ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

উপপাদ্য

কবিতা

দুপুর মিত্র

প্রকাশিত: ২১:২১, ১ ডিসেম্বর ২০২২

কবিতা

-

১৯.
সুন্দরবনের গাছেদের শ্বাসমূল থাকে কেন?

সুন্দরবনের অনেক গাছের শ্বাসমূল থাকে। মাটির নিচে নয়, মাটির উপরে চোখ মেলে দেখে কে আসে কে যায়।

কারণ মাটির নিচে অনেক কান্না। কান্নায় লবণাক্ত মাটিজল। যে লবণাক্ত কাদামাটি থেকে অক্সিজেন নিতে পারে না। বন্ধ হয়ে আসে শ্বাস।

কারণ খাবারে এত বেশি লবণ যে রুচি চলে যায়। পেট ভরে আসে। বমি চলে আসে লবণাক্ততায়।

যে মূলের ধর্ম মাটির নিচে ডুবে থাকা, সে কখনই দেয় না ডুব। শঙ্কা পিছু ছাড়ে না তার। বুক ভরে নিয়ে চলে শ্বাস।

বেঁচে থাকার তাগিদে কত কিছুই না করতে হয়। কত কিছু ভাঙে গড়ে, হারিয়ে যায় পুরনো অভ্যাস।

২০.
গাছে পাখির বাসা থাকলেও গাছ পাখিকে চেনে না কেন?

গাছে পাখির বাসা থাকলেও গাছ পাখিকে চেনে না। পাখি পরম যতœ নিয়ে গাছের শাখা প্রশাখা আর পাতা একসঙ্গে করে তাতে খড়কুটো দিয়ে বাসা বানায়। যে গাছ পাখিকে আশ্রয় দেয় সেই তাকে চেনে না।

হয়ত গাছ প্রয়োজনই মনে করে না। কাউকে সাহায্য করতে হলে তাকে চিনতে হবে কেন, এই কথা ভাবে।

অথবা তার বুকের ভেতর অজস্র পাখি অজস্র প্রাণ বেঁচে থাকবে, এই কি কম সুখ।

হিংসা করে করে কাউকে আহত কাউকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিয়ে কে বাড়ায় অসুখ।

পাখি হয়তো বা চেনে, কোন গাছে বানাতে হবে বাসা কিন্তু গাছ চেনে না, হয়তো মনেও রাখে না কারও মুখ।


২১.
যে যেতে চায় তাকে কেন যেতে দিতে হয়?

যে যেতে চায় তাকে যেতে দিতে হয়। কেননা জোর করে আটকে রাখা পাখিও মরে যায়।

দুর্দান্ত প্রতাপশালী সিংহও ক্রমশ দুর্বল হয়ে মরার মতন পড়ে থাকে চিড়িয়াখানায়।

গ্রামের পর গ্রাম ভাসিয়ে নেয়া নদীও শুকিয়ে যায়।

ভালোবেসে যে টবের ফুল গাছ ঘরে এনে রাখ, জল দাও নিয়ম করে, সেও মরে।

জোর করে রেখ না কাউকে, জোর করে রাখা প্রেম দুর্গন্ধ ছড়ায় ঘরে।

 

** প্রশ্নেরা উত্তর খোঁজে

রুনু আঞ্জুমান

প্রশ্নেরা উত্তর খুঁজে পায় না কখনো
আমি কে জাগায় শুধু এখনো তখনো
ভুল, ভুল পথে গেছে সত্যের নেশায়
লেখনী আমার তীব্র হোক না পেশায়
পথেরা আমার সাথী নিত্য চলি তাই
আমার আমির কাছে ‘সুখ-সুর’ পাই
সান্ত¦না আনন্দ হয়ে হামাগুড়ি খেলে
পড়ন্ত বিকেলে ‘ছায়া-চোখ’ পাতা মেলে
শীতের রাত্রিতে কেন ভেজানো চাদর
কান্নাজল স্রোতে কেউ পায় না আদর
বাঁচার প্রেরণা মেলে কবিতা শক্তিতে
ধ্যান শব্দ, শব্দ ধ্যান পরম ভক্তিতে
সকালে কুয়াশা ডাকে কর্মস্থল সুরে
প্রশ্নেরা উত্তর খোঁজে পৃথিবীটা খুঁড়ে।


** সময়কে মুক্তি দাও

সৈয়দ আনোয়ার রেজা

ক্ষমার অযোগ্য হয়েও চাই ক্ষমা
কারণ অকারণের সব ভ্রান্তিগুলো
করো ক্ষমা, সুন্দরের আহবানে।
জলস্রোতে তীরে ছুড়ে ফেলো
প্রবাহমান যতো কষ্টের ঢেউ
তীর-নীড় ভাঙা, আঁকাবাঁকা বদ্বীপ
প্রদীপ জ্বলেনা মনের মৃত্তিকা কুটিরে

অভিমান ভুলে এসো
কঠিন সময়কে মুক্তি দাও ভালোবেসে।


** অধিকার

মারুফা সুলতানা খান

বালিকা,
তোমার শরীর স্পর্শ করলেই তুমি নষ্ট হয়ে যাও,
মন স্পর্শে কি নষ্ট হও না?

বালক,
তুমি শরীর-মন সব ছুঁয়েও নষ্ট হও না,
সব নষ্ট হওয়া কি বালিকাদের অধিকারে চলে গেছে?

 

×