
ছবি: সংগৃহীত।
ওয়ারিশ হিসেবে উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি নিয়ে আপস বণ্টননামা দলিল করতে গড়িমসি করছেন পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা? এমন পরিস্থিতিতে বহু মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েন। সম্প্রতি এই বিষয়ে সচেতনতা তৈরিতে একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে, যেখানে আইনগত দিক নির্দেশনা এবং করণীয় বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
ভিডিওতে জানানো হয়, পরিবারের এক বা একাধিক সদস্য পেশিশক্তি বা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে সম্পত্তির বড় অংশ দখলে রেখে বাকি ভাইবোনদের বঞ্চিত করছেন। কেউ বাজার এলাকায় জমি নিয়ে মার্কেট গড়ে তুলেছেন, কেউবা বাসাবাড়ি নির্মাণ করে বসবাস করছেন। অথচ যারা এই সম্পত্তির সমান ওয়ারিশ, তারা পাচ্ছেন অনুত্তরদায়ী কৃষিজমি বা পুকুরের দাগ।
এই পরিস্থিতিতে আপোষ বণ্টননামা দলিল করতে যারা রাজি হচ্ছেন না, তাদের কথায় আর কান না দিয়ে সরাসরি আদালতের শরণাপন্ন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন ভিডিও নির্মাতা। তিনি বলেন, “যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে, তবে একলা চল।”
আইনি প্রক্রিয়ার জন্য প্রথমেই প্রয়োজন ওয়ারিশান সনদ। এতে সকল ওয়ারিশের নাম থাকবে—মৃত ব্যক্তির নামও বাদ দেওয়া যাবে না। এরপর প্রয়োজন জাতীয় পরিচয়পত্র, জমির মৌজা, খতিয়ান, দাগ নম্বর, এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। এদের অভাবে সংশ্লিষ্ট তহসিল অফিস, ভূমি অফিস, ডিসি রেকর্ড রুম থেকে কাগজ সংগ্রহ করতে হবে।
যদি কাগজপত্র পরিবারের কেউ আটকে রাখে, তাও বাধা নয়। সব তথ্য ও দলিলসহ একজন সিভিল ল’ইয়ার এর সাহায্যে বাটোয়ারা মামলা দায়ের করা যাবে। এতে দাগ অনুযায়ী প্রত্যেক ওয়ারিশ সম্পত্তি পাবেন। রাস্তার পাশে থাকুক বা কৃষিজমি—প্রত্যেক অংশেই আইনি মালিকানা পাওয়া সম্ভব হবে।
ভিডিওতে আরও বলা হয়, “এই আপোষ বণ্টননামা আইনটি সরকারের জন্য নয়, বরং ওয়ারিশদের সুবিধার্থে তৈরি। পরিবারে বিভাজন সৃষ্টি না করে, একত্রে বসে আপোষ করলে ভবিষ্যতে শান্তি বজায় থাকবে। তবে যদি সেটি সম্ভব না হয়, আইনগত পদক্ষেপই একমাত্র পথ।”
শেষ কথা: সম্পত্তির ন্যায্য ভাগ পেতে ভয় বা সংকোচ না করে আইনকে আশ্রয় নেওয়াই এখন বাস্তবিক সমাধান। পারিবারিক বন্ধন অটুট রাখতে হলে প্রয়োজন পারস্পরিক সম্মান ও ন্যায্যতা নিশ্চিত করা।
নুসরাত