
শিক্ষা মন্ত্রণালয় বেসরকারি এমপিওভুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষকদের জন্য বদলি নীতিমালা সংশোধন করে নতুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একজন শিক্ষক তার কর্মজীবনে সর্বোচ্চ দুইবার এবং একজন শিক্ষিকা সর্বোচ্চ তিনবার বদলির সুযোগ পাবেন। এ লক্ষ্যে পূর্বে আগস্টে জারি করা নীতিমালাটি বাতিল করা হয়েছে।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, শিক্ষকদের বদলির জন্য পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পন্ন হবে অনলাইনে নির্ধারিত সফটওয়্যারের মাধ্যমে। এনটিআরসিএ প্রতি বছর ১৫ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিষ্ঠানের শূন্যপদের তালিকা অনলাইনে প্রকাশ করবে। এরপর ১ থেকে ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন নেওয়া হবে। প্রাপ্ত আবেদন যাচাই-বাছাই করে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে বদলির আদেশ জারি করা হবে। আর ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে বদলিকৃত শিক্ষককে নতুন কর্মস্থলে যোগদান সম্পন্ন করতে হবে।
শর্ত ও নির্দেশনা:
- একজন শিক্ষককে প্রথম যোগদানের পর কমপক্ষে দুই বছর পূর্ণ করতে হবে, তবেই তিনি বদলির জন্য আবেদন করতে পারবেন।
- বদলিকৃত কর্মস্থলে পুনরায় কমপক্ষে দুই বছর দায়িত্ব পালনের পর পরবর্তী বদলির আবেদন করা যাবে।
- বদলি আবেদনকারীর নিজ জেলা অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে পদ শূন্য না থাকলে, নিজ বিভাগের যেকোনো জেলাতে বদলির আবেদন করা যাবে।
- একাধিক আবেদন পড়লে বিবেচনায় আনা হবে জ্যেষ্ঠতা, নারী আবেদনকারী এবং কর্মস্থলের দূরত্ব।
- প্রথম নিয়োগের তারিখ থেকে জ্যেষ্ঠতা গণনা হবে।
আবেদনকারী যদি একই উপজেলার হন, তাহলে তাদের কেন্দ্রীয় দূরত্ব বিবেচনায় নেওয়া হবে। বিভিন্ন জেলার আবেদনকারীদের ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় দূরত্ব বিবেচনায় নেওয়া হবে।
ভুল বা অসম্পূর্ণ তথ্য দিয়ে আবেদন করলে তা বাতিল হবে এবং ইচ্ছাকৃত ভুল প্রমাণিত হলে শাস্তি আরোপ করা হবে। বদলির পর ইনডেক্স নম্বর, এমপিও সুবিধা, এবং জ্যেষ্ঠতা আগের মতোই বহাল থাকবে। টিএ/ডিএ (ভ্রমণ বা অন্যান্য ভাতা) বদলির জন্য প্রযোজ্য হবে না। বদলির আদেশ পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে আগের কর্মস্থল থেকে অবমুক্ত হতে হবে এবং পরবর্তী ১০ দিনের মধ্যে নতুন কর্মস্থলে যোগদান করতে হবে।
শিক্ষক যোগদানের তথ্য এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান ও মাউশির মহাপরিচালককে অবহিত করতে হবে। বদলির এই নতুন প্রক্রিয়া বাস্তবায়নের পর অবশিষ্ট শূন্যপদে নিয়োগের সুপারিশ চূড়ান্ত করবে এনটিআরসিএ। পুরো প্রক্রিয়াটি ডিএমই সফটওয়্যারের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালিত হবে।
শিক্ষকদের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল একটি স্বচ্ছ ও ডিজিটাল বদলি প্রক্রিয়া, যেখানে অনিয়ম ও পক্ষপাতের সুযোগ কম থাকবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এই পদক্ষেপকে শিক্ষক সমাজ ইতিবাচকভাবে দেখছে বলে জানা গেছে।
আঁখি