ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩১ জুলাই ২০২৫, ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

কঠিন গ্রুপে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার প্রত্যয়

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩৪, ৩১ জুলাই ২০২৫; আপডেট: ০৫:৩৪, ৩১ জুলাই ২০২৫

কঠিন গ্রুপে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার প্রত্যয়

কঠিন হলেও এএফসি এশিয়ান কাপে এভাবেই উল্লাসে মেতে উঠতে চান বাংলাদেশের মেয়েরা

ইয়াঙ্গুনে এএফসি নারী এশিয়া কাপ বাছাইয়ে বাহরাইনকে ৭-০ গোলের বন্যায় ভাসানোর পর শক্তিশালী মিয়ানমারকে ২-১ গোলে হারিয়ে ইতিহাস গড়ে বাংলাদেশ। প্রথমবারের মতো জায়গা করে নেয় এশিয়া কাপের মূল মঞ্চে। শেষ ম্যাচে তুর্কমেনিস্তানের বিপক্ষে ৭-০ গোলের জয়ে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর থেকেই এশিয়া কাপ ঘিরে অন্যরকম এক রোমাঞ্চ তৈরি হয়ে আফঈদা খন্দকার, ঋতুপর্ণা চাকমাদের মনে।

সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দুই তারকা বলেন, এশিয়া কাপে ভালো করে বিশ্বকাপে জায়গা করে নিতে চান তারা। ২০২৬ এশিয়া কাপে ‘বি’ গ্রুপে দুই চ্যাম্পিয়ন চীন ও উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে আছে উজবেকিস্তান। চীন কেবল ৯ বারের এশিয়া কাপ চ্যাম্পিয়নই নয়, ৮বার বিশ্বকাপে উঠে একবার রানার্সআপও হয়েছে। ৩ মার্চ ওয়েস্টার্ন সিডনি স্টেডিয়ামে সেই চীনের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়েই শুরু হবে আফঈদাদের মিশন। প্রতিপক্ষ যে শক্তিশালী, কোচ পিটার বাটলার সেটি অকপটে স্বীকার করেছেন। একইসঙ্গে চ্যালেঞ্জ নিতেও মুখিয়ে আছেন তিনি। ‘গ্রুপটা খুবই কঠিন, তবে আমি মুখিয়ে আছি। আমার মনে হয়, এটা মেনে নেওয়া ও উপভোগ করা উচিত।

আমার ও দলের দৃষ্টিকোণ থেকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো এক বছর আগে আমরা চাইনিজ তাইপের বিপক্ষে খেলেছিলাম এবং তখন বেশ ভালো পারফরম করেছিলাম। তারপর থেকে ধীরে ধীরে দলে পরিবর্তন এনেছি, উন্নতি করেছি এবং ধারাবাহিকভাবে আরও শক্তিশালী হয়েছি। সেই সময়ের  চেয়ে আমরা এখন ভালো দল। ৬ মাস, এমনকি ৩ মাস আগের চেয়েও ভালো অবস্থানে আছি। বিশ্বাস করি, আমরা উন্নতির পথে আছি। চীনের বিপক্ষে খেলা খুব কঠিন হবে, উত্তর কোরিয়ার বিপক্ষেও তাই, কিন্তু সবকিছুই সম্ভব।

আমি এই চ্যালেঞ্জ নিতে চাই এবং সবাইকে বলতে চাই আমরা লড়াই করব, নিজেদের সর্বোচ্চটা দেব।’ বলছিলেন নারী ফুটবলে অভাবনীয় উন্নতি এনে দেওয়া কোচ পিটার বাটলার। নিকট অতীতে আফঈদা-ঋতুপর্ণারা শক্তিশালী দলগুলোর বিপক্ষে আলো ছড়িয়েছেন। ইন্দোনেশিয়া ও জর্দানের বিপক্ষে ড্র করেছেন। মিয়ানমারকে বাছাইয়ে হারিয়েছিলেন তাদের মাঠেই। ‘আমি পরিকল্পনা ও কৌশল দিয়ে থাকি, এরপর সব নির্ভর করে কর্তৃপক্ষের ওপর; যাদের অর্থের ব্যবস্থা করতে হবে। আশা করছি, আমরা কিছু প্রস্তুতি ম্যাচ ও প্রীতি ম্যাচ খেলতে পারব।’

এশিয়া কাপের জন্য দলে খুব একটা পরিবর্তন আনার পক্ষে নন বাটলার, ‘সত্যি বলতে, আমার স্কোয়াড প্রায় ঠিকঠাক হয়ে গেছে। কিছু ছোটখাট পরিবর্তন হতে পারে। তবে আমাদের অনূর্ধ্ব-২০ দল খুবই ভালো করেছে। জাতীয় দলের নির্বাচনে তারা বড় ভূমিকা রেখেছে। এছাড়া আমাদের আরও কিছু খেলোয়াড় আছে, যাদের প্রয়োজন হলে ডাকা হবে।’
অস্ট্রেলিয়া মিশনে যাওয়ার আগে নিজেদের ঝালিয়ে নিতে শক্তিধর দলের বিপক্ষে খেলতে চান কোচ,‘আমার পরিকল্পনা আছে, তবে সবকিছু নির্ভর করছে বাফুফের অর্থায়নের ওপর। কথা বলা সহজ। আমি বলতে পারি, আমি সৌদি আরবে খেলতে চাই অথবা অন্য কোথাও যেতে চাই। কিন্তু সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা আমার হাতে নেই। আমি কেবল অনুরোধ করতে পারি, বাকিটা আসলে বাফুফের ব্যাপার।’ ১২ দল নিয়ে আগামী বছর মার্চে শুরু হবে নারী  এশিয়া কাপের ২১তম আসর।

মঙ্গলবারের ড্রয়ে চীন, উত্তর কোরিয়া ও উজবেকিস্তানের সঙ্গে ‘বি’ গ্রুপে পড়েছে বাংলাদেশ। তিন গ্রুপের সেরা ও রানার্সআপ ছয় দল এবং তৃতীয় সেরা দুই দল মিলিয়ে আট দল যাবে নকআউট পর্বে। নকআউট পর্বে উঠতে পারলে সরাসরি পরবর্তী অলিম্পিকসে খেলার সুযোগ মিলবে। সেরা ছয়ে থাকতে পারলে পাওয়া যাবে ২০২৭ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ।

বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় ভালো ফলাফল আনার অন্যতম পূর্বশর্ত আয়োজক দেশের অনরূপ কন্ডিশনে নিজেদের মানিয়ে নেওয়া। সেক্ষেত্রে, দেশের বাইরে অবশ্যই কন্ডিশন ক্যাম্প আয়োজন করা প্রয়োজন। এছাড়াও, নিজেদের ঝালিয়ে নিতে র‌্যাঙ্কিংয়ে অপেক্ষাকৃত ভালো অবস্থানে থাকা দলগুলির সঙ্গে খেলার অভিজ্ঞতা নেওয়ার বিকল্প নেই। পরিকল্পনাটা বাফুফেকেই নিতে হবে।  
প্রতিযোগিতার আগে দলের মূল খেলোয়াড়দের যেন বড় কোনো চোট সৃষ্টি না হয় কিংবা চোট পেলেও তা যেন দ্রুত সারিয়ে তোলা যায় এসব নিয়ে বাফুফের ভাবনার প্রয়োজন রয়েছে। আর সকল পরিকল্পপনার মূলে রয়েছে বাফুফের আগ্রহ এবং অর্থায়ন। এটি অনুধাবন করেই হয়ত বাটলার বল ঠেলে দিচ্ছেন বাফুফের কোর্টে।

প্যানেল হু

×