ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১৬ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২

বসন্তের গল্প ॥ বসন্ত দিনে

প্রকাশিত: ১২:৪৫, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২০

বসন্তের গল্প ॥ বসন্ত দিনে

কোন এক বসন্তের দিনে সুপ্তি আর তরুণের প্রেমের শুরুটা হয়েছিল ফেসবুকের মাধ্যমে। ফেসবুক এ্যাকাউন্ট খোলার তিন বছরের মধ্যে সুপ্তির বন্ধু লিস্ট অনেক বড় হয়ে যায়। সে সুবাদে অনেক ছেলে বন্ধুদের সঙ্গে মেসেঞ্জারে কথোপকথন। মানুষ সম্পর্কে জানা, নিজের সম্পর্কে জানানো, নতুন নতুন বন্ধুদের সঙ্গে ভাল-মন্দ শেয়ার করা এক ধরনের নেশায় পরিণত হয়েছিল। আর এভাবেই সেই অনেকের মাঝে বিশেষ একজন হয়ে ওঠে তরুণ। তারপর আস্তে আস্তে মনের ভাব আদান-প্রদান চলে নির্দ্বিধায় কয়েকটা বছর। দুজনেরই দুজনার সঙ্গে কথা না বলে থাকা একটা সময় দুঃসহ যন্ত্রণার মনে হয়। একদিন কথা না হলে রাগ আর মান-অভিমানে ভেঙে যায় পাঁজর। কতশত ছেলেমানুষী অভিযোগ অনুযোগের পাহাড়ের স্তূপে মিষ্টি ঝগড়া চলে গভীর রাত পর্যন্ত। এভাবে প্রেমের উন্মত্ততায় ভেসে যেতে লাগলো সুপ্তি আর তরুণ। আবেগ আর অনুভূতির খেলায় কাটাতে লাগল অচেনা দুজন অজানা গন্তব্যে। সেই গন্তব্যের কোথায় শেষ, সে সবের কোন তোয়াক্কা নেই কারও। যেন প্রেমের ভেলায় ভেসে যাওয়াই মূল লক্ষ্য। লোকচক্ষুর আড়ালে উন্মাদ এই প্রেমের কোন লাজ নেই; নেই ভয়। ভালবেসে প্রেমের জোয়ারে অন্তবিহীন ছুটে চলাই যেন সকল কিছুর উর্ধে। মাঝে মাঝে রাগ আর অনাহুত ঝগড়াতেও অন্যরকম সুখ খুঁজে পাওয়াও যেন পরম পাওয়া। তরুণ একজন সফল ব্যবসায়ী। ব্যবসার ব্যস্ততার ফাঁক গলিয়ে সময়কে চুরি করে সুপ্তিকে খুশি করা দায়িত্ব এবং কর্তব্য মনে করে। আর ব্যবসায়ী হওয়ার কারণে রুজি রোজগারের নেশায় প্রচ- ব্যস্ত হয়ে পড়া মন শুধু ভবিষ্যত সঞ্চয় এবং সুন্দর জীবনের ভাবনায় মশগুল থাকতে চায়। অর্থ ছাড়া তো আর দুনিয়া চলে না। কথায় আছে অভাব দেখলে নাকি ভালবাসাও জানালা দিয়ে দৌড়ে পালায়। সেটা তরুণের মতো বিচক্ষণ ছেলে ভালই বোঝে। আর তাই তো সুন্দরের পূজারি তরুণ প্রেম ছাড়াও জীবনের আর বাকি সবকিছু পরিপূর্ণ রাখতে অর্থ উপার্জনের খেয়ালে বেখেয়াল হয়ে যায় প্রায়শই। তখন সুপ্তিকে খুব বেশি প্রয়োজন ছাড়া সময় দেয়া হয় না। ওদিকে কষ্টের পাহাড় জমাট বাধে সুপ্তির আবেগপ্রবণ হৃদয়ে। সুপ্তি অভিমানে গাল ফুলিয়ে দুঃখ ভারাক্রান্ত মনে অপেক্ষা করে