
ছবি: সংগৃহীত
ফ্রান্সের মার্সেই শহরের উপকণ্ঠে ভয়াবহ দাবানলে অন্তত ১১০ জন আহত হয়েছেন। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ব্রুনো রেটাইয়ো জানিয়েছেন, প্রায় ৮০০ দমকলকর্মী ঘটনাস্থলে কাজ করছেন এবং দাবানল নিয়ন্ত্রণে আনার প্রচেষ্টা সারারাত চলবে, কারণ আগুন এখনো পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
মার্সেইর মেয়র বেনোয়া পায়ান জানান, শহরের নৌ-দমকল বাহিনী "গেরিলা যুদ্ধের মতো লড়ছে, হাতে পাইপ নিয়ে,"— এভাবেই তারা আগুন নেভাতে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
ফরাসি গণমাধ্যম অনুযায়ী, অন্তত ৪০০ জন বাসিন্দাকে তাদের ঘরবাড়ি থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৯ জন দমকলকর্মীও রয়েছেন।
দাবানল এত দ্রুত ছড়াচ্ছিল যে, এক সময় প্রতি মিনিটে প্রায় ১.২ কিমি হারে আগুন অগ্রসর হচ্ছিল। মেয়র জানান, বাতাসের গতি, ঘন গাছপালা এবং খাড়া ঢালের কারণে আগুন দ্রুত ছড়ায়।
প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ যিনি বর্তমানে যুক্তরাজ্যে রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন, তিনি আগুন নেভাতে নিযুক্ত বাহিনীর প্রতি সমর্থন জানান এবং বাসিন্দাদের সরকারি নির্দেশ মেনে চলার আহ্বান জানান।
মঙ্গলবার দুপুর থেকে বন্ধ থাকা মার্সেই প্রোভঁস বিমানবন্দর রাত ৯:৩০ থেকে খুলে দেওয়া হয়েছে। বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানায়, তারা এত বড় সংকট আগে কখনো দেখেননি।
আগুনটি মার্সেই শহরের উত্তরে পেন-মিরাবো এলাকায় একটি গাড়ির আগুন থেকে শুরু হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই প্রায় ৭০০ হেক্টর (৭ বর্গ কিমি) এলাকা পুড়ে গেছে।
একজন স্থানীয় বাসিন্দা মনিক বাইলার্ড বলেন, "চিত্রটা ভয়াবহ, যেন এক প্রকার মহাপ্রলয়।" তিনি জানান, তার অনেক প্রতিবেশী এলাকা ছেড়ে পালিয়ে গেছেন।
এদিকে, ফ্রান্সের নরবন এলাকায়ও আরেকটি দাবানল চলছে, যেখানে প্রায় ২,০০০ হেক্টর জমি পুড়ে গেছে। বাতাসের গতি ঘণ্টায় ৬০ কিমি হওয়ায় আগুন নিয়ন্ত্রণ কঠিন হয়ে পড়েছে।
স্পেনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় কাতালোনিয়া অঞ্চলেও দাবানল দেখা দিয়েছে। তাতারাগোনা প্রদেশে মঙ্গলবার ১৮,০০০-এর বেশি মানুষকে ঘরে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রায় ৩,০০০ হেক্টরের বেশি জমি আগুনে পুড়েছে।
এছাড়া, গ্রিসে সোমবার একদিনেই ৪১টি দাবানল শুরু হয়েছে, যার মধ্যে ৭টি এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি।
ইউরোপের পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে অস্বাভাবিক গরমে দাবানল ছড়িয়ে পড়ছে, যার ফলে হাজার হাজার মানুষকে ঘরছাড়া হতে হয়েছে।
নোভা