্র ৮০ লাখ টন। তার পরেও বাজারে আলুর দাম হয় ৯০ টাকা কেজি। এই তথ্যগুলো একে অপরের সঙ্গে কোনোভাবেই মেলেনি। স্ট্যাটিসটিকস ভুল হলে বাজার নিয়ন্ত্রণ সম্ভব নয়।
পরিসংখ্যান সংশোধনের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শেখ বশির বলেন, দেশের খ্যাতনামা অর্থনীতিবিদরাই এই পরিসংখ্যান তৈরি করেন। কিন্তু এসব তথ্য বাস্তব পরিস্থিতিকে প্রতিফলিত করে না। এখন সময় এসেছে পরিসংখ্যানকে শুদ্ধ করার।
খাদ্য নিরাপত্তার গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, আমাদের দেশে প্রায় ৩০ লক্ষ কোটি টাকার খাদ্য বাজার রয়েছে। যদি এর আর্থিক মূল্যায়ন হয়, তাহলে এর বিপরীতে যে বিনিয়োগ দরকার, তা-ও নির্ধারণ করতে হবে। যেমন সেচ, সার উৎপাদন, পরিবেশগত প্রস্তুতি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় কী পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ দিতে হবে, তা হিসেব করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, এই লক্ষ্য অর্জনের জন্য একটি সমন্বিত জাতীয় নীতিমালার প্রয়োজন। দেশের সবচেয়ে প্রাজ্ঞ ও মেধাবী মানুষদের একত্রিত করে একটি নীতিনির্ধারণী ফোরাম গঠন করতে হবে। তাদের চিন্তা, বিশ্লেষণ এবং অভিজ্ঞতার ভিত্তিতেই আমরা খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে পারি।
এসএফ