প্রিয় মানুষটির ফোন কল অথবা টেক্সটের জন্য। কখন সে ফ্রি হবে, কখন ওর মনের বাক্সে প্রিয় মানুষটির ডাক আসবে! অপেক্ষার একেকটা মুহূর্ত যেন যুগের চেয়েও অধিক দীর্ঘ। অন্যসব দিনগুলো ব্যস্ততার মাঝে কাটালেও বিশেষ কিছু দিনে প্রিয়জনের কাছে প্রিয় মানুষের অন্যরকম চাওয়া থাকে। যে চাওয়াতে অনেক কল্পনা আর ভাললাগা বিরাজ করে। সেটা তরুণ বোঝে বলেই সুপ্তিকে খুশি করার জন্য প্রতিটি উৎসবের দিনে চমক দেয়া রীতিমতো রীতিতে পরিণত হয়। দুজনার যৌবনে প্রেমের বসন্ত কোকিল ডাকার পর থেকে প্রতিটি বসন্তের প্রথম সকালে সুপ্তিকে নিয়ে বাইরে একান্ত কিছু সময় কাটাতে তরুণ সবসময়ই সচেষ্ট। প্রতিটি বসন্ত দিনের শুরুতে কোকিলের কণ্ঠে কুহুতান আর বউ কথা কও পাখির শিস ওদের প্রেমিক হৃদয়ে নতুন এবং ভিন্ন মাত্রা যোগ ক’রে দিনটিকে আরো মধুময় করে তোলে। আনমনে হাতে হাত রেখে টিএসসিতে অথবা কোন পার্কের পথ ধরে সবুজাভ দূর্বাঘাসের ওপর দিয়ে হেঁটে যেতেই মনে দোলা দিয়ে যায় বাসন্তী হাওয়া। যখন শীতের আড়ষ্টতা ভাঙতে থাকে তখন নিষ্প্রাণ ও নির্জীব প্রকৃতিকে ভরিয়ে তুলতে আগমন ঘটে বসন্তের। এমন ভাললাগা দিনে প্রেমিকযুগল চোখাচোখি হয় দারুণ শিহরণে। চন্দ্রিমার সবুজ নরম ঘাসের উপর বসে তরুণ আর সুপ্তি একে অপরের দিকে চেয়ে থাকে বহুক্ষণ। অনেক কামনায় জাগ্রত দুটি দেহকে ভালবাসার আবেশ চৌম্বকের মতো টানে। হৃদয় অভ্যন্তরে টান টান উত্তেজনা আর উন্মত্ততা। মাথার উপর চকচকে সোনালি রোদ। সারিসারি ঘন দেবদারু গাছ। শুকনো ঝরাপাতায় সয়লাব চারিপাশ। বসন্ত দিনে বাসন্তী রং যখন দুটি মনের নিশ্চুপ না বলা কথাগুলো বোঝার চেষ্টা করে তখন ওদের নিবিড় ঘোরে বাদসাধে বাদাম ওয়ালার কর্কশ কণ্ঠ। পরক্ষণেই দুজনের লজ্জিত দৃষ্টি লজ্জা লুকোতে প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য দেখার ভান করে । এরপর অনেকক্ষণ মৌনতা। একটা সময় সেই মৌনতা ভেদ করে সুপ্তির প্রশ্ন -বাংলা ফাল্গুন ও চৈত্র দুই মাস বসন্তকাল, তাই না? অনেকটা অবাক দৃষ্টিতে তরুণ তাকায় সুপ্তির দিকে। -হুম ঠিক......তুমি জানো? -হ্যাঁ.... জানি তো। সবাই তো জানে... -উহু ভুল বললে। অনেকেই জানে না। বাংলা বছর এবং ছয় ঋতু সম্পর্কে আমাদের দেশের অনেক তরুণ-তরুণীই কিন্তু জানে না। বলল তরুণ। -হবে হয় তো। খুব আধুনিক যুগ চলছে তো। সবাই নিজেদের ঠুনকো স্ট্যাটাস বজায় রাখতে ইংরেজী মাস-বছর সম্পর্কে বেশি জ্ঞান রাখে। বেশি মাতামাতি করে। -উম্ম.....