ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ০৬ আগস্ট ২০২৫, ২২ শ্রাবণ ১৪৩২

পারিবারিক সম্পর্কে দৃঢ়তা আনে যে ৫টি নিয়ম

প্রকাশিত: ১৫:২৩, ৬ আগস্ট ২০২৫

পারিবারিক সম্পর্কে দৃঢ়তা আনে যে ৫টি নিয়ম

ছবি: সংগৃহীত।

পরিবার হলো সেই নিরাপদ আশ্রয় যেখানে ক্লান্ত-শ্রান্ত দিন শেষে ফিরে এসে মানুষ স্বস্তি খুঁজে পায়। বন্ধুবান্ধব কিংবা সহকর্মীকে বেছে নেওয়া গেলেও পরিবার কিন্তু কারও নিজের পছন্দে হয় না। আর যেটা সব সময় পাশে থাকে, সেটার গুরুত্ব আমরা অনেক সময় বুঝতে পারি না-যতক্ষণ না সেটা হারিয়ে যায়। তাই পরিবারের সঙ্গে যদি দূরত্ব তৈরি হয়ে থাকে, তাহলে এই পাঁচটি সহজ নিয়ম মেনে চললেই পারিবারিক বন্ধন আরও মজবুত হবে।

১. অন্যের খুশিতে খুশি হোন, নিজের পালা না এলেও
পরিবারের মধ্যে হিংসা কিংবা ঈর্ষা থাকা উচিত নয়। বরং পরিবারের সদস্যদের সাফল্যে মন থেকে আনন্দিত হওয়া উচিত। যেমন, ভাই বা বোনের পদোন্নতি হলে ঈর্ষা না করে তার আনন্দ ভাগ করে নিন। এতে পারস্পরিক আস্থা বাড়ে এবং একে অপরের জন্য সহানুভূতি তৈরি হয়। ঈর্ষা থেকে দুরত্ব তৈরি হয়, যা একই ছাদের নিচে বসবাসকে কঠিন করে তোলে।

২. ভালোবাসাই যথেষ্ট নয়, প্রয়াসও জরুরি
গাছ যেমন শুধু বীজ বপনে বড় হয় না, তেমনি সম্পর্কও শুধু ভালোবাসায় টিকে থাকে না-প্রয়োজন নিয়মিত যত্ন ও প্রয়াসের। পরিবারের জন্য সময় দেওয়া, ছোটখাটো কাজে সহায়তা করা, খোঁজখবর নেওয়া-এসব ছোট উদ্যোগই সম্পর্ক দৃঢ় করে। পরিবারের সদস্যদের সাহায্য না করে শুধু প্রত্যাশা করলে সেই বন্ধন দুর্বল হয়ে পড়ে।

৩. 'স্যরি' বলার কোনও বয়সসীমা নেই
ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চাওয়া আত্মিক পরিপক্বতার পরিচায়ক। বয়স যাই হোক না কেন, ভুল করলে ‘স্যরি’ বলাটা সম্পর্ক টিকিয়ে রাখে। বিশেষ করে বয়োজ্যেষ্ঠ সদস্যরা যদি ছোটদের কাছে ক্ষমা চাইতে না চান, তাহলে সেটি দৃষ্টান্ত নয়, বরং দূরত্ব তৈরি করে। পারিবারিক মর্যাদা বজায় রাখতে নিজ ভুল স্বীকার করাই শ্রেয়।

৪. পুরনো ভুল টেনে এনে আজকের ঝগড়া করবেন না
একসঙ্গে থাকা মানেই কখনো না কখনো ভুল বোঝাবুঝি হবে-এটা স্বাভাবিক। কিন্তু সেই ভুল সময়মতো মিটিয়ে না নিয়ে বারবার তা মনে করিয়ে দিলে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পুরনো ক্ষতের উপর বারবার আঘাত দিলে তা যেমন শুকায় না, তেমনি পুরনো ভুল তুলে এনে ঝগড়া বাড়ালে মানসিক দূরত্ব তৈরি হয়। বরং বর্তমান সমস্যার সমাধানে মনোযোগ দিন।

৫. পারিবারিক সমস্যাগুলো পরিবারেই রাখুন
অনেকে বাইরে থেকে সহানুভূতি পাওয়ার আশায় পারিবারিক বিষয় অন্যদের সঙ্গে শেয়ার করেন। এতে সমস্যার সমাধান হয় না, বরং বিশ্বাসহানি হয়। বাইরের মানুষ পরিবারের সদস্যদের পুরোপুরি বোঝেন না, ফলে বিভ্রান্তি ও গুজব ছড়ায়। পারিবারিক সমস্যাগুলো পরিবারেই থেকে গেলে সম্মান ও গোপনীয়তা বজায় থাকে এবং সমাধানও সহজ হয়।

পরিবারকে গুরুত্ব দেওয়া মানে জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্কগুলোকে বাঁচিয়ে রাখা। ছোট ছোট নিয়ম মেনে চললে পরিবার হতে পারে জীবনের সবচেয়ে বড় শক্তি।

সূত্র: দ্য টাইমস অব ইন্ডিয়া।

মিরাজ খান

×