
ছবি: সংগৃহীত
জমি কেনাবেচা কিংবা জমি নিয়ে কোনো আইনি জটিলতা এড়াতে হলে সবচেয়ে জরুরি বিষয় হলো মালিকানা বৈধভাবে প্রমাণ করা। একজন ব্যক্তি জমির আসল মালিক কিনা, তা নির্ধারণে কিছু নির্দিষ্ট দলিল ও রেকর্ড থাকা বাধ্যতামূলক। বিশেষজ্ঞদের মতে, জমির মালিকানা যাচাইয়ে “চেইন অব টাইটেল” বা মালিকানার ধারাবাহিকতা প্রমাণ করাই হলো মূল চাবিকাঠি।
জমির মালিকানা যাচাই করতে হলে প্রথমে দেখা হয় সিএস (C.S.) থেকে শুরু করে এসএ (S.A.), আরএস (R.S.), এবং বিএস (B.S.) পর্যন্ত খতিয়ানের ধারাবাহিকতা। এতে বোঝা যায় জমিটি কিভাবে এক মালিক থেকে অন্য মালিকের কাছে হস্তান্তর হয়েছে।
যদি আপনি জমি ক্রয়ের মাধ্যমে মালিক হয়ে থাকেন, তাহলে আপনার কাছে থাকতে হবে:
- বায়া দলিল (ক্রয়চুক্তিপত্র)
- স্ট্যাম্প ও রেজিস্ট্রেশন সনদ
- নামজারি খতিয়ান ও নামজারি রশিদ
আর যদি আপনি ওয়ারিশ সূত্রে জমির মালিক হন, তাহলে প্রমাণস্বরূপ লাগবে:
- ওয়ারিশান সনদ
- ডেথ সার্টিফিকেট (মৃত্যু সনদ)
- পূর্বপুরুষদের দলিল ও খতিয়ান
মূল দলিল ছাড়াও জমির মালিকানা প্রমাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে কিছু সম্পূরক কাগজপত্র। যেমন:
- উক্ত জমির হোল্ডিং ট্যাক্স রসিদ
- পানির বিল, গ্যাস বিল, বিদ্যুৎ বিল
- জমির ব্যবহারসংক্রান্ত তথ্য (বসবাস, কৃষিকাজ, দোকান বা ব্যবসা ইত্যাদি)
- দলিলে উল্লিখিত সুনির্দিষ্ট চারদিকে চৌহদ্দি বিবরণ
কেন এই দলিলপত্র প্রয়োজন?
বাংলাদেশে জমি নিয়ে জালিয়াতি বা মালিকানা বিরোধ একটি সাধারণ সমস্যা। তাই দলিলের পাশাপাশি সরকারি রেকর্ডেও সঠিক তথ্য থাকা জরুরি। একজন প্রকৃত মালিকের পক্ষে শুধু দলিল থাকলেই হবে না, খতিয়ানেও তার নাম থাকতে হবে এবং সেই খতিয়ান অনুযায়ী নামজারি করে সেটিকে সরকারি রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
জমি সংক্রান্ত আইনজীবীরা বলছেন, “অনেকেই শুধু দলিল নিয়ে আত্মবিশ্বাসী থাকেন। কিন্তু বাংলাদেশে দলিল ও খতিয়ানের সমন্বয় না থাকলে ভবিষ্যতে আইনি ঝুঁকি দেখা দেয়। তাই দলিল, খতিয়ান এবং দখল—এই তিনটি মিলেই প্রমাণ হয় প্রকৃত মালিকানা।”
জমি কেনার আগে দলিল যাচাই, খতিয়ান তুলনা, নামজারি নিশ্চিতকরণ এবং মাঠ পর্যায়ে জমি পরিদর্শন—এই চারটি ধাপ অনুসরণ করুন।
আপনার জমির মালিকানা সুরক্ষিত রাখতে আইনজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া ও যথাযথ রেকর্ড রাখাই হলো সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
সূত্র: https://youtube.com/shorts/EUaBn7-0Oy4?si=EYzZ2yYIHHbS14fu
রবিউল