না... আসলে জ্ঞান রাখে সেটা বললেও ভুলই হবে। হয়েছে কি—- ইংরেজী, বাংলা, আরবী বছরগুলোর মধ্যে ইংরেজী বছরের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। সারা বিশ্বে ইংরেজী ক্যালেন্ডারের প্রচলন বেশি হওয়ায় বই পুস্তকে ইংরেজী বছর ব্যবহার করা হয়। আজ থেকে ২০১৯ বছর পূর্বে এর গণনা শুরু হয়েছিল যিশু খ্রিস্ট যেদিন মারা যায় সেদিন থেকে। ইংরেজী বছরের বিষয়টি সম্পূর্ণভাবে যিশু খ্রিস্টের সঙ্গে জড়িত। ইংরেজী ক্যালেন্ডার হলো খ্রিস্টপূর্ব আর খ্রিস্টাব্দ। যিশুর জন্মের পরের বছরগুলো খ্রিস্টাব্দ যাকে ইংরেজীতে বলে অভঃবৎ উবঃয (সংক্ষেপে অ.উ) আর জন্মের আগের বছরগুলো খ্রিস্টপূর্ব, ইংরেজীতে ইবভড়ৎব ঈৎরংঃ (সংক্ষেপে ই.ঈ) । এ দুটোরও আরও অনেক বিশ্লেষণমূলক তথ্য আছে যা ব্যাখ্যা না করলে তুমি বুঝবে না। -তবে কথা হলো যে একজন বাঙালী হিসেবে ইংরেজী বছরের দিন-মাস-বছর সম্পর্কে যে যতটুকুই জানুক না কেন, বাঙালী প্রতিটি অভিভাবকদের উচিত ইংরেজী বছরের মতো বাংলা বছর এবং ছয় ঋতু সম্পর্কে সন্তানদের ছোট বেলা থেকেই পাঠদান করা। কিন্তু দুঃখজনকভাবে অনেক অভিভাবকরা নিজেরাই বাংলা বছর এবং ঋতু সম্পর্কে অজ্ঞ। আর স্কুল কলেজগুলোও এ বিষয়ে দারুণ উদাসীন। তরুণ একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কিছুক্ষণ চুপ থেকে আবার বলতে শুরু করে। -দেখ না.... বসন্তে কোকিলের কুহুতান, রং বেরংয়ের ফুল, শুষ্ক বাতাস, গাছের কচি পাতা সবি বসন্তের আগমনী বার্তা বয়ে আনে । আমরা কেউ এসব খেয়াল করি না, অনুভব করি না। এগুলো কিন্তু গভীরভাবে অনুভব করা উচিত। প্রকৃতিকে জানা এবং বোঝা মানেই নিজেকে জানা, বোঝা। কিন্তু আমরা কি করি? আমরা শুধু বিশেষ মাস, বিশেষ দিন এলে তা ঢাকঢোল পিটিয়ে উদযাপন করি। -বসন্ততে প্রকৃতি যে অনুভব করে প্রাণের স্পন্দন সেটার ধারণা অনেকের নেই। বসন্ত যে সব ঋতুর রাজা সেটাও হয় তো অজানা কারও কারও। তুমি কি জান? ঋতুরাজ বসন্ত প্রকৃতিতে নতুন প্রাণের পরশ লাগায়? আকাশে ভেসে বেড়ানো হালকা মেঘ এলোমেলো বাতাস বসন্তের অবিরাম সঙ্গী। বসন্তের এলোমেলো বাতাস কিন্তু স্থির থাকে না কোন নির্দিষ্ট দিকে। এ ঋতুতে প্রকৃতি চমৎকার রূপ ধারণ করে। শীতের জড়তা ভেঙে নবপত্র সুশোভিত হয়। গাছে গাছে ফোটে রং বেরঙের ফুল। পলাশ, শিমুল, মান্দার, কৃষ্ণচূড়ার রক্তিম পরশে নববধূর সাজে সেজে ওঠে। সারি সারি গাছ রক্তিমতায় ছেয়ে যায়। আর এই বসন্তকে সুশোভিত করতে ফোটে কৃষ্ণচূড়া। বসন্তের রক্তিমতা বাড়িয়ে তোলে পলাশ। উজ্জ্বল রঙের পরশ বুলাতেই যেন পলাশ ফুলের আগমন ঘটে। পাতাঝরা পলাশ গাছে থোকায় থোকায় ফুল ফোটে। অশোক, পারুল, নীলমনিলতা, নাগেশ্বর, অপরাজিতা রং বেরঙের এসব ফুল বাড়ির আঙিনা সুশোভিত করে। মৌমাছি, ভ্রমর খেলা করে ফুলে ফুলে। ফুলে ফুলে উড়ে বেড়ায় বর্ণিল সব প্রজাপতিও। -আমার কাছে মনে হয়, বসন্ত নীলের অভাব ঘোচাতেই নীলমণিলতা, অপরাজিতার আগমন ঘটে। আম্রকানন মুকুলে ছেয়ে যায়। আর একটা চমৎকার দৃশ্য হলো গাছের আড়াল থেকে কোকিলের কুহুকুহু তানে চারপাশ মুখরিত করে তোলা। -আচ্ছা তুমি কি ফাল্গুন ও বসন্ত সম্পর্কে কিছু জান? মানে ফাল্গুন ও বসন্তের সূচনালগ্ন বা এর উৎপত্তির ইতিহাস? -না তেমন কিছু জানি না, সামান্যই জানি। তবে শুনেছিলাম এর একটা গল্প আছে। সুপ্তির ছোট্ট উত্তর -রাইট.... গল্প....সেই গল্পটা আজ আমি তোমাকে শোনাব। শোন, একদা কোন এক দেশে ফাল নামক একজন রাজা দেশ শাসন করতেন। সে অনেক অত্যাচারী ছিলেন বলে কেউ তার গুণগান করত না। তো সেই রাজা একদিন বললেন, যে সবচেয়ে বেশি তার গুণগান করবে তাকে উপহারস্বরূপ তার অর্ধেক সম্পত্তি দিয়ে দেবেন। এ কথা জানিয়ে দিতে রাজা ফরমান জারি করলেন। রাজার অর্ধেক সম্পত্তি পাওয়ার লোভে সবাই রাজা সম্পর্কে গুণগান করা শুরু করল। অবশেষে জয়ী হলো ‘অন্ত’ নামক এক প্রজা। পুরস্কার দেয়ার কথা বলে রাজা বললেন ‘বস অন্ত।’ প্রজাকে বসিয়ে রেখে রাজা চলে গেলেন। প্রজা পুরস্কারের জন্য অপেক্ষা করতে লাগল। কিন্তু রাজা তার পুরস্কার বুঝিয়ে দিলেন না অর্থাৎ তিনি প্রতারণা করলেন। রাজার এহেন আচরণ দেখে মনের দুঃখে সেই দেশ থেকে তখন শীত বিদায় নিল। গাছে গাছে কোকিল কুহুকুহু কণ্ঠে প্রতিবাদ করল। রেগেমেগে কৃষ্ণচূড়া অগ্নিবর্ণ ধারণ করল। ইতিহাস বলে সেই দিনটি ছিলো বর্তমান বাংলা পঞ্জিকার একটি মাসের প্রথম দিন। রাজা ফাল আর গুণ গাওয়া এর সেই কাহিনী লোকমুখে সেই মাসের নাম হয়ে যায় ফাল্গুন। আর অন্তকে রাজা বলেছিলেন ‘বস অন্ত’ তারপর থেকেই এ’কালের নাম হয়ে যায় বসন্ত। সুপ্তি মুগ্ধ হয়ে তরুণের মুখের পানে তাকিয়ে ইংরেজী বছর এবং বসন্ত ঋতুর সৌন্দর্যের মুগ্ধকর গল্পের বর্ণনা শোনে। সুপ্তির এই মুগ্ধ দৃষ্টি তরুণের চোখকে এড়ায় না। একটু লজ্জা মিশ্রিত চোখে তাকিয়ে তরুণ বলে— -কি ? অমন করে কি দেখছো? সুপ্তি অনেকটা ঘোরলাগা কণ্ঠে বলে—-তুমি এত গুছিয়ে কথা বল কি করে বল তো? তোমার ভাবনাগুলো এত সুন্দর যে সেটা উপলব্ধি করার সময় আমি শিহরিত হই। আমি না মাঝে মাঝে ভীষণ অবাক হয়ে ভাবি বিষয়টা। তরুণ মুচকি হাসে...