
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে বেসামরিক স্থাপনায় হামলায় ব্যবহৃত রুশ ড্রোনে ভারতীয় যন্ত্রাংশ ব্যবহারের অভিযোগ তুলেছে ইউক্রেন। মঙ্গলবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়ের প্রধান আন্দ্রি ইয়ারমাক দাবি করেছেন, রাশিয়ার ব্যবহার করা বেশ কয়েকটি ইরানি ‘শহীদ–১৩৬’ ড্রোন পর্যালোচনার পর সেগুলোতে ভারতের তৈরি যন্ত্রাংশ পাওয়া গেছে। বিষয়টি ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও জানানো হয়েছে বলে জানায় কিয়েভ।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস–এর এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে, ইরানি শহীদ ড্রোনে ভারতের রাজধানী দিল্লির দুটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের তৈরি যন্ত্রাংশ মিলেছে। প্রতিষ্ঠান দুটি হলো ইন্টারটেকনোলজি এবং অরা সেমিকন্ডাক্টর।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইন্টারটেকনোলজির তৈরি ব্রিজ রেক্টিফায়ার ব্যবহার করা হয়েছে শহীদ ড্রোনের ভোল্টেজ রেগুলেটর ইউনিটে। একইসঙ্গে, অরা সেমিকন্ডাক্টরের সিগন্যাল জেনারেটর চিপ ব্যবহৃত হয়েছে ড্রোনের জ্যামার-প্রুফ অ্যান্টেনায়।
ইউক্রেনের ক্ষোভ
ইয়ারমাকের অভিযোগ অনুযায়ী, এই ড্রোনগুলো রাশিয়া শুধু যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, বেসামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করেও ব্যবহার করছে, ফলে প্রাণহানি ঘটছে নিরীহ মানুষের। এর ফলে, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার ও যুদ্ধ আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের প্রশ্ন উঠছে।
তিনি আরও দাবি করেন, এই তথ্য প্রকাশ পেলেও গত বছরই দু'দফা কূটনৈতিক চ্যানেলে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এ নিয়ে উদ্বেগ জানানো হয়েছিল।
ভারতের প্রতিক্রিয়া
ভারত সরকার এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য না করলেও নয়া দিল্লির তরফ থেকে বরাবরই বলা হয় যে তারা আন্তর্জাতিক রপ্তানি-আমদানির আইন কঠোরভাবে অনুসরণ করে। ভারত সরকারের ভাষ্যমতে, তারা কোনভাবেই নিষিদ্ধ বা যুদ্ধকাজে ব্যবহৃত পণ্য অনুমোদন দেয় না।
আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ার শঙ্কা
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ইউক্রেনের এই অভিযোগ সামনে আসার ফলে আন্তর্জাতিক মহলে ভারতের ওপর চাপ বাড়তে পারে। বিশেষ করে যখন ভারত রাশিয়া থেকে জ্বালানি আমদানি ও অস্ত্র চুক্তি অব্যাহত রেখেছে, তখন ড্রোন প্রযুক্তি নিয়েও বিতর্কে জড়ানো ভারতের জন্য বড় ধরনের কূটনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
এদিকে, ইউক্রেনের পাশাপাশি ইউরোপীয় ইউনিয়নও ভারতের প্রযুক্তি রপ্তানির ওপর নজরদারি জোরদার করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
Jahan