তারপর আবারও বলতে শুরু করে— -আরে বোকা এটা তো আউট নলেজ। নানা রকমের বই পড়ে, সংবাদপত্র পড়ে, বিভিন্ন শিক্ষামূলক টিভি চ্যানেল দেখে, আমাদের চারপাশে কোথায় কি ঘটছে চোখকান খোলা রেখে সেগুলো বুঝার টেষ্টা করলেই আউট নলেজ বাড়ে। আচ্ছা বাদ দাও এসব কথা। শোন না—বসন্তের নির্জন দুপুরে বউ কথা কও পাখি যখন আপন সুরে ডেকে যায় তখন আমার কি যে হয়, সেই সুর না চোখ বন্ধ করে শুনতেই ইচ্ছে করে। -তুমি কি জান? ঋতুর প্রতিটিক্ষণে বসন্ত বাতাস বয়ে যায় বন বনানীতেও? গভীর বন শুকনো পাতার মর্মর ধ্বনিতে মুখরিত হয়। ঝরাপাতার আবরণে ঢেকে যায় শালবন। এক সময় মলিন বনে প্রাণ ফিরে আসে। গাছে গাছে কচিপাতার দেখা মেলে। শুষ্ক বনে সবুজের পরশ লাগতে শুরু করে। পাখির সুরে প্রাণের সঞ্চার হয় বনে। বসন্তের এই নান্দনিক সৌন্দর্যকে উপভোগ করতেই কিন্তু সারাদেশে উৎসব শুরু হয়। বসন্ত শুধু প্রকৃতিকে রঙিন করে না বরং প্রাণের দোলা দেয় মানব মনেও। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে বসন্ত দারুণভাবে মিশে আছে। সুপ্তি আনমনে তরুণের হাতটি নিজের হাতে তুলে নেয়। মুগ্ধতা মাখা কণ্ঠে বলে -তুমি একজন ব্যবসায়ী হয়েও এতকিছু জান, এত সুন্দর করে অনুভব কর। আমার কি মনে হচ্ছে জান? আমার এখন মনে হচ্ছে তুমি না সাধারণ কেউ নও। তুমি একজন অসাধরণ কবি। -জান, আমি তোমাকে যত দেখি, তোমার সম্পর্কে যত জানি অবাক আর মুগ্ধই হই। -তরুণ ঠোঁটের কোণায় সরল হাসির রেখা টেনে বলে -পাগলী ...শোন, এমনিতে সব প্রেমিকার কাছে তার প্রেমিকরা দুনিয়ার সবকিছুর চাইতে প্রিয়। তোমার ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম নয়। এ জন্য আমি যাকিছু বলি, যাকিছু করি সবটাতেই তুমি আপ্লুত হও, মুগ্ধ হও। আর বিশেষ দিনগুলোতে বিশেষ মুহূর্তগুলো আমাদের মতো যুগলের কাছে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হয়। আমি জানি, আমাকে তুমি অনেক অনেক ভালবাসো। আমাদের একসঙ্গে কাটানো একেকটাক্ষণ তোমার কাছে ঠিক স্বর্গীয়। আর আজ তো বিশেষ দিন। আজ তো বসন্তের দিন । তাই বসন্ত তোমার মনে বাসন্তী রং ছড়াচ্ছে, বুঝলে? বলেই তরুণ দুই আঙুলের ডগায় সুপ্তির নাক টিপে দেয়। —-সুপ্তি অপলক তরুণের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে। ওর চোখ যেন সরতে চায় না। তরুণেরও তাই। পড়ন্ত বিকেলের রক্তিম রোদ আর বসন্তের রং যেন দুজনার চোখেমুখে উপচে পড়েছে। মুগ্ধতা ! অনেক মুগ্ধতা সেই যুগল চোখ জোড়াতে